পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় সরকারি বিদ্যালয় গেটের তালা ভেঙে পরীক্ষার হলে প্রবেশ করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে দশম গ্রেডসহ তিন দফা দাবিতে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচির অংশ হিসেবে সরকারি মঙ্গলসুখ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান গেট তালাবদ্ধ রেখে চলমান বার্ষিক পরীক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রাখেন শিক্ষকরা।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে হাতুড়ি ও ইলেকট্রিক মেশিনের সাহায্যে তালা ভেঙে বিদ্যালয়ে ঢোকেন ইউএনও কাউসার হামিদ। পরে সংবাদকর্মীদের উপস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা কার্যক্রম শুরু হয় বিদ্যালয়টিতে।
তবে দায়িত্বরত প্রধান শিক্ষিকা ছাড়া অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষিকা পরীক্ষাকেন্দ্রের দায়িত্ব থেকে বিরত থাকেন। এ বিদ্যালয়ে চলতি বছরে ৭০২ জন শিক্ষার্থী বার্ষিক পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে।
অপরদিকে একই চিত্র পৌর শহরের রহমতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এ প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে পরীক্ষা কার্যক্রম চালু রাখলেও অসম্মতি জানিয়েছেন সহকারী শিক্ষক-শিক্ষিকারা। ফলে একাই পরীক্ষাকেন্দ্রের দায়িত্ব পালন করছেন জ্যেষ্ঠ এ শিক্ষক।
এদিকে উপজেলার ১৭২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৮১৬ জন সহকারী শিক্ষক-শিক্ষিকা বৃহস্পতিবার সকাল থেকে প্রতিষ্ঠানের অফিসকক্ষে অবস্থান নেন। কিন্তু এসব বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সরব উপস্থিতি রয়েছে। তবে সহকারী শিক্ষকরা পরীক্ষা বর্জন করলেও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী ও অভিভাবকদের সহযোগিতায় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে অধিকাংশ বিদ্যালয়ে।
অভিভাবকরা বলছেন, শিক্ষকদের চলমান আন্দলোনে অনিশ্চয়তায় রয়েছে উপজেলার ১৫ হাজার ৫০০ কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থী।
মঙ্গলসুখ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দায়িত্বরত প্রধান শিক্ষিকা শিউলি বেগম বলেন, শাটডাউন কর্মসূচি থাকলেও কোমলমতি শিশুদের মেধা বিকাশের কথা চিন্তা করে অভিভাবক ও প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের সহযোগিতায় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
ইউএনও কাউসার হামিদ বলেন, শিশুদের বার্ষিক পরীক্ষা কোনোভাবেই বন্ধ রাখা যাবে না। সকালে খবর পেয়ে মঙ্গলসুখ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তালা ভেঙে ফেলা হয়েছে। তিনি বলেন, দাবি-দাওয়ার বিষয়টি সরকারের সঙ্গে। কিন্তু শিশুদের পরীক্ষা বন্ধ রাখা যাবে না। এর পরেও কোনো প্রতিষ্ঠানে শিশুদের পরীক্ষা বন্ধ রাখার চেষ্টা করা হলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

