একটি উপজেলার দরিদ্র মানুষের চিকিৎসার ক্ষেত্রে শেষ আস্থা ও ভরসার স্থল উপজেলার হাসপাতাল। জনবল ও শয্যা সংকটে ভুগছে ভোলার বোরহানউদ্দিন ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালটি। ওয়ার্ড সংখ্যা বাড়ানো হলেও বাড়েনি জনবল। ৩১ জন ডাক্তারের চিকিৎসাসেবা দেওয়ার কথা থাকলেও মাত্র ৩ জন ডাক্তার দিয়েই চলছে এই হাসপাতাল।
প্রতিদিন গড়ে ৩০০-৩৫০ জন রোগী বহির্বিভাগে চিকিৎসা নেন। আন্তঃবিভাগে ভর্তি রোগীর সংখ্যা প্রায় ৪০ জন। পুরাতন ৩১ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের বিভিন্ন অংশে দেখা দিচ্ছে ফাটল দেখা দেওয়ায় রোগীদের জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে ১৯ শয্যার ভবন। এমন অবস্থায় চিকিৎসাসেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ১ম শ্রেণির ৩০টি পদের মধ্যে ২২টি শূন্য। কাগজে কলমে ৬ জন থাকলেও ২ জন ঢাকায় ট্রেনিংরত। ১ জন ডেপুটেশনে অন্যত্র কর্মরত। এখানে আছেন ৩ জন। ২য় শ্রেণির ৩৬টি পদের মধ্যে কর্মরত আছেন ২২ জন, ৩য় শ্রেণির ১৩৫টি পদের মধ্যে কর্মরত আছেন ৯৩ জন, ৪র্থ শ্রেণির ২২টি পদের মধ্যে কর্মরত আছেন ১৩ জন। জুনিয়র কনসালটেন্ট এ্যানেসথেসিয়া, সার্জারি, মেডিসিন, কার্ডিওলজি, অর্থোসার্জারী, শিশু, চক্ষু, ইএনটি, চর্ম ও যৌন ডাক্তার থাকার কথা থাকলেও এখানে কোনো কনসালটেন্ট ডাক্তার নেই। যুগের পর যুগ পদগুলো শূন্য।
জানা যায়, ৯ ইউনিয়ন ও প্রথম শ্রেণির পৌরসভা নিয়ে বোরহানউদ্দিন উপজেলা। জনসংখ্যা প্রায় ৩ লাখ।
হাসপাতালের বহির্বিভাগে গিয়ে দেখা যায়, রোগী আর রোগী। আগতের মধ্যে ৯০ ভাগ মহিলা ও শিশু। কথা হয় বড় মানিকা ইউনিয়নের বাটামারা গ্রামে রোগীর স্বজন ঝর্না, পক্ষিয়া ইউনিয়নের তাছলিমা, কুতুবার কুলসুম, হাসাননগরের রাসেদ, দেউলার হাফসা, সাচড়ার শিবপুরের আফসানা, কাচিয়ার হাসনাহেনার সঙ্গে।
অধিকাংশ জানান, বাচ্চার জ্বর ও ঠান্ডাজনিত সমস্যা। একজন মাত্র ডাক্তার। অনেকক্ষণ তারা দাঁড়িয়ে আছেন। আন্তঃবিভাগে দিয়ে দেখা যায়, সিট পরিপূর্ণ হয়ে মেঝোতে রোগী। কথা হয় হাসান নগরের কামরুল, গংগাপুর ইউনিয়নের রাহিমা, তজুমুদ্দিন মলংচড়া এলাকার সাহিনের সঙ্গে।
তারা জানান, বেড নাই। করার কী? তাই ফ্লোরে চিকিৎসা নিচ্ছি।
ওই বিভাগসূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন গড়ে ৪৮ থেকে ৫০ জন রোগী আসে। অথচ শয্যা আছে ১৯টি। রোগীদের অভিযোগ, উপজেলার নিম্ন-মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র শ্রেণির মানুষের চিকিৎসাসেবার একমাত্র প্রতিষ্ঠান। ডাক্তারের অভাবে আমরা সেবা বঞ্চিত। কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছেন না।
অন্যদিকে, গত ৬-৭ বছর আগে হাসপাতালের সীমানা প্রাচীর ভেঙে যাবার পর পুনর্নির্মাণ না হওয়ায় ডাক্তার-নার্সরা চরম নিরাপত্তা ঝুঁকিতে আছেন।
নার্সিং সুপারভাইজার সালমা সুলতানা বলেন, ‘এরমধ্যে কয়েকবার আমাদের বাসা চুরি হয়েছে। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় আছি।’
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নিরুপম সরকার বলেন, ‘৩১ শয্যাবিশিষ্ট পুরাতন স্বাস্থ্য ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। জনবল ও শয্যা সংকটে চিকিৎসাসেবা কিছুটা হলেও ব্যাহত হচ্ছে। কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে।

 
                             
                                    


 সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন 
                                     
                                     
                                    -20251031233315.webp) 
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                    -20251031164732.webp) 
                                                                                     
                                                                                     
                             
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
       
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন