বৃহস্পতিবার, ০১ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: মার্চ ২৫, ২০২৫, ০৭:৪৪ পিএম

৩৪ লাখ টাকা আত্মসাত, পোস্টমাস্টারসহ ৭ জনের নামে মামলা

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: মার্চ ২৫, ২০২৫, ০৭:৪৪ পিএম

৩৪ লাখ টাকা আত্মসাত, পোস্টমাস্টারসহ ৭ জনের নামে মামলা

ফাইল ছবি

লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে সাত নারী গ্রাহকের ৩৪ লাখ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় আদালতে পোস্টমাস্টার জসিম উদ্দিনসহ ৭ জনের নামে মামলা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) দুপুরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রামগঞ্জ আদালতে ভুক্তভোগী ফেরদৌসি আক্তার বিউটি এ মামলা করেন। ভুক্তভোগী অপর ৬ জন মামলার সাক্ষী।

বাদীর আইনজীবী আনোয়ার হোসেন মৃধা বলেন, আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল ঘটনাটি আমলে নিয়েছেন। এ ঘটনায় এফআইআর নেওয়ার জন্য রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

অভিযুক্ত জসিম সাবেক রামগঞ্জ উপজেলা পোস্টমাস্টার। বর্তমানে তিনি নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলা পোস্টমাস্টার নামে নিযুক্ত রয়েছেন। 

অভিযুক্ত অন্যরা হলেন- ব্যাংক এশিয়ার চ্যানেল ব্যাংকিং ডিভিশন জেলা ব্যবস্থাপক নেয়ামত উল্যা, ব্যবসায়িক কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন, রামগঞ্জ উপজেলা ডাকঘরের সাবেক কর্মচারী আব্দুর রহিম, এজেন্ট ব্যাংকের উদ্যোক্তা আনোয়ার হোসেন, তার মেয়ে রুকাইয়া হোসেন ঋতু ও আত্মীয় মনির হোসেন।

এর মধ্যে উদ্যোক্তা আনোয়ার এশিয়া ব্যাংকের একটি চেকের মামলায় কারাগারে রয়েছে।

মামলা সূত্র জানায়, পোস্টমাস্টার জসিমের কাছে ভুক্তভোগীরা সঞ্চয়পত্র করতে যায়।

কিন্তু তিনিসহ অভিযুক্ত কর্মচারী রহিম বাদীসহ ভুক্তভোগীদের বলে সঞ্চয়পত্র ক্রয় করতে হলে ব্যাংক হিসাব খুলতে হবে। তারাই ভুক্তভোগীদের ব্যাংক হিসাবে খুলতে বলে।

এতে এশিয়া ব্যাংকে বাদী বিউটি তার হিসাবে ২০২২ সালের ৪ জানুয়ারি ১০ লাখ টাকা জমা দেয়।

এছাড়া মামলার সাক্ষী নুরজাহান আক্তার সুমি ৩ লাখ টাকা, রাবেয়া সুলতান রত্না ৫ লাখ টাকা, অনিমা রানী দাস ৫ লাখ টাকা, ইয়াসমিন সাবিনা ৪ লাখ টাকা, জান্নাতু ফেরদৌস ৩ লাখ টাকা ও নাজমুন নাহার ৪ লাখ টাকা জমা দেয়। তাদের কাছ থেকে পোস্ট অফিসের সরকারি সঞ্চয়পত্রের ফরম পূরণসহ ব্যাংক এশিয়ার হিসাব নাম্বার খোলা এবং চেকের মাধ্যমে প্রত্যেকের হিসাব নম্বরে টাকা নেন বিবাদীরা। এরপর প্রত্যেক মাসে মোবাইল নাম্বারে কিছু লভ্যাংশ দেওয়া হতো ভুক্তভোগীদের।

কিন্তু কয়েক মাস পর হঠাৎ লভ্যাংশ দেওয়া বন্ধ কর দেয়। পরে ভুক্তভোগীরা উদ্যোক্তা আনোয়ারের কাছে ঘটনাটি জানতে চাইলে বিভিন্ন কথা বলে সময়ক্ষেপণ করে।

একপর্যায়ে ২০২৪ সালের মার্চ মাসে আনোয়ার ব্যাংকিং কার্যক্রম বন্ধ করে আত্মগোপনে চলে যান।

ঘটনাটি পোস্টমাস্টার জসিম ও কর্মচারী রহিমকে জিজ্ঞেস করলে সঞ্চয়পত্র নিয়ে তারা কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।

অভিযুক্তরা যোগসাজশে ডাকঘরের সরকারি সঞ্চয়পত্রের কথা বলে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে ভুক্তভোগীদের ৩৪ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে। তারা টাকা আত্মসাতের জন্য ভুক্তভোগীদের ভুয়া ও ভিত্তিহিন কাগজপত্র প্রদান করে। আত্মসাৎকৃত টাকা ফেরত চাইলে তারা টাকা দিচ্ছে না।

ফেরদৌসি আক্তার বিউটি বলেন, পোস্টমাস্টার জসিমসহ অভিযুক্তরা প্রতারণা করে আমার ১০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে। আমি টাকা ফেরত চাই।

ইয়াসমিন সাবিনা বলেন, ৪ লাখ টাকা পোস্ট অফিসে রাখতে গেলে পোস্টমাস্টার জসিম ব্যাংক এশিয়ার উদ্যোক্তা আনোয়ারকে দেখিয়ে দেয় সঞ্চয়পত্র করার জন্য। ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে আমাদের টাকাগুলো নিয়ে গেছে। তারা আমাদের ৩৬ জনের ২ কোটি ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা নিয়ে গেছে।

আমার অন্ধ মায়ের জমি বিক্রি করে সঞ্চয়পত্রের জন্য টাকা রেখেছিলাম। আসামি আনোয়ার কারাগারে আছে। আমরা টাকা ফেরত চাই।

পোস্টমাস্টার জসিম উদ্দিন বলেন, আনোয়ারকে আমি কোনোভাবেই সমর্থন করতাম না।

কাউকেই আমি তার কাছে হিসাব খুলতে বলিনি। আমি নিজেই গ্রাহকদের হিসাব খুলতাম। আনোয়ারকে সমর্থন না করায় তখন তিনি আমার নামে স্থানীয় এমপির কাছে অভিযোগ দেন।

এছাড়া আমি তার এজেন্ট ব্যাংকের চেক গ্রহণ করতাম না। আমি সরাসরি ব্যাংকের চেক দিতে বললে তিনি দিতেন না। পরে আমি ব্যাংক এশিয়া লিমিটেডের তখনকার রামগঞ্জ শাখার ব্যবস্থাপককেও বিষয়টি জানিয়েছি। আমার ধারণা ছিল আনোয়ার প্রতারণা করবে। 

ব্যাংক এশিয়ার চ্যানেল ব্যাংকিং ডিভিশন জেলা ব্যবস্থাপক নেয়ামত উল্যা বলেন, আনোয়ার পোস্ট অফিসের উদ্যোক্তা ছিলেন। তিনি সেখানে বসেই সরকারি সঞ্চয়পত্রের জন্য টাকা জমা দিয়েছেন। ওই টাকা তিনি আত্মাসাৎ করেন।

আমাদের ব্যাংকের রসিদে কেউ কোনো টাকা জমা দেয়নি। ভুক্তভোগীদের হিসাবে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রাপ্ত সঞ্চয়পত্রের লভ্যাংশের পরিমাণে প্রতি মাসে তিনি টাকা জমা দিতেন। বিষয়টি সন্দেহ হওয়ায় তদন্ত করে প্রতারণার সত্যতা পাই।

তার বিরুদ্ধে আমি বাদী হয়ে একটি মামলা করেছি। ওই মামলায় তিনি কারাগারে আছেন।

রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল বাশার বলেন, এখনো পর্যন্ত আদালতের কোনো নির্দেশনা আমাদের কাছে আসেনি। নির্দেশনার কপি পেলে পরে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

আরবি/আবু

Link copied!