শুক্রবার, ২৩ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


গাজীপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: মে ২২, ২০২৫, ১১:৩৫ পিএম

গাজীপুরের ২ ভাই সৌদিতে খুন

গাজীপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: মে ২২, ২০২৫, ১১:৩৫ পিএম

গাজীপুরের ২ ভাই সৌদিতে খুন

কামরুজ্জামান কাকন ও কামরুল ইসলাম সাগর। ছবি-সংগৃহীত

সৌদি আরবের দাম্মাম শহরে একটি ফ্ল্যাটে খুন হয়েছেন গাজীপুরের সহোদর দুই ভাই। বুধবার (২১ মে) দাম্মাম শহরের সৌদি পুলিশ ফ্ল্যাট থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে।
 
খুন হওয়া দুই ভাই হলেন- কামরুজ্জামান কাকন (২৬) ও কামরুল ইসলাম সাগর (২২)। তারা গাজীপুরের উত্তর ভুরুলিয়ার আদর্শপাড়ার ব্যবসায়ী মোশারফ হোসেন লম্বরির ছেলে।

নিহতের বাবা মোশারফ হোসেন জানান, দুই ছেলে ছাড়া তার আর কোনো সন্তান নেই। ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেই তাদের কানাডায় পাঠাতে চেয়েছিলেন। কানাডা পাঠানোর স্বপ্নই কাল হয় তার পরিবারের। বুধবার রাত ১২টার পর এক বাংলাদেশি ফোন করে দুই ছেলের হত্যাকাণ্ডের খবর দিয়েছে। 

তিনি জানান, পরে সৌদি দূতাবাসের মাধ্যমে জানতে পেরেছেন মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে ফ্ল্যাটে প্রবেশ করে দুই ভাই। দুপুরের পর দরজার নিচ দিয়ে রক্ত গড়িয়ে পড়তে দেখে ফ্ল্যাট মালিক পুলিশে খবর দেয়। সিসি ফুটেজ দেখে মঞ্জু নামে বাংলাদেশি এক যুবককে পুলিশ শনাক্ত করেছে। 

তিনি আরও জানান, তাকে দিয়েই বাহার তার দুই সন্তানকে খুন করে থাকতে পারে বলে ধারণা মোশারফ হোসেনের। তিনি দ্রুত সন্তানদের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের সাহায়তা কামনা করেন।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, কামরুজ্জামান কাকন একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করে চাকরির খোঁজ করছিলেন। ঢাকার নয়াপল্টনের সামিয়া ইন্টারন্যাশনালের পরিচালক বাহার উদ্দিন ২১ লাখ টাকা চুক্তিতে জব ভিসায় কাকনকে কানাডায় পাঠানোর প্রস্তাব দেন বাবা মোশারফ হোসেন লম্বরির কাছে। ৩ লাখ টাকা নিয়ে দীর্ঘদিন চেষ্টা করেও তিনি কাকনকে কানাডা পাঠাতে পারেননি। 

পরে বাহার উদ্দিন ভালো বেতনে ছোট ছেলে সাগরকে ৪ লাখ ৩০ হাজার টাকায় সৌদি পাঠানোর প্রস্তাব দেন। রাজি হলে গত বছরের অক্টোবর মাসে সৌদি যায় সাগর। কিন্তু কাজের পরিবর্তে তাকে দাম্মামে একটি ঘরে আটকে রেখে আরও ৪ লাখ টাকা দাবি করায় হয় বাবা মোশরফ হোসেনের কাছে। ছেলের কথা ভেবে আরও ৪ লাখ টাকা দিতে বাধ্য হন। টাকা নিয়েও ছেলেকে ভালো চাকরি না দিয়ে খাবার ডেলিভারির কাজ দেয়। 

কানাডা পাঠানো জন্য নেওয়া ৩ লাখ টাকা ফেরত চাইলে বড় ছেলে কাকনসহ দুই ছেলেকে সৌদির মদিনা ইউনিভার্সিটিতে উচ্চ বেতনে চাকরির প্রস্তাব দেন বাহার উদ্দিন। নতুন করে ৫ লাখ ৩০ হাজার টাকা নিয়ে গত বছরের ৪ ডিসেম্বর কাকনকে সৌদি নিয়ে যান বাহার। সেখানে কাজ না দিয়ে দুই ভাইকে একটি ঘরে আটকে রাখেন। বিষয়টি জানার পর বাহার উদ্দিন কাকন ও সাগরের বাবা মোশারফ হোসেনকে উমরা ভিসায় সৌদি গিয়ে ছেলেদের দেখে আসার প্রস্তাব দেন। 

গত ডিসেম্বরের মাঝামাঝি বাহার উদ্দিনের সঙ্গে সৌদি আরব যান মোশারফ হোসেন। এ সময় দুই ছেলেই জানান, তাদের খাবার ডেলিভারির কাজ দেওয়া হয়েছে। ঠিকমতো খেতে দেওয়া হয় না। রাখা হয়েছে ছোট্ট ঘরে। ২২ ডিসেম্বর তিনি দেশে ফিরেন। ছেলেদের কাগজপত্র ঠিক করার কথা বলে থেকে যান বাহার।

আসার সময় বাহার একটি পলিথিন মোড়ানো একটি ব্যাগ দিয়ে ঢাকার ঠিকানায় পৌঁছে দিতে বলেন মোশারফ হোসেনকে। ব্যাগে কী ছিল তিনি দেখেননি। সৌদি বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন পুলিশ তল্লাশি করে একটি পুটলি উদ্ধার করে। পরে পুটলি রেখে তাকে ছেড়ে দেয়। তিনি ফিরে আসার পরদিন বাহার উদ্দিন বাংলাদেশে চলে আসেন। এসেই ব্যাগে থাকা পুটলি ফেরত চান। 

ইমিগ্রেশন পুলিশ রেখে দিয়েছে জানালে পুটলিতে ১৩ লাখ টাকার সোনা ছিল দাবি করে টাকার জন্য চাপ দেন। কয়েক দফা হুমকি দেন। বলেন, টাকা না দিলে সৌদিতে থাকা ছেলেদের ক্ষতি হবে। এসব ঘটনায় তিনি নগরীর সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেন। 

সর্বশেষ ৯ মে একটি মাইক্রোবাসে করে ঢাকা থেকে একদল গুন্ডা নিয়ে এসে অস্ত্র উঁচিয়ে মোশারফকে খুঁজতে থাকে। অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে মোশারফরের বৃদ্ধ বাবা আবুল কাশেম লম্বরিকে তুলে নিয়ে যায় এবং দুই ছেলেকে হত্যার হুমকি দেয়। ঘটনার সময় মোশরফ বাড়িতে ছিলেন না। ৯৯৯ ফোন দিলে সদর থানা পুলিশ আবুল কাশেমকে উদ্ধার করে।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!