গাজীপুরের শ্রীপুরে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত এসএসসি ভোকেশনাল পরীক্ষায় ‘অ্যাপারেল ম্যানুফ্যাকচারিং বেসিক-২’ বিষয়ে ব্যবহারিক নম্বর জমা না পড়ায় একই সঙ্গে পাঁচটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৭৩ শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
গত ১০ জুন পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়। এরপর দেখা যায়, শ্রীপুর পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রের আওতায় পাঁচটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে অংশ নেওয়া সব শিক্ষার্থী একই বিষয়ে ফেল করেছে।
শিক্ষার্থীরা বলছে, তারা ব্যবহারিক পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল এবং ভালো করেই পরীক্ষা দিয়েছে। কিন্তু ফলাফলে দেখা যায়, সেই বিষয়ের নম্বরই জমা পড়েনি।
ঘটনার প্রতিবাদে গত রোববার দুপুরে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা শ্রীপুর পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রে বিক্ষোভ করেন। এ সময় তারা কেন্দ্র সচিবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী তামান্না আক্তার বলেন, ‘আমি সব বিষয়ে ভালো পরীক্ষা দিয়েছি। ভালো নম্বরও পেয়েছি। কিন্তু শুধু ‘অ্যাপারেল ম্যানুফ্যাকচারিং বেসিক-২’ বিষয়ে ব্যবহারিক নম্বরের জায়গায় ফেইল দেখাচ্ছে। এটা আমার স্বপ্ন ভেঙে দিয়েছে।’
একই রকম অভিযোগ করেন কাজী খুশি আক্তার নামের আরেক শিক্ষার্থী। তিনি বলেন, ‘১০টি বিষয়ে এ-প্লাস, তিনটিতে এ গ্রেড পেয়েছি। শুধু ওই এক বিষয়ে ফেল। এটা মেনে নেওয়া যায় না।’
অতিরিক্ত টাকার নেওয়ার অভিযোগ
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ব্যবহারিক নম্বর বোর্ডে পাঠানোর ক্ষেত্রে কেন্দ্র সচিব অতিরিক্ত টাকা দাবি করেছিলেন। টাকা না দেওয়ায় ইচ্ছাকৃতভাবে নম্বর পাঠানো হয়নি।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শ্রীপুর পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের সচিব ও শিক্ষিকা শাহানা আক্তার।
তিনি দাবি করে সংবাদমাধ্যমকে জনান, ‘সম্ভবত সার্ভার জনিত কারণে নম্বর জমা পড়েনি। বিষয়টি বোর্ড কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ১৭ জুলাই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
শ্রীপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা কেন্দ্র সচিবকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছি। সঙ্গে সঙ্গে বোর্ডে যোগাযোগ করে যাচাই করেছি। তারা জানিয়েছে, ব্যবহারিক নম্বর জমা পাননি। এটি কারিগরি ত্রুটিও হতে পারে। গুরুত্ব সহকারে বিষয়টি দেখা হচ্ছে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সজীব আহমেদ বলেন, ‘ঘটনার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। আমরা চাই দ্রুত সমস্যার সমাধান হোক।’
ব্যবহারিক নম্বর না জমা দেওয়ার ঘটনায় ৭৩ শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। ফলাফল সংশোধনের দ্রুত পদক্ষেপ না নেওয়া হলে তাদের পুনরায় পরীক্ষা দিতে হতে পারে বা এক বছর নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
আপনার মতামত লিখুন :