বরগুনার বেতাগী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের অ্যাকাডেমিক সুপারভাইজারের বিরুদ্ধে একনায়কতান্ত্রিক আচরণের অভিযোগ উঠেছে। তার আয়োজিত কৃতী শিক্ষার্থী সংবর্ধনা অনুষ্ঠান বয়কট করেছে স্থানীয় সাংবাদিক ও রাজনৈতিক নেতারা। ঘটনাটি উপজেলায় ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ঘটনার তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বেতাগী গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ মিলনায়তনে দুই শতাধিক কৃতী শিক্ষার্থীকে সংবর্ধনা দেওয়ার আয়োজন করে শিক্ষা অফিস। কিন্তু অনুষ্ঠান শুরুতেই বিতর্কের মুখে পড়ে, কারণ আয়োজক অ্যাকাডেমিক সুপারভাইজার একক সিদ্ধান্তে স্থানীয় সাংবাদিক বা রাজনৈতিক নেতাদের কাউকেই আমন্ত্রণ জানাননি।
এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ হয়ে অনুষ্ঠান বয়কটের ঘোষণা দেয় বেতাগী উপজেলা রিপোর্টার্স ইউনিটি।
সংগঠনটির সভাপতি মেহেদী হাসান কোয়েল সিকদার বলেন, ‘একজন সরকারি কর্মকর্তা গণমাধ্যম ও রাজনৈতিক প্রতিনিধিদের বাদ দিয়ে এককভাবে অনুষ্ঠান আয়োজন করেছেন, এটি অগণতান্ত্রিক এবং অসহিষ্ণুতার প্রকাশ। আমরা এর প্রতিবাদে অনুষ্ঠান বয়কট করেছি এবং তাকে বেতাগী থেকে দ্রুত প্রত্যাহারের দাবি জানাই।’
সংবাদকর্মীদের এ অবস্থানের প্রতি সমর্থন জানায় বেতাগী প্রেসক্লাব। প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. কামাল হোসেন খান বলেন, ‘গণমাধ্যমকে উপেক্ষা করে কোনো সরকারি অনুষ্ঠান হতে পারে না। এটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং সন্দেহজনক। আমরা রিপোর্টার্স ইউনিটির অবস্থানের সঙ্গে একমত।’
এ ঘটনার সমালোচনায় মুখর হয়েছেন রাজনৈতিক নেতারাও। উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি মো. শাহাদাত হোসেন মুন্না বলেন, ‘এই ঘটনা কেবল আমন্ত্রণ না জানানোর বিষয় নয়, এটি এক ধরনের ঔদ্ধত্য ও স্বেচ্ছাচারিতার বহিঃপ্রকাশ। আমরা এই অগণতান্ত্রিক মানসিকতার তীব্র প্রতিবাদ জানাই।’
একইভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করে বেতাগী পৌর বিএনপির সদস্য সচিব মো. মিজানুর রহমান খান বলেন, ‘আমাদের কাউকে কিছু জানানো হয়নি। এই কর্মকর্তা পূর্বেও বিভ্রান্তিকর আচরণ করেছেন। আমরা এই ঘটনায় অত্যন্ত ক্ষুব্ধ।’
ঘটনার গুরুত্ব অনুধাবন করে অনুষ্ঠানে উপস্থিত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) বিপুল শিকদার বলেন, ‘আমি বিষয়টি অনুষ্ঠানে এসে জানতে পারি। স্থানীয় গণমাধ্যম ও রাজনৈতিক নেতারা বাদ দিয়ে এমন আয়োজন দুঃখজনক এবং অপ্রত্যাশিত। অভিযোগের তদন্ত হবে এবং দোষ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আপনার মতামত লিখুন :