গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে দীর্ঘ ১২ বছরের দাম্পত্য জীবনের ইতি টেনে স্ত্রীকে তালাক দিয়ে তাইফুল ইসলাম (৪৫) নামের এক ব্যক্তি ও তার ছেলে মিনহাজ শেখকে (১০) সঙ্গে নিয়ে গ্রামের লোকজনের সামনে দুধ দিয়ে গোসল করেন। বিষয়টি এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) বিকেল ৪টার দিকে উপজেলার বাটিকামারী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তাইফুল ইসলামের সঙ্গে ভাঙ্গা উপজেলার বাসিন্দা রোজিনা বেগমের বিয়ে হয় প্রায় ১২ বছর আগে। শুরুতে সংসার জীবন স্বাভাবিক থাকলেও ধীরে ধীরে কলহ, অভিযোগ ও নানা মানসিক-শারীরিক নির্যাতনের কারণে সম্পর্ক তিক্ত হয়ে ওঠে। পরিবার ও সমাজের চেষ্টা সত্ত্বেও সমস্যার সমাধান হয়নি।
তাইফুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, ‘আমরা বাবা-ছেলে ১২ বছর ধরে কষ্ট, অবহেলা ও নির্যাতন সহ্য করেছি। এ সংসারে আমরা শান্তি পাইনি। অবশেষে তালাকের মাধ্যমে সেই অধ্যায়ের অবসান ঘটেছে। আনন্দ প্রকাশের জন্যই আমরা প্রতীকীভাবে দুধ দিয়ে গোসল করেছি।’
তার দাবি অনুযায়ী, দীর্ঘদিনের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়ার আনন্দে এ ধরনের ব্যতিক্রমী আচরণ করেছেন তিনি ও তার সন্তান।
গ্রামের সাধারণ মানুষ এ ঘটনায় বিস্মিত। অনেকে মনে করছেন, দাম্পত্য কলহ প্রকাশ্যে চলে আসা দুঃখজনক, তবে তালাক-পরবর্তী আনন্দ প্রকাশের এমন ব্যতিক্রমী রীতি স্থানীয়ভাবে আগে কখনো দেখা যায়নি।
একজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় জনপ্রতিনিধি বলেন, ‘তালাক ইসলামে অনুমোদিত হলেও প্রকাশ্যে দুধ দিয়ে গোসলের মতো আচরণ একেবারেই নতুন বিষয়। এতে গ্রামজুড়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে।’
গোপালগঞ্জের মতো গ্রামীণ সমাজে এ ধরনের ঘটনা বিরল। সাধারণত তালাক একটি ব্যক্তিগত বিষয় হলেও এখানে তা প্রকাশ্যে রূপ নেয়। ফলে গ্রামবাসীর মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। কেউ এটিকে কৌতূহল হিসেবে দেখছেন, আবার কেউ সমালোচনার দৃষ্টিতে দেখছেন।
গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে স্ত্রীকে তালাক দিয়ে বাবা-ছেলের দুধ দিয়ে গোসল করার ঘটনা নিঃসন্দেহে ব্যতিক্রমী। এটি যেমন গ্রামে কৌতূহলের জন্ম দিয়েছে, তেমনি তালাক-পরবর্তী আচরণ নিয়ে সামাজিক আলোচনারও জন্ম দিয়েছে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন