বরগুনার আমতলী উপজেলার গুলিশাখালীর কালিবাড়ী এলাকায় দাওয়াত না দেওয়ায় মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের আয়োজন করা খাবার খেয়ে ফেলার অভিযোগ উঠেছে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে হাস্যরসের পাশাপাশি চরম ক্ষোভেরও সৃষ্টি হয়েছে এলাকায়।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ন.ম.ম আমজাদিয়া আলিম মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটে।
মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের দাবি, গুলিশাখালী ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড সভাপতি মাহাবুব কাজী ও সাধারণ সম্পাদক রিপন কাজীর নেতৃত্বে ৩০ থেকে ৩৫ জন নেতাকর্মী তাদের রান্না করা খাবার খেয়ে ফেলেছেন এবং অবশিষ্ট খাবার নষ্ট করেছেন।
এ বিষয়ে বিএনপির দাবি, মাদ্রাসার ব্যবস্হাপনা কমিটির অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের লোকজনকে দাওয়াত দেওয়ায় তারা এই ঘটনা ঘটিয়েছেন।
জানা গেছে, গত ৪ সেপ্টেম্বর আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের কালিবাড়ী ন.ম.ম আমজাদিয়া আলিয়া মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করা হয়। আমতলী সরকারি কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক মো. ফজলুল হককে ঐ কমিটির সভাপতি করা হয়। কমিটির প্রথম সভা বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত হয়। সভা উপলক্ষে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ৫০ জন আমন্ত্রিত অতিথির জন্য দুপুরের খাবারের আয়োজন করে। কিন্তু মাদ্রাসার সভায় ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড বিএনপির নেতাকর্মীদের দাওয়াত দেওয়া হয়নি। এতে ক্ষুব্ধ হন গুলিশাখালী ইউনিয়ন ও ৯ নং ওয়ার্ড বিএনপির নেতাকর্মীরা। পরে ৯ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মাহবুব কাজী ও সাধারণ সম্পাদক রিপন কাজীর নেতৃত্বে ৩০-৩৫ জন নেতাকর্মী মাদ্রাসায় এসে অধ্যক্ষের কক্ষে প্রবেশ করে এবং তাদের দাওয়াত না দেওয়ার কারণ জানতে চান। পরে শিক্ষকদের গালাগাল করে তারা রান্না করা খাবার খেয়ে ফেলেন এবং অবশিষ্ট খাবার যাতে আমন্ত্রিত অতিথিরা খেতে না পারে সে জন্য পাতিলে টিস্যু, পানি ও তাদের খাওয়া উচ্ছিষ্ট খাবার ফেলে রাখেন।
এই ঘটনার পরপরই ঘটনায় জড়িত ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রিপন কাজী তার ব্যক্তিগত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছবি দিয়ে পোষ্ট করে লিখেন ন.ম.ম আমজাদিয়া আলিম মাদ্রাসায় পিকনিকের কিছু স্মৃতি। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় নিন্দার ঝড় ওঠে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আইনগত ও সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তারা।
গুলিশাখালী ৯ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মাহবুব কাজী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘মাদ্রাসায় আওয়ামীলীগ নেতাকর্মী নিয়ে অনুষ্ঠান করায় ও আমাদের দাওয়াত না দেওয়ায় আমরা খাবার খেয়ে ফেলেছি। কিন্তু কোনো খাবার নষ্ট করিনি।’
ন.ম.ম আমজাদিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আলী হোসেন বলেন, ‘বিএনপির নেতাকর্মী মাদ্রাসার সভা কক্ষে প্রবেশ করে শিক্ষক, কর্মচারী ও আমন্ত্রিত অতিথিদের গালাগাল করেন। পরে তারা অতিথিদের জন্য রান্না করা খাবার খেয়ে ফেলেন। অবশিষ্ট খাবারে তারা টিস্যু, উচ্ছিষ্ট খাবার ও পানি ফেলে নষ্ট করেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘খাবার শেষে তারা আমাদের হুমকি দিয়েছেন। ভয়ে আমার বিষয়টি কাউকে জানাইনি।’
আমতলী উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব তুহিন মৃধা বলেন, বিষয়টি অত্যান্ত গর্হিত কাজ। এমন বিতর্কিত কাজের সঙ্গে জড়িত বিএনপির যারাই জড়িত থাকুক না কেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আমতলী উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক জহিরুল ইসলাম মামুন ভিপি বলেন, ‘বিষয়টি আমি জেনেছি। দলীয়ভাবে তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেলে জড়িতদের বিরুদ্ধের কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আমতলী থানার ওসি দেওয়ান জগলুল হাসান বলেন, ‘এ বিষয়ে অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
বরিশাল বিভাগীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি আমি অবগত হয়েছি। অভিযোগ পেলে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

 
                             
                                    
 সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন 
                                     
                                     
                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                             
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
       -20251025002118.webp) 
        
        
        
        
        
        
        
       
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন