নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে এশিয়ান হাইওয়ে সড়কে আলোচিত মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। গাজীপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সংঘবদ্ধ ছিনতাই চক্রের মূলহোতা লিমনকে। উদ্ধার করা হয়েছে ছিনতাই হওয়া দুইটি মোটরসাইকেল ও হামলায় ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্র।
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান নারায়ণগঞ্জ জেলা সহকারী পুলিশ সুপার মেহেদী ইসলাম।
তিনি জানান, গত ১০ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১২টার দিকে বাইকার জিসান ও ফয়সাল পূর্বাচল ৩০০ ফিট সড়ক হয়ে কুমিল্লার উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন। তারা কুশাবো এলাকায় পৌঁছালে দুইটি মোটরসাইকেলে আসা তিনজন ছিনতাইকারী তাদের ধাক্কা দিয়ে থামায়। এরপর দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে তাদের দুইটি মোটরসাইকেল ও একটি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ। ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয় এবং ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে।
পরে জিসান বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করে। পরবর্তীতে আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় গাজীপুরের বারেন্ডা এলাকা থেকে মূলহোতা লিমনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী- আড়াইহাজারের বিনাইরচর সেতু এলাকা থেকে আরও একটি মোটরসাইকেল এবং কুশাবো এলাকা থেকে হামলায় ব্যবহৃত দা উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে লিমন স্বীকার করেছে, পূর্বাচল ৩০০ ফিট, রূপগঞ্জ ও আড়াইহাজার এলাকায় তার নেতৃত্বে একটি সংঘবদ্ধ চক্র দীর্ঘদিন ধরে মোটরসাইকেল ছিনতাই করে আসছে। পরে গ্রেপ্তারকৃত লিমনকে আদালতে পাঠানো হয়।
ছিনতাইয়ের শিকার জিসান রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘ছিনতাইয়ের পর তিনি পথচারী ও ট্রাকচালকদের বারবার ৯৯৯-এ কল দিতে অনুরোধ করলেও কেউ সহযোগিতা করেনি। প্রায় ৩০-৪০ মিনিট পর এক ট্রাক ড্রাইভার ও তার সহকারীর সহায়তায় অবশেষে ৯৯৯-এ কল দেওয়া সম্ভব হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাকে ও তার বন্ধুকে উদ্ধার করে। তবে এসময় ছিনতাইকারীরা তার মোটরসাইকেল ও আইফোন ১৪ প্রো ম্যাক্স নিয়ে যায়।’
তিনি আরও জানান, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তাকে ফোনে মোটরসাইকেল উদ্ধারের খবর দেন এবং মূলহোতাকে গ্রেপ্তার করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এতে তিনি আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং পুলিশের প্রতি আজীবন কৃতজ্ঞ থাকার প্রতিশ্রুতি দেন।
জিসান সাংবাদিক ও দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, তাদের দোয়া ও সহযোগিতার কারণেই তিনি দ্রুত তার মোটরসাইকেল ফিরে পেয়েছেন। তবে মোবাইল ফোনটি এখনো উদ্ধার হয়নি বলে জানান।
একইসঙ্গে তিনি পুলিশের প্রতি অনুরোধ জানান, দেশের বিভিন্ন সড়কে ডাকাতি ও ছিনতাই প্রতিরোধে নজরদারি জোরদার করতে এবং বিশেষ করে রূপগঞ্জের এশিয়ান হাইওয়ে ও কাঞ্চন ব্রিজ এলাকার মতো অন্ধকার রাস্তায় লাইট স্থাপনের ব্যবস্থা নিতে।