অবশেষে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. শেখ ফয়সাল আহমেদকে মেহেরপুরে বদলি করা হয়েছে। গেল বছরের নভেম্বরে তিনি রোগীকে কান ধরে ওঠবস করানোর অভিযোগে সমালোচিত হয়েছিলেন।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের পক্ষ থেকে এক প্রজ্ঞাপনে তার এই বদলি আদেশ জারি করা হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. এ বি এম আব্দুল হামিদ স্বাক্ষরিত ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ডা. শেখ ফয়সাল আহমেদ, যিনি বর্তমানে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে আরএমও হিসেবে কর্মরত, তাকে বদলি করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল, মেহেরপুরে মেডিকেল অফিসার পদে পদায়ন করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে আরও উল্লেখ করা হয়, এ আদেশ জনস্বার্থে জারি করা হয়েছে এবং বদলিকৃত কর্মকর্তাদের পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে দায়িত্বভার হস্তান্তর করতে হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দায়িত্বভার হস্তান্তর না করলে ষষ্ঠ দিন থেকে তাকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে অবমুক্ত বলে গণ্য করা হবে।
এ ছাড়া প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, পদায়নকৃত কর্মস্থলে যোগদান না করলে তা অসদাচরণ হিসেবে গণ্য হবে এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সম্প্রতি ডা. ফয়সাল আহমেদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ অনুপস্থিতি, সিভিল সার্জনের সঙ্গে অসদাচরণ এবং বেসরকারি হাসপাতাল পরিচালনার অভিযোগ ওঠে। হাসপাতালের বায়োমেট্রিক হাজিরা রেকর্ডে দেখা গেছে, গত তিন মাসে তিনি ৫০ দিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর তিনি সিভিল সার্জন ও সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. আবদুস সালামের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। এরপর ওই ঘটনায় ৫ অক্টোবর সিভিল সার্জন মহাপরিচালকের কাছে তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন। এর পরদিন ৬ অক্টোবর সদর হাসপাতাল থেকে অপসারিত স্বেচ্ছাসেবকদের দিয়ে হাসপাতাল সম্মুখ সড়কে মানববন্ধন করান ডা. ফয়সাল, যা নিয়ে জেলাজুড়ে তীব্র সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
এর আগে, রোগীকে কান ধরে ওঠবস করানোর অভিযোগে আলোচনায় আসেন তিনি। অভিযোগ অনুযায়ী, সিরিয়াল না মেনে চিকিৎসা নিতে আসা এক নারী রোগীকে জুতা দিয়ে পিটিয়ে কান ধরে ওঠবস করান ওই চিকিৎসক। এ সময় ভুক্তভোগী নারীর মেয়ে মাকে বাঁচাতে গেলে তাকেও শ্লীলতাহানির শিকার হতে হয়।
ঘটনাটি ঘটে গত বছরের ৯ নভেম্বর সাতক্ষীরা শহরের কাটিয়া আমতলায় অবস্থিত সাতক্ষীরা হার্ট ফাউন্ডেশনের মালিকানাধীন ডা. ফয়সালের চেম্বারে। ভুক্তভোগী নারী বিউটি বেগম (৫৫) সাতক্ষীরা কলারোয়া উপজেলার শাকদাহ গ্রামের মোকাজ্জেল হোসেনের স্ত্রী। এ ঘটনায় তারা সাতক্ষীরা সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
একাধিক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ার পর অবশেষে তাকে সাতক্ষীরা থেকে মেহেরপুরে বদলি করা হয়েছে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন