বাগেরহাটের ফকিরহাট, চিতলমারী উপজেলার মিলনস্থল উজলপুর চিত্রা নদীর ব্রিজের ওপর দাঁড়ালে চোখে পড়ে এক নয়নাভিরাম দৃশ্য। হাজারো পাখির কলতানে মুখরিত চিত্রা নদীর পাড়। লোকালয়েই প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা মিনি সুন্দরবন এখন অতিথি পাখির স্বর্গরাজ্য। নিরাপদ আশ্রয় হওয়ায় এখানে প্রতিনিয়ত বাড়ছে পাখির সংখ্যা। নানা প্রজাতির পাখি দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন দর্শনার্থীরা। এমন আকর্ষণীয় জায়গাটিকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার দাবি স্থানীয় ও জনপ্রতিনিধিদের।
একসময়ের খরস্রোতা চিত্রার চরজুড়ে এখন সবুজের সমারোহ বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের মূল ভূখণ্ড থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার উত্তরে চিত্রাপারে দিন দিন বাড়ছে গাছের সংখ্যা। নদীসংলগ্ন গ্রামগুলোর অনাবাদি জমি এবং বসতবাড়ির আশপাশেও জন্ম নিয়েছে গোলপাতা, কেওড়াসহ সুন্দরবনের বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা ও লতাগুল্ম। জোয়ারের সময় নদীতীরের গাছগুলোর কিছু অংশ পানিতে ডুবলেও ভাটার সময় আবার তা জেগে ওঠে।
প্রাকৃতিকভাবে এখানে সুন্দরবন গড়ে উঠেছে। চিত্রা নদীর তীরে জন্ম নিয়েছে সুন্দরী, গেওয়া, কেওড়া, গোলপাতাসহ নানা প্রজাতির গাছ। কয়েক বছর ধরে এসব গাছে শীত মৌসুমে হাজার হাজার পাখি আশ্রয় নেয়। এ কারণে প্রতিদিন শত শত দর্শনার্থী পাখি দেখতে ভিড় করেন। জায়গাটিকে স্থায়ীভাবে পাখির অভয়াশ্রম ও মিনি সুন্দরবন হিসেবে গড়ে তুলতে সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।
মিনি সুন্দরবন হিসেবে দর্শনার্থীদের কাছে জনপ্রিয় করে তোলা সম্ভব। বলেন, চিত্রা চরের মাটি এবং এখানকার পরিবেশ সুন্দরবনের গাছগাছালি জন্মানোর জন্য বেশ উপযোগী। জোয়ার-ভাটা, লোনা পানি এবং উপযুক্ত পরিবেশের কারণে চরের ম্যানগ্রোভ বন দ্রুত বাড়ছে।
এখানকার অধিকাংশ বাড়ির আঙিনাসহ আশপাশে আবাদি-অনাবাদি জমিতেও এখন গোলপাতা, কেওড়া, সুন্দরিসহ নানা প্রজাতির গাছ প্রাকৃৃতিকভাবে বেড়ে উঠছে। এতে গ্রামবাসীর মধ্যে যেমন আশার আলো দেখা দিয়েছে তেমনি পরিবেশের জন্য এ বন এখন আশীর্বাদস্বরূপ। এ ছারও বর্তমানে এ বন ঘিরে বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়াকর্মীদের ভিড় বাড়ছে। নতুন সুন্দরবনকে এক নজর দেখার জন্য দূরদূরান্ত থেকে দর্শনার্থী ছুটে আসছেন এখানে। বন বিশেষজ্ঞের দল পরিদর্শনের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
বাগেরহাট জেলা প্রশাসক আহমেদ কামরুল হাসান বলেন, মিনি সুন্দরবন এলাকা পরিদর্শন করেছি, জায়গাটি অতিথি পাখির অভয়াশ্রম ও মিনি সুন্দরবন হিসেবে সংরক্ষণ করা হবে। অতি শিগগিরই স্থানীয় বাসিন্দা, জনপ্রতিনিধি ও তিন উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে সভা করে পরিকল্পনা নেয়া হবে।