ঢাকা মঙ্গলবার, ০৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

সংসদীয় আসন পুনর্বহালের দাবিতে বাগেরহাটে হরতাল

বাগেরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৫, ১১:২১ এএম
সংসদীয় আসন পুনর্বহালের দাবিতে বাগেরহাটে হরতাল পালন করছে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

বাগেরহাট জেলার চারটি সংসদীয় আসন পুনর্বহালের দাবিতে জেলাজুড়ে হরতাল পালন করছে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি। তারা জেলা থেকে একটি আসন কমিয়ে তিনটি করার এবং নির্বাচনি সীমানার চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ এই কর্মসূচি পালন করছে।

সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া এই কর্মসূচি সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চলবে। হরতালের আওতায় জেলার গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো-মহাসড়ক কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, খুলনা-ঢাকা মহাসড়কের দশানী, নওয়াপাড়া, কাটাখালি, মোল্লাহাট সেতু, সাইনবোর্ড বাজার, খুলনা-মোংলা মহাসড়কের ফয়লা ও মোংলা বাসস্ট্যান্ডসহ প্রায় ২০টি স্থানে অবরোধ করা হয়েছে। এ ছাড়া নেতাকর্মীরা গাড়ি, বেঞ্চ ও গাছের গুঁড়ি ব্যবহার করে সড়ক অবরোধ করেছেন।

এদিন সকাল ৭টার পর শহরের কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড, দশানী মোড়, খান জাহান আলী (রহ.) মাজার মোড়, মুনিগঞ্জ সেতু ও দরটানা টোল প্লাজা ঘুরে দেখা গেছে, দূরপাল্লার বাস চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ। তবে শহরে সীমিত আকারে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক, রিকশা ও ভ্যান চলতে দেখা গেছে। বন্ধ রয়েছে শহরের অধিকাংশ দোকানপাট। 

এদিকে জেলা নির্বাচন অফিস, জেলা দায়রা জজ আদালত ও জেলা প্রশাসকের মেইন ফটোকে তালা দিয়েছে সর্বদলীয় কমিটি নেতাকর্মীও বাগেরহাট জেলাবাসী। পরে তারা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মিছিল করে অবস্থান নেন।

এই সময় স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক ডা. ফকরুল হাসানের গাড়ি আটকানো হয়; তিনি হেঁটে অফিসে প্রবেশ করেন। পরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রবেশের সময়ও বাধার সম্মুখীন হন। এর ফলে তিনি জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয়ে প্রবেশ করেন।

হরতালে অংশ নেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম.এ. সালাম, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মুজাফফর রহমান আলম, জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা রেজাউল করিম, সেক্রেটারি শেখ মুহাম্মদ ইউনুস, বিএনপি নেতা ফকির তারিকুল ইসলামসহ অন্যান্য রাজনৈতিক নেতা ও দলের কর্মীরা।

প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন ছিল। তবে চলতি বছরের ৩০ জুলাই প্রাথমিকভাবে নির্বাচনি প্রস্তুতির সময় আসন সংখ্যা কমিয়ে তিনটি করার প্রস্তাব দেয় নির্বাচন কমিশন। বাগেরহাটবাসীর দাবির পরও, ৪ সেপ্টেম্বর কমিশন শুধু সীমানা পরিবর্তন করে তিনটি আসন চূড়ান্ত ঘোষণা করে।

বিএনপি ও জামায়াতের নেতারা বলছেন, এই সিদ্ধান্ত গণমানুষের দাবিকে উপেক্ষা করেছে এবং এ নিয়ে জেলাজুড়ে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।

হরতাল ও অবরোধ কর্মসূচির কারণে জেলাজুড়ে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকায় জনসাধারণকে ভোগান্তির সম্মুখীন হতে হয়েছে। তবে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি এ কর্মসূচি নিয়ে শান্তিপূর্ণ এবং নিয়ন্ত্রিত থাকার প্রতি জোর দিয়েছে।

হরতালের মাধ্যমে বাগেরহাটবাসী তাদের দাবি স্পষ্টভাবে জানিয়েছে- জেলার চারটি সংসদীয় আসন পুনর্বহাল করতে হবে এবং জনগণের ইচ্ছাকে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় প্রতিফলিত করতে হবে।