বরগুনার বেতাগী উপজেলাজুড়ে চলমান ধারাবাহিক চুরি-ডাকাতির ঘটনায় জনমনে সৃষ্ট চরম আতঙ্ক ও উদ্বেগের অবসান ঘটিয়ে অবশেষে স্বস্তি এনেছে থানা পুলিশ।
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাতে বিশেষ অভিযান চালিয়ে সন্দেহভাজন চার সক্রিয় চোর চক্রের সদস্যকে আটক করে পুলিশ।
আটকরা হলেন সদর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কেওড়াবুনিয়া এলাকার নয়ন, পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের রাজু মৃধা, ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইমরান খান এবং ৩ নম্বর ওয়ার্ডের নজরুল ফকির। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, বেশ কিছুদিন ধরে বেতাগীতে চোর-ডাকাতদের বেপরোয়া তৎপরতা এতটাই বেড়েছিল যে দিন-রাত নির্বিঘ্নে চুরি হচ্ছিল। এতে জনমনে তীব্র শঙ্কা ও নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হয়। গত শনিবার রাতে বিবিচিনি ইউনিয়নের ফুলতলা এলাকার প্রশান্তের বাসায় এক গৃহবধূকে গামছা দিয়ে বেঁধে নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার লুটের ঘটনা ঘটে। এর একদিন পরই দিনে-দুপুরে একই এলাকার রেণু বেগমকে রাস্তা থেকে আটকিয়ে কানের দুল ছিনিয়ে নেয় দুর্বৃত্তরা।
এরপর পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডে উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারির বাসায় পরপর পাঁচটি তালা ভেঙে চুরি হয়, যা উপজেলাজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। পুলিশ ও নৌবাহিনীর বাড়তি নিরাপত্তা সত্ত্বেও হাইস্কুল রোডের স্টিল হাউস ব্যবসায়ী শহীদের বাসা এবং ৮ নম্বর ওয়ার্ডের লাবনীর বাসাতেও চুরির ঘটনা ঘটে।
এমন ধারাবাহিক ঘটনায় বেতাগী পরিণত হয় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এলাকাবাসী স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাত পাহারার উদ্যোগ নেয় এবং থানা পুলিশ রাতভর টহল বাড়ায়। লাগাতার এই ঘটনার জেরে পৌরপুলিশ নিয়োগ ও বেতাগী থানায় অতিরিক্ত জনবল বৃদ্ধির জোরালো দাবি ওঠে।
এই পরিস্থিতিতে যখন আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতির শঙ্কা প্রকট হয়ে ওঠে, তখনই শনিবার রাতে পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেফতার করে।
বেতাগী থানার ওসি মো. মনিরুজ্জামান জানান, উপজেলায় একের পর এক চুরি-ডাকাতির ঘটনা বাড়ায় শুরু থেকেই পুলিশ সক্রিয় অভিযান চালিয়ে আসছিল। এর ধারাবাহিকতায় গতরাতে সন্দেহভাজন চারজনকে আটক করা সম্ভব হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সবার প্রতি আমাদের আহ্বান— সর্বদা সচেতন থাকুন, এবং কোনো সন্দেহজনক ব্যক্তি বা গতিবিধি লক্ষ্য করলে দ্রুত পুলিশকে জানান।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন