সাগরে মাছ শিকারে গিয়ে ভোলার লালমোহন উপজেলার নিখোঁজ হওয়া ১৩ জেলের সন্ধান মিলেছে। সোমবার (১ ডিসেম্বর) দুপুরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের একটি কারাগার থেকে ওইসব জেলে ভিডিওকলে তাদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছেন।
২১ দিন পর ১৩ জেলের জীবিত থাকার খবরে পরিবারগুলোতে বাঁধভাঙা আনন্দ-উচ্ছ্বাস বিরাজ করছে। তবে সরকারের কাছে ওইসব জেলেকে দ্রুত ভারত থেকে ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন স্বজনরা। গত ১০ নভেম্বর লালমোহন উপজেলার ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাতিরখাল মৎস্যঘাট এলাকা থেকে ১৩ জেলে সাগরে মাছ শিকারে যাওয়ার পর পরিবারের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
ভারতের কারাগারে থাকা জেলেরা হলেন: লালমোহন উপজেলার ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের দলিল মাস্টার বাজার এলাকার মো. মাকসুদুর রহমান, মো. খোকন, মো. হেলাল, মো. শামিম, মো. সাব্বির, মো. সজিব, মো. জাহাঙ্গীর, মো. নাছির মাঝি এবং একই ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাতিরখাল এলাকার আব্দুল মালেক, মো. ফারুক, মো. মাকসুদ, মো. আলম মাঝি ও মো. ফারুকসহ মোট ১৩ জেলে।
জেলে হেলালের স্ত্রী মিতু বেগম বলেন, ‘সাগরে মাছ ধরতে যাওয়ার পর থেকেই আমার স্বামীর কোনো খোঁজ পাচ্ছিলাম না। ২১ দিন পর ভারত থেকে আমার স্বামী ইমোতে কল দিয়েছে। বলেছেন, তারা সবাই সেখানের একটি কারাগারে আছেন। স্বামীসহ তার সঙ্গে থাকা সবাই এখনো বেঁচে থাকায় মহান আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানাই।’
তিনি তার স্বামীকে তাদের কাছে ফিরেয়ে আনার জন্য সরকারের কাছে বিনীত অনুরোধ জানিয়েছেন।
ধলীগৌরনগর ইউনিয়ন পশ্চিম শাখা বিএনপির সভাপতি দেলোয়ার হোসেন নসু বলেন, ‘ওইসব জেলেদের পরিবারগুলো এতদিন ধরে গভীর শোকে ছিলেন। তারা স্বজনদের খোঁজে দিশেহারা হয়ে পড়েছিলেন। তবে তাদের সেই দুশ্চিন্তা এখন দূর হয়েছে। সোমবার ভারতের একটি কারাগার থেকে তারা পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাই ওইসব পরিবারের পক্ষ থেকে আমি সরকারের কাছে দাবি করছি, যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যেন ভারতে থাকা ওইসব জেলেকে ফিরিয়ে আনা হয়।’
এ বিষয়ে লালমোহন থানার ওসি মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ধারণা করছি, সাগরে মাছ শিকার করতে গিয়ে ভারতের জলসীমায় ঢুকে পড়েছিলেন জেলেরা। এরপর ভারতের নৌবাহিনীর সদস্যরা তাদের আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে। বর্তমানে তারা ভারতের পশ্চিমবঙ্গের একটি কারাগারে রয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখন আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানাব। এরপর কর্তৃপক্ষ ভারতে থাকা ওইসব জেলেকে দেশে ফিরিয়ে আনার যে প্রক্রিয়া রয়েছে, তার মাধ্যমে তাদের ফিরিয়ে আনার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবেন।’



