রবিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


নাজমুল হুদা নয়ন, শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: জুলাই ২৪, ২০২৫, ০৫:০৬ পিএম

বাঙালি নদী ভাঙনে বিলীন ১২০ বিঘা জমি, হুমকিতে ৫ গ্রাম

নাজমুল হুদা নয়ন, শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: জুলাই ২৪, ২০২৫, ০৫:০৬ পিএম

স্থানীয়রা বাঙালি নদীর পাড়ে আতঙ্ক নিয়ে ভাঙন জায়গা দেখছেন। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

স্থানীয়রা বাঙালি নদীর পাড়ে আতঙ্ক নিয়ে ভাঙন জায়গা দেখছেন। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় বাঙালি নদীর ভয়াবহ ভাঙনের কবলে পড়েছে পাঁচটি গ্রাম। এত ইতিমধ্যে অন্তত ১২০ বিঘা ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে রয়েছে প্রায় আট হাজার মানুষের ঘরবাড়ি। ঝুঁকিতে রয়েছে একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় উপাসনালয়, কবরস্থান ও মক্তব।

সরেজমিনে শেরপুর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের বরিতলী ও বিলনোথার গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, নদীর করাল গ্রাসে বরিতলী গ্রামের প্রায় ৩০০ মিটার এবং বিলনোথার গ্রামের প্রায় ৪০০ মিটার এলাকাজুড়ে শুরু হয়েছে তীব্র ভাঙন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গত ১৫ জুলাই থেকে বাঙালি নদীর ভাঙন শুরু হয়। এতে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে ১২০ বিঘা ফসলি জমি। ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বরিতলী, বিলনোথার, নবীনগর, শইলমারি ও শান্তিনগর গ্রাম।

তারা আরও জানান, প্রতিবছরই ভাঙন রোধে অস্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হলেও তা কোনো কাজে আসছে না। ফলে প্রতিবছর নতুন করে মানুষ নিঃস্ব হয়ে পড়ছেন। এবার তারা স্থায়ী কার্যকর ব্যবস্থাগ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।

বরিতলী গ্রামের কৃষক রুহুল আমিন বলেন, ‘আমার বাবাসহ আমি ৭ বার এই নদীর ভাঙনের শিকার হয়েছি। গত বছর ৫ বিঘা জমি নদীগর্ভে চলে গেছে। এবার হয়তো ঘরটাও আর থাকবে না।’

বিলনোথার গ্রামের বাসিন্দা হোসেন আলী বলেন, ‘আমাদের বাপ-দাদার বহু জমি-জমা ছিল। এখন কিছুই নেই। নদী আমাদের সর্বস্ব কেড়ে নিয়েছে। আমার ভাই ঢাকায় গার্মেন্টসে কাজ করেন। নিজের ভিটেমাটি হারিয়ে সেই দুঃখে তিনি আর গ্রামেও আসেন না।’

শইলমারি গ্রামের ষাটোর্ধ্ব আবুল ফজল বলেন, ‘১৯৮৮ সাল থেকে এই নদীর ভাঙন দেখে আসছি। মায়ের মুখে শুনেছি, নানার বাড়ি ১২ বার ভেঙেছে। আমি নিজেও সাতবার বাড়ি সরিয়েছি। এবারও হয়তো সব শেষ হয়ে যাবে।’

স্থানীয়দের অভিযোগ, পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রতিবছর অস্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করলেও তা দীর্ঘস্থায়ী সমাধান নয়। বরিতলী পয়েন্টে গত বছর ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৫ হাজার জিও ব্যাগ ফেলে অস্থায়ী বাঁধ তৈরি করা হয়। কিন্তু তা টিকছে না। দ্রুত কার্যকর স্থায়ী সমাধান না হলে বহু ঘরবাড়ি ও শিক্ষা-ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা।

বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হক বলেন, ‘ভাঙনস্থল পরিদর্শন করে প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, দেড়শ মিটার কাজ বাস্তবায়নে প্রায় ৫০ লাখ টাকা প্রয়োজন হবে। দ্রুতই এই প্রতিবেদন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে। বরাদ্দ পেলে কাজ শুরু করা হবে।’

গত সপ্তাহে শেরপুরে টানা ভারী বর্ষণের ফলে নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ভাঙন আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে। স্থানীয়রা দ্রুত কার্যকর ও দীর্ঘমেয়াদি ভাঙন প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

Shera Lather
Link copied!