রবিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: জুলাই ২৭, ২০২৫, ০৪:০০ পিএম

থমকে গেছে স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: জুলাই ২৭, ২০২৫, ০৪:০০ পিএম

ছবি- সংগৃহীত

ছবি- সংগৃহীত

স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। তারপরও উন্নয়ন বাজেটের চার ভাগের এক ভাগও বাস্তবায়ন করতে পারেনি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) মাত্র ২২ শতাংশ বাস্তবায়ন করতে পেরেছে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ। অপর বিভাগ স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণের বাস্তবায়ন চিত্র আরও করুণ। বিভাগটির বাস্তবায়নের হার ১৫ শতাংশ। গত অর্থবছরে  সরকারের সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মধ্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এডিপি বাস্তবায়নের হারই সবচেয়ে কম।  

বিশ্লেষকরা বলছেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন বাজেট বাস্তবায়নের এই হার শুধু হতাশাজনক নয়, এটি বড় ধরনের ব্যর্থতা ও অদক্ষতার প্রতিফলনও। একদিকে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ অপ্রতুল, অন্যদিকে বাস্তবায়ন ব্যর্থতা চরমে। এতে বোঝা যায় যে, স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন থমকে গেছে। স্বাস্থ্য খাতে উন্নতির কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। উপরন্তু, অনেক ক্ষেত্রে পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটেছে। 

বেশ কয়েক বছর ধরেই বিশেষজ্ঞরা দেশের স্বাস্থ্য খাতে অপ্রতুল বাজেট বরাদ্দের কথা বলে আসছেন। অন্তবর্তী সরকার গঠিত স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনেও বিষয়টি উঠে আসছে। সংস্কার কমিশন তাদের সুপারিশে বলেছে, জাতীয় বাজেটের কমপক্ষে ১৫ শতাংশ বরাদ্দ স্বাস্থ্য খাতে থাকা উচিত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বাজেটের অন্তত ১০-১৫ শতাংশ স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ দেওয়া প্রয়োজন।  

কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ছিল জাতীয় বাজেটের মাত্র ৫ শতাংশের মতো। আয় এডিপির মাত্র সাড়ে ৭ শতাংশ। সংশোধিত বাজেটে এ হার আরও কমে গেছে। সংশোধিত এডিপিতে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দের হার ছিল সাড়ে ৩ শতাংশ। চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটেও বরাদ্দের ক্ষেত্রে খুব একটা উন্নতি হয়নি। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা উন্নয়ন সমন্বয়ের এক গবেষণা প্রতিবেদন অনুসারে, গত ১০ বছরে বিশ্বের ৫১টি নিম্নমধ্যম আয়ের দেশে বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দের অনুপাতে বাংলাদেশের অবস্থান ৪৮তম। 

এত কম বরাদ্দের মধ্যেও স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন বাজেট বাস্তবায়নে দেখা গেছে ভয়াবহ শ্লথ গতি। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্যমতে, গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের সংশোধিত এডিপির আকার ২ লাখ ২৬ হাজার ১৬৫ কোটি টাকার। এর মধ্যে ১৯টি প্রকল্পের জন্য স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের জন্য বরাদ্দ ছিল ৫ হাজার ৬৭৩ কোটি টাকা। বিভাগটি ব্যয় করতে পেরেছে ১ হাজার ২৩৩ কোটি টাকা, যা তাদের জন্য বরাদ্দের মাত্র ২১ দশমিক ৭৪ শতাংশ। অন্যদিকে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের ১৫টি প্রকল্পের জন্য সংশোধিত এডিপিতে বরাদ্দ ছিল ২ হাজার ২৮৩ কোটি টাকা। এই বরাদ্দের মধ্যে মাত্র ৩৫১ কোটি টাকার মতো খরচ করতে পেরেছে বিভাগটি। তাদের বাস্তবায়নের হার ১৫ দশমিক ৩৬ শতাংশ। 

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও অর্থনীতিবিদরা বলছেন, সীমিত বাজেট বরাদ্দেরও যথাযথ বাস্তবায়ন না হওয়ায় দেশের জনগণ মৌলিক স্বাস্থ্যসেবা থেকে দিন দিন আরও বঞ্চিত হচ্ছে। অর্থায়নের স্বল্পতা ও ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা মিলিয়ে এই খাতটি কার্যত সংকটের খাতে পরিণত হয়েছে।

গত অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার পর বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়, জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য বাজেট খাতে বরাদ্দকৃত অর্থের কার্যকর ব্যবহার অত্যন্ত জরুরি। স্বাস্থ্যসেবা ক্ষেত্রগুলোর অবকাঠামোগত পরিবর্তন ও সংখ্যা বৃদ্ধি, শহরাঞ্চল ছাড়াও দুর্গম ও গ্রামীণ এলাকায় প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা, স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদান ও জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়নে বাজেট বরাদ্দকৃত অর্থের যথাযথ ব্যবহার প্রয়োজন।

Shera Lather
Link copied!