চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) হাতে তিন দিনের ব্যবধানে দুই বাংলাদেশি হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন আরও কয়েকজন।
শনিবার (২ আগস্ট) দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তবর্তী পদ্মা নদী থেকে শফিকুল ইসলাম শফিক নামের এক ব্যক্তির অ্যাসিডে ঝলসানো মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনি শিবগঞ্জ উপজেলার মনাকষা ইউনিয়নের তারাপুর হঠাৎপাড়া গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে।
নিহতের পরিবার ও স্থানীয়দের দাবি, হত্যাকাণ্ডের দায় এড়াতে মরদেহ অ্যাসিড দিয়ে ঝলসে দিয়ে নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে।
নিহতের ভগ্নিপতি ও মনাকষা ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সমির উদ্দিন জানান, গত বৃহস্পতিবার শফিকুল ইসলাম গরু আনার উদ্দেশ্যে সীমান্তে যান এবং এরপর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন। শনিবার স্থানীয়রা পদ্মা নদীতে একটি মরদেহ ভাসতে দেখে খবর দিলে সেটি শনাক্ত করা হয়। তিনি বলেন, ‘পুরো শরীর অ্যাসিডে পোড়ানো ছিল।’
স্থানীয়দের অভিযোগ, বিএসএফ এখন হত্যাকাণ্ড লুকাতে কৌশল পরিবর্তন করেছে। তারা বাংলাদেশি নাগরিকদের ধরে নির্যাতন করে হত্যা করার পর মরদেহ গোপনে নদীতে ভাসিয়ে দিচ্ছে।
এর আগে গত সোমবার চাঁপাইনবাবগঞ্জের মনোহরপুর সীমান্ত দিয়ে গরু নিয়ে ফেরার পথে বিএসএফের হাতে ধরা পড়ে নৃশংসভাবে নিহত হন সৈয়বুর আলী। তিনি পাঁকা ইউনিয়নের দশরশিয়া গ্রামের মতিউর রহমানের ছেলে। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন সৈয়বুরের সঙ্গী রুহুল আলী।
এছাড়াও, গত ২৪ জুলাই শিবগঞ্জ উপজেলার শিংনগর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে গুলিবিদ্ধ হন দুই বাংলাদেশি যুবক সেলিম (২৫) ও সুমন (২৮)। এর আগে, ১৯ জুলাই সদর উপজেলার নারায়ণপুর সীমান্ত দিয়ে ভারতে গরু আনতে গিয়ে নিখোঁজ হন মোহাম্মদ লাল চাঁদ নামের আরেক বাংলাদেশি।
এ বিষয়ে ৫৩ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফাহাদ মাহমুদ রিংকু জানান, ‘মরদেহ উদ্ধারের পর থানা পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে। তবে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।’
শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘বিজিবির দেয়া তথ্যে ভিত্তিতে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।’