ঢাকা শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৫

আগামী নির্বাচনকে সম্পূর্ণ কলঙ্কমুক্ত করতে হবে: জ্বালানি উপদেষ্টা

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: নভেম্বর ২৮, ২০২৫, ১১:০০ পিএম
কৃতী ছাত্র সংবর্ধনা ও পুনর্মিলনী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান। ছবি- সংগৃহীত

আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সম্পূর্ণ কলঙ্কমুক্ত, স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য করতে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান।

তিনি বলেন, ‘অতীতের বিতর্কিত নির্বাচনগুলোর দাগ যেন ভবিষ্যতে আর না থাকে—সেটিই আমাদের মূল লক্ষ্য। নির্বাচন যেন সত্যিকারের গণতান্ত্রিক হয় এবং জনগণের আস্থার প্রতীক হয়, সেটি নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তী সরকার ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় সব উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।’

শুক্রবার (২১ নভেম্বর) চট্টগ্রাম সরকারি মুসলিম হাইস্কুল প্রাক্তন ছাত্র সমিতি আয়োজিত ২০২৪ ও ২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত কৃতী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা ও পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রাক্তন ছাত্র সমিতির সভাপতি শাহআলম বাবুল এবং সঞ্চালনা করেন নির্বাচন পরিচালক ডা. শফিউর রহমান।  এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক ও দৈনিক আজাদীর সম্পাদক এম এ মালেক, ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির সাবেক উপাচার্য প্রফেসর সিকান্দার খান, খ্যাতিমান বংশীবাদক ওস্তাদ আজিজুল ইসলাম, বিশিষ্ট চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. ইমরান বিন ইউনুস এবং বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মোরশেদুজ্জামান।

উপদেষ্টা ফাওজুল কবির বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার একটি স্বচ্ছ, শান্তিপূর্ণ ও কলঙ্কমুক্ত নির্বাচন আয়োজনের জন্য যা যা প্রয়োজন সবই করেছে। এখন দায়িত্ব নির্বাচন কমিশন ও জনগণের। আপনারাই নিশ্চিত করবেন—এই নির্বাচন যেন সত্যিকার অর্থে ঐতিহাসিক হয়, যাতে অতীতের বিতর্ক, সহিংসতা বা অনিয়মের কোনো চিহ্ন না থাকে।’

তিনি বলেন, ‘যাকে জনগণ ভোট দেবে, যাকে জনগণ নির্বাচিত করবে—আমরা জাতি হিসেবে তার পেছনে দাঁড়াব। নির্বাচনের মাধ্যমে যে নেতৃত্ব সামনে আসবে, তারাই দেশ পরিচালনা করবে—এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য।’

১৯৬৮ ব্যাচের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ফাওজুল কবির শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘জীবনের বড় অর্জন কেবল সরকারি পদ, উপদেষ্টা বা মন্ত্রী হওয়া নয়। বড় অর্জন হলো সমাজ ও মানবতার কল্যাণে কিছু করে যাওয়া। একজন বড় বংশীবাদক হওয়া, একজন সৎ চিকিৎসক হওয়া, একজন ভালো মানুষ হওয়াই প্রকৃত বড় অর্জন।’

তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য যত উঁচু হবে, অর্জনও তত বড় হবে। হাজারো শিক্ষার্থীর মধ্যে হয়তো একশ জন চেষ্টা করবে এবং সেখান থেকে একজন প্রকৃত সফলতা অর্জন করবে। তাই সবার আগে লক্ষ্য সুনির্দিষ্ট করা অত্যন্ত জরুরি।’

সংবর্ধনা গ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘এই সংবর্ধনার উদ্দেশ্য তোমাদের আরও বড় অর্জনের জন্য উদ্বুদ্ধ করা। আজ যারা জিপিএ-৫ পেয়েছ, তোমরা ভবিষ্যতে আরও দূর এগিয়ে যাবে—দেশ ও জাতির কল্যাণে ভূমিকা রাখবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।’

তিনি অনুষ্ঠানে উপস্থিত অভিভাবক ও শিক্ষকদেরও ধন্যবাদ জানান এবং বলেন, ‘একজন শিক্ষার্থীর সফলতার পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান থাকে শিক্ষক ও অভিভাবকদের। তাদের যত্নশীলতা ও দিকনির্দেশনাই ভবিষ্যতের নেতৃত্ব তৈরি করে।’

অনুষ্ঠান শেষে কৃতী শিক্ষার্থীদের মাঝে সম্মাননা ক্রেস্ট ও সনদ প্রদান করা হয়। পুরো অনুষ্ঠানটি ছিল স্মৃতিমধুর এক পুনর্মিলনী, যেখানে প্রাক্তন শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও বর্তমান ছাত্রছাত্রীরা মিলিত হয়ে আয়োজনটিকে প্রাণবন্ত করে তুলেন।