চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে (চমেক) শিশু সার্জারি বিভাগ চালু করতে যাচ্ছে নতুন সার্জারি সেবা—‘সকালে অপারেশন, বিকালে ছুটি’। আগামী ১ আগস্ট থেকে এ সেবার আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হবে।
চমেক হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, খৎনা, হার্নিয়া, হাইড্রোসিল, জন্মগত ত্রুটি সংশোধনসহ বেশ কয়েকটি অস্ত্রোপচার করা যাবে দিনের মধ্যেই। রোগীকে ভর্তির প্রয়োজন হবে না—সকালেই অস্ত্রোপচার, বিকেলেই হাসপাতাল থেকে ছুটি।
শিশু সার্জারি বিভাগের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এই পদক্ষেপ শুধু হাসপাতালের চাপ কমাবে না, শিশুদের জন্য ঝুঁকি ও দুর্ভোগও অনেকাংশে হ্রাস করবে। সময়নিষ্ঠ চিকিৎসা নিশ্চিত করার লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ। নির্ধারিত দিনে বহির্বিভাগে যোগাযোগের ভিত্তিতে রোগীদের অস্ত্রোপচারের জন্য নির্বাচিত করা হবে। প্রতি মাসে প্রথম রোববার, দ্বিতীয় মঙ্গলবার ও তৃতীয় বৃহস্পতিবার এই সেবা প্রদান করা হবে।
চমেক হাসপাতালের অ্যানেসথেসিয়া বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. হারুন উর রশিদ বলেন, ‘হাসপাতালের প্রতিটি ওয়ার্ডেই রোগীর চাপ। শিশু সার্জারির ক্ষেত্রেও সংকট প্রবল। এ অবস্থায় দিনে-দিনে অপারেশনের এই ব্যবস্থা চাপ হ্রাস করবে এবং দ্রুত চিকিৎসা সম্ভব হবে।’
শিশু সার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. মো. গোলাম হাবিব বলেন, ‘অতিরিক্ত রোগীর চাপের কারণে অনেক শিশু অপারেশনের জন্য অপেক্ষায় থাকে। অ্যানেসথেসিয়া বিভাগের সহায়তায় দুটি অপারেশন টেবিল বসিয়ে আমরা সেবাটি চালু করতে যাচ্ছি। সব প্রস্তুতি সম্পন্ন, যদিও এনেসথেসিয়ালিস্ট কিছুটা সংকটে রয়েছেন।’
জানা গেছে, চমেকের শিশু সার্জারি বিভাগে অনুমোদিত শয্যার সংখ্যা ৪০ হলেও ওয়ার্ডের ব্যবস্থাপনায় তা বাড়িয়ে ৭৬ করা হয়েছে। তবুও শয্যার তুলনায় রোগীর চাপ অনেক বেশি। পুরো চমেক হাসপাতালে যেখানে অনুমোদিত শয্যা ২ হাজার ২২২টি, সেখানে প্রতিদিন ভর্তি থাকে প্রায় সাড়ে তিন হাজার রোগী।
শিশু সার্জারি বিভাগে জন্মগত ত্রুটি, আঘাতজনিত জটিলতা, নবজাতক অপারেশন, ল্যাপারোস্কোপিক ও ইউরোলজিক্যাল সার্জারির মতো বিশেষায়িত চিকিৎসা দেওয়া হয়। এখন সেখানে যুক্ত হচ্ছে ডে কেয়ার সার্জারি—যা চট্টগ্রামে সরকারি হাসপাতালে শিশুদের জন্য এই প্রথম।