চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার পুকুরিয়া ইউনিয়নের চন্দ্রপুর গ্রামের বাসিন্দা মাওলানা আব্দুল মতিন ওরফে পোঁতা মতিন নামে এক ভণ্ড কবিরাজের প্রতারণার ফাঁদে পড়ছেন শত শত মানুষ। ধর্ম ও আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের পরিপন্থি নানা ধরনের ঝাড়ফুঁকের মাধ্যমে তিনি দীর্ঘদিন ধরে মানুষের বিশ্বাসকে পুঁজি করে হাতিয়ে নিচ্ছেন হাজার হাজার টাকা।
একসময় বারখাইন এলাকার একটি মসজিদে মাত্র ৬ হাজার টাকা বেতনে চাকরি করা আব্দুল মতিন বর্তমানে ‘খাজা রোহানী আজমীর দরবার শরীফ’ নামের একটি ভুয়া প্রতিষ্ঠানের ব্যানারে নিজেকে আধ্যাত্মিক সাধক ও জিনের হুজুর হিসেবে প্রচার করছেন। তার এই প্রতারণার অর্থে আনোয়ারা উপজেলার বারখাইন মাজার গেটসংলগ্ন সড়কের পাশে নির্মাণ করেছেন একটি দোতলা বিলাসবহুল ভবন।
স্থানীয়রা জানান, মতিন নিজেকে ‘জিনের সাহায্যে’ চিকিৎসা প্রদানকারী বলে দাবি করে থাকেন। সংসারে অশান্তি, স্বামী-স্ত্রীর কলহ, সন্তান না হওয়া, পছন্দের মানুষকে বশ করা, প্যারালাইসিসসহ বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করে দেবেন—এমন দাবি করেন তিনি। প্রতিদিন তার বাড়িতে ‘আসন’ বসিয়ে রোগীদের বোঝান, কারো বাড়িতে শত্রু তাবিজ পুঁতে রেখেছে, কারো বাড়ির নিচে শামুক বা গাছ রয়েছে, যেগুলোই তাদের সমস্যার মূল কারণ। এসব সমস্যার ‘সমাধান’ বাবদ জনপ্রতি ১০০ টাকা করে ‘নজরানা’ ও আরও মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করেন তিনি।
চাতরী গ্রামের এক ভুক্তভোগী ইছুফ জানান, আমি একটি সমস্যার সমাধান নিতে গিয়েছিলাম। তিনি আমাকে একটি তাবিজ দেন, যার বিনিময়ে টাকা নিয়েছিলেন। কিন্তু কোনো উপকার না পেয়ে তাবিজ খুলে দেখি, ভেতরে শুধু দুটো শিমুলের বিচি ছিল।
জানা গেছে, মতিনের ভাইও কয়েক বছর আগেও চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন হোটেল-রেস্তোরাঁয় সাধারণ কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন। এখন তিনিও নিজ বাড়িতে নিজেকে ‘নুরুল আবছার চিশতী’ নামে আধ্যাত্মিক সাধক, কবিরাজ, ঝাড়ফুঁক বিশেষজ্ঞ পরিচয় দেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাওলানা মতিন সাংবাদিকদের সাথে অশ্রাব্য ভাষায় কথা বলেন এবং কল কেটে দেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের প্রতারণা ধর্মের অপব্যাখ্যা ও চিকিৎসার নামে জনগণের সঙ্গে ভয়াবহ ছলচাতুরি, যা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।