মায়ের অস্ত্রোপচার চলছে অপারেশন থিয়েটারে। এদিকে ভূমিকম্পে ছেলে রাফি নিহত, তার মরদেহ পড়ে আছে হাসপাতালের বেডে। আজ শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকালে এমনই ঘটনা ঘটেছে রাজধানীর বংশালের কসাইটুলিতে।
জানা যায়, ভূমিকম্প ও ছেলের খবর শোনার পর থেকেই শরীরের যন্ত্রণা থাকা সত্ত্বেও আহত মা ছেলের কথা ভুলতে পারছেন না। বারবার জিজ্ঞেস করছেন, ‘আমার রাফি কেমন আছে?’ এদিকে এখন পর্যন্ত তাকে জানানো হয়নি যে তার ছেলে আর কখনো পৃথিবীর আলো দেখবে না।
রাফির গ্রামের বাড়ি বগুড়ায়। তারা দুই ভাই-বোন। বাবা চাকরি করেন দিনাজপুরে। হলে সিট পেলেও ঢাকায় মা এবং বোনের সঙ্গে বাসাতেই থাকতেন সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৫২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রাফি।
তার সহপাঠী অপু জানান, আজ সকালে মায়ের সঙ্গে মাংস কিনতে বাজারে গিয়েছিলেন রাফি। বংশালের কসাইটুলিতে নয়নের মাংসের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন তারা। হঠাৎ ভূমিকম্প শুরু হয়। তীব্র ঝাঁকুনিতে দোকানের ভবনের রেলিং ভেঙে পড়ে তাদের ওপর।
আশপাশের লোকজন দৌড়ে এসে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসকরা জানান, রাফি মারা গেছেন। ভিডিও ফুটেজ এবং ছবিতে দেখা গেছে, রাফির মাথার সামনের অংশ এবং মুখমণ্ডল থেঁতলে গেছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, রাফির মাকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়েছে। সেখানে তার চিকিৎসা চলছে।
অপু জানান, রাফির মৃত্যুর খবর তার মাকে জানানো হয়নি। তিনি নিজেই গুরুতর আহত। যদিও আশঙ্কাজনক নয়, তবে প্রচণ্ড ট্রমার মধ্যে আছেন।
এদিকে মর্মান্তিক এই খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে এসেছে রাফির একমাত্র বোন। ভাইয়ের লাশ আর মায়ের যন্ত্রণা শোকের পাথর হয়ে চাপ দিয়ে ধরেছে।
সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় তীব্র ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এখন পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ভবন হেলে পড়াসহ বিভিন্ন ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ১০টা ৩৮ মিনিট ২৬ সেকেন্ডে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এর উৎপত্তিস্থল নরসিংদীর মাধবদী। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৫.৭। এটি মধ্যম মাত্রার ভূমিকম্প।


