ঢাকা রবিবার, ১৩ জুলাই, ২০২৫

স্মার্টফোন কিনে দিতে পারেননি ‍দিনমজুর বাবা, অভিমানে মেয়ের আত্মহত্যা

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ১৩, ২০২৫, ০৭:০২ এএম
চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় পরিবারের আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে স্মার্টফোন কিনে দিতে না পারায় অভিমানে আত্মহত্যা করেছে নূরতাজ (১৪) নামের এক স্কুলছাত্রী। ছবি- সংগৃহীত

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় পরিবারের আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে স্মার্টফোন কিনে দিতে না পারায় অভিমানে আত্মহত্যা করেছে নূরতাজ (১৪) নামের এক স্কুলছাত্রী। শনিবার (১২ জুলাই) দুপুর ২টার দিকে উপজেলার খাদিমপুর ইউনিয়নের কান্তপুর গ্রামে নিজ শয়নকক্ষে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দেয় সে।

নূরতাজ আলমডাঙ্গা উপজেলার কান্তপুর গ্রামের দিনমজুর আজাদ মালিথার ছোট মেয়ে এবং স্থানীয় নীলমণিগঞ্জ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ছিল।

নূরতাজের মা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরেই স্মার্টফোনের জন্য বায়না করছিল সে। আমরা বলেছিলাম, সময় লাগবে, প্রয়োজনে নানাবাড়ি থেকে টাকা এনে দেবো। কিন্তু আমার মেয়েটা আর অপেক্ষা করল না…’

তিনি জানান, শনিবার দুপুরে গোসল শেষে নিজ ঘরে ঢুকে দরজা-জানালা বন্ধ করে দেয় নূরতাজ। অনেকক্ষণ কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে তার বড় বোন জানালার ফাঁক দিয়ে উঁকি দিয়ে দেখেন, নূরতাজ ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলছে। ডাক-চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে জানালা ভেঙে ঘরে ঢুকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে।

খবর পেয়ে আলমডাঙ্গা থানা ও মুন্সিগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে যান।

আলমডাঙ্গা থানার ওসি মাসুদুর রহমান বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা বলেই প্রতীয়মান। পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় আবেদন সাপেক্ষে সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।’

শিশু-কিশোরদের আবেগ, প্রত্যাশা ও প্রযুক্তিপণ্যকে ঘিরে মানসিক চাপ নিয়ে মনোবিজ্ঞানীরা আগেই সতর্ক করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুলনামূলক চাপ, অনলাইন ক্লাস কিংবা বন্ধুদের প্রযুক্তিগত সংস্পর্শ থেকেও অনেক শিশু মনে করে স্মার্টফোন তাদের প্রয়োজন। কিন্তু তা না পেলে হতাশা ও অভিমান অনেক সময় ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনে।

এমন পরিস্থিতিতে পিতা-মাতাসহ পরিবারের সদস্যদের প্রতি সংবেদনশীলতা ও সক্রিয় মানসিক সহায়তার ওপর জোর দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।