কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চকরিয়ার ডুলাহাজারা অংশে ডাকাতদলের হামলায় মাহমুদুল্লাহ (৩০) নামে উখিয়ার এক যুবক নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ১২টার দিকে চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের মালুমঘাট এলাকায় এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় আরও চারজন গুরুতর আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় সূত্র।
নিহত মাহমুদুল্লাহ উখিয়ার বালুখালী শিয়ালিয়া পাড়ার বাসিন্দা। হৃদয়বিদারক বিষয় হচ্ছে, মাত্র ২২ দিন আগে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার স্ত্রী মারা যান। স্বল্প সময়ের ব্যবধানে মা-বাবা হারিয়ে বর্তমানে তাদের দুটি শিশু সন্তান এতিম হয়ে পড়েছে।
চকরিয়া থানার ওসি তৌহিদুল আনোয়ার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ‘ডাকাত দলের হামলায় একজন নিহত হয়েছেন এবং আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। জড়িতদের গ্রেপ্তারে রাত থেকেই অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’
স্থানীয়রা জানান, রাতে মহাসড়কের মালুমঘাট এলাকায় ডাকাতরা রশি টেনে মোটরসাইকেল থামায় এবং যাত্রীদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় ডাকাতদের হামলায় মাহমুদুল্লাহ গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা তাকে চকরিয়া উপজেলা সরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
আহত চারজনকেও হাসপাতালে নেওয়া হয়, যাদের মধ্যে দুইজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে দীর্ঘদিন ধরে ডাকাত দলের তৎপরতা চলছে। গভীর রাতে যানবাহন থামিয়ে যাত্রীদের মারধর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটছে প্রায় নিয়মিতভাবে।
উখিয়া উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও সাংবাদিক রাসেল চৌধুরী বলেন, ‘মাহমুদুল ২২ দিন আগে তার স্ত্রীকে হারিয়েছেন। আজ তাকেও হারালাম। তাদের সংসারে রয়েছে দুটি অবুঝ শিশু। জানি না, মা-বাবা হারা ওই দুই শিশুর ভবিষ্যৎ কী হবে। এ ঘটনায় আমরা বাকরুদ্ধ। আমি রাষ্ট্রের কাছে অনুরোধ জানাই, ওই দুই শিশুর দায়িত্ব যেন সরকার গ্রহণ করে।’
এ ঘটনায় জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে কঠোর অবস্থান নেওয়ার কথা জানিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ফোকাল পয়েন্ট) জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘ঘটনাটি কীভাবে ঘটেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। একই সঙ্গে দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে পুলিশি তৎপরতা চলছে। মহাসড়কে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নজরদারি আরও জোরদার করা হয়েছে।’