ঢাকা সোমবার, ১৮ আগস্ট, ২০২৫

বিধবা নারীর জমি দখলের চেষ্টা, জামায়াত নেতা ও ইউপি সদস্যের চাঁদা দাবি

সালথা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: আগস্ট ১৭, ২০২৫, ০৮:৩২ পিএম
সালথায় এক বিধবা নারীর জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক জামায়াত নেতা ও ইউপি সদস্যসহ প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

ফরিদপুরের সালথায় মোসাম্মাদ নিলুফা ইয়াসমিন নামে এক বিধবা নারীর জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক জামায়াত নেতা ও ইউপি সদস্যসহ প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে।

রোববার (১৭ আগস্ট) বিকেলে সালথা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ওই নারী। তিনি দাবি করেন, চাঁদা না দেওয়ার কারণে প্রভাবশালী জামায়াত নেতাসহ অন্যরা তার জমি দখলের চেষ্টা করছেন।

সংবাদ সম্মেলনে ওই নারী অভিযোগ করে বলেন, ‘বল্লভদী ইউনিয়নের চন্ডীবরদী গ্রামে তার ৯৩ শতাংশ পতিত জমিতে স্থানীয় তরুণরা খেলাধুলা করত। সম্প্রতি পারিবারিক সিদ্ধান্তে সেখানে আমগাছ রোপণ ও বেড়া নির্মাণ করি।’ 

তিনি আরও বলেন, গত ৪ আগস্ট গাছ লাগাতে গেলে সালথা উপজেলা জামায়াতের আমির আবুল ফজল মুরাদ, ইউপি সদস্য মো. ওলিয়ার রহমান ও স্থানীয় মো. আরটি হাসান বাধা দেন। একপর্যায়ে তারা জমিটি খেলার মাঠ দাবি করে গাছ উপড়ে ফেলেন ও বেড়া ভাঙচুর করেন।

তিনি জানান, এ সময় তারা তাকে বলেন, জমিতে কিছু করতে হলে ২৫ লাখ টাকা দিতে হবে। পরে মুরাদ জানান, ১২ লাখ দিলেই হবে, না হলে তাকে জমিতে ঢুকতে দেওয়া হবে না।

তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমি সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিলে সাংবাদিকদের ভুয়া তথ্য দিয়ে আমার বিরুদ্ধে খেলার মাঠ দখলের অভিযোগ তুলে সংবাদ প্রকাশ করান। এমন অবস্থায় আমার জমি উদ্ধারে প্রশাসন ও সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’

তবে এসব অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে সালথা উপজেলা জামায়াতের আমির আবুল ফজল মুরাদ বলেন, ‘৫৫ বছর আগে জমিটি সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর অধিগ্রহণ করে এবং তখন থেকে এটি খেলার মাঠ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। সম্প্রতি নিলুফা ইয়াসমিন মাঠটিকে নিজের দাবি করে আমগাছ লাগান, এতে বাধা দিলে তিনি আমার বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির অভিযোগ তোলেন।’

এ বিষয় অন্য অভিযুক্ত ইউপি সদস্য ওলিয়ার রহমান শেখ ও আরটি হাসানের বক্তব্য নেওয়ার জন্য তাদেরকে একাধিবার ফোন করা হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।

সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতাউর রহমান বলেন, ‘জায়গাটি খালি থাকায় স্থানীয় ছেলে-পেলেরা খেলাধুলা করত। তবে জায়গাটির মালিকানা নিয়ে দুটি পক্ষের মধ্যে ঝামেলা চলছে। আমি নিজে সেখানে গিয়েছিলাম। এখন সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর তদন্ত করলে জায়গাটির আসল মালিক বের হয়ে আসবে।’

সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আনিছুর রহমান বালী বলেন, ‘ওই জমির মালিকানা যাচাই-বাছাই করতে স্থানীয় তহশিলদারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’