ঢাকা সোমবার, ১১ আগস্ট, ২০২৫

যশোর হাসপাতালে যুক্ত হলো আধুনিক এক্স-রে মেশিন

যশোর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: আগস্ট ১১, ২০২৫, ১১:৩৯ এএম
যশোর হাসপাতালে মঙ্গলবার থেকে প্রথমবারের মতো চালু হচ্ছে আধুনিক এক্স-রে মেশিন। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

যশোরের চৌগাছা উপজেলার ফুলসারা গ্রামের মতিয়ার রহমান (৪৫) দীর্ঘদিন ধরে কোমরের যন্ত্রণায় ভুগছিলেন। রোববার (১০ আগস্ট) তিনি যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে অর্থোপেডিক বিভাগে চিকিৎসকের কাছে দেখাতে যান। ১০ টাকা দিয়ে টিকিট কেটে ১২২ নম্বর কক্ষে উপস্থিত হন। দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে কোমরের এক্স-রে করার নির্দেশ দেন। তিনি সরকারি হাসপাতালের স্বল্প খরচে ডিজিটাল রেডিওগ্রাফি (ডিআর) মেশিনে এক্স-রে করিয়ে মাত্র ৩ মিনিটের মধ্যে প্রিন্টকৃত রিপোর্ট হাতে পেয়ে খুব খুশি হন।

এটি যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে প্রথমবারের মতো সংযোজন হওয়া আধুনিক এক্স-রে মেশিন। মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) থেকে এ মেশিনের কার্যক্রম পূর্ণরূপে শুরু হবে।

হাসপাতালের প্রশাসনিক সূত্র জানায়, যশোর জেনারেল হাসপাতালে মোট ৪টি ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে দুটি ডিজিটাল সিআর ৫০০-এমএ এবং ফুজি সি আর ৫০০-এমএ। এবার নতুন সংযোজন হল ডিআর ৫০০-এমএ মেশিন, যা সরকারি হাসপাতালে প্রথম। এই মেশিনের মূল্য কোটি টাকারও বেশি। এটি দিয়ে যেকোনো ধরনের এক্স-রে করা সম্ভব এবং ডাবল ডিটেক্টর থাকায় এক্সপোজ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ছবিটি পাওয়া যায়। ফলে এক্স-রে করার কয়েক মিনিটের মধ্যে রোগী প্রিন্টকৃত রিপোর্ট নিতে পারবেন। মেশিনটি সাধারণত ১০ বছর সেবা দেয়।

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বারইখালি গ্রামের শরিফুল ইসলাম জানান, ‘তিনি চিকিৎসা শেষে দ্রুত এক্স-রে সেবা পেয়েছেন। এর ফলে এক দিনেই পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফেরার সুযোগ পান। এই আধুনিক মেশিনের কারণে আরও অনেক রোগী উপকৃত হবেন বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।’

হাসপাতালের এক্স-রে টেকনিশিয়ান মৃত্যুঞ্জয় রায় বলেন, ‘নতুন মেশিনে আন্তরিকতার সঙ্গে দ্রুত সেবা দেওয়া হবে। দ্রুত ফ্লিম তৈরি হওয়ায় এক্সরে পরিমাণও বাড়ানো সম্ভব হবে। এর আগে হাসপাতালে ১২৮ স্লাইসের অত্যাধুনিক সিটিস্ক্যান মেশিন সংযোজন করা হয়, যা খুলনা বিভাগের মধ্যে সর্বোচ্চ মানের।’

রেডিওলজি বিভাগের সহকারি অধ্যাপক ডা. আবু সাঈদ বলেন, ‘ডিআর এক্স-রে মেশিন স্থাপনের মাধ্যমে যশোরবাসীর দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে। এটি রোগীদের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রতঙ্গের নিখুঁত এক্সরে করাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ফলে রোগীদের ক্লিনিক বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যেতে হবে না এবং সরকারি হাসপাতালে স্বল্প খরচে উন্নত মানের এক্স-রে সেবা পাওয়া যাবে।’

হাসপাতালের তত্তাবধায়ক ডা. হুসাইন শাফায়াত জানান, ‘রোগীদের জন্য ডিআর এক্স-রে মেশিনটি প্রস্তুত করা হয়েছে এবং পরীক্ষামূলকভাবে এক্স-রে সেবা দেওয়া হচ্ছে। আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে সেবা কার্যক্রম পূর্ণরূপে চালু হবে। রোগীরা সরকার নির্ধারিত ২০০ টাকায় উন্নত এক্স-রে সেবা নিতে পারবেন। পুরোনো এনালগ মেশিনের তুলনায় এখানে রিপোর্ট পেতে অপেক্ষার সময় অনেক কম হবে। ৩-৪টি মেশিনের মাধ্যমে রোগীরা দ্রুত ফ্লিমসহ রিপোর্ট পাবেন। আধুনিক ডিজিটাল এক্স-রে ইমেজিং সিস্টেম প্রচলিত ফিল্মভিত্তিক পদ্ধতির তুলনায় অনেক উন্নত, দ্রুত ও চকচকে ছবি দেয়।