যশোরে মাদকবিরোধী অভিযানে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) একটি দল হামলার শিকার হয়েছে। এ ঘটনায় চার সদস্য আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে কনস্টেবল শহিদুল ইসলাম গুরুতর অবস্থায় যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ঘটনাটি বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় শহরের রাজারহাট মোড় এলাকায় ঘটেছে। হামলার পর পুলিশ বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) পৃথক দুটি মামলা করেছে-একটি সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে, অন্যটি মাদক আইনে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সিআইডির একটি দল অভিযান চালায়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন এসআই হাবিব ও এসআই তরিকুল ইসলাম; সঙ্গে ছিলেন এএসআই জাহিদ হোসেন ও কনস্টেবল শহিদুল ইসলাম। তারা স্থানীয় মাসুদ রানার ছেলে তুষারকে ‘কাশ্মীরি বিরিয়ানি হাউস’ নামের দোকানে তল্লাশি করেন এবং ২০টি ইয়াবা বড়ি উদ্ধারের দাবি করেন।
তল্লাশির সময় তুষার সিআইডির পরিচয় দেওয়া সদস্যদের ‘ভুয়া পুলিশ’ বলে সন্দেহ প্রকাশ করেন। এতে আশপাশের লোকজন জড়ো হয়ে সিআইডির সদস্যদের ওপর হামলা চালায়। হামলায় চার সদস্যই আহত হন। দুজন পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও বাকি দুইজন বেধড়ক মারধরের শিকার হন। পরে কোতোয়ালি থানা পুলিশ এসে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
দোকানদার ও স্থানীয়রা জানান, সিআইডি সদস্যরা সাদা পোশাকে ছিলেন। পরিচয় নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হওয়ায় তুষারের চিৎকারে জনতা উত্তেজিত হয়ে হামলা চালায়।
তুষার বলেন, তারা ভুয়া সিআইডি, আমার মোবাইল ও টাকা নিয়ে যাচ্ছে।
অন্যদিকে অভিযুক্ত তুষারের দাবি, তাকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে তুষার বলেন, হোটেলে নিয়ে গিয়ে মোবাইল ও টাকা রাখতে বলা হয়েছিল এবং পরে ইয়াবার প্যাকেট দেখানো হয়। এতে প্রতিবাদ করলে ধাক্কাধাক্কি ও মারামারি শুরু হয়।
যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি আবুল হাসনাত জানান, সিআইডির একজন এসআই বাদী হয়ে সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে মামলা করেছেন।
এছাড়া মাদক আইনে আরও একটি মামলা হয়েছে, যার আসামি তুষারসহ অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজন। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।
সিআইডি যশোর কার্যালয়ের বিশেষ পুলিশ সুপার সিদ্দিকা বেগম বলেন, পুলিশ অভিযানে গিয়ে বাধার মুখে পড়েছে। কেউ যেন অহেতুক পুলিশের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ না তোলে। অভিযুক্ত তুষারের নামে আগেও মামলা রয়েছে।