সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুল আজম খান চঞ্চলের শ্যালক কামরুজ্জামান সাচ্চুর বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, তিনি রূপালী ব্যাংকের হাট খালিশপুর শাখা থেকে ভগ্নিপতির প্রভাব খাটিয়ে কনজুমার ঋণ গ্রহণ করেন ১৫ লাখ টাকা।
এই ঋণ গ্রহণের সময় সহকর্মী দুই শিক্ষক আরিফুল ইসলাম ও শারমিন আক্তারকে জামিনদাতা হিসেবে দেখিয়ে তাদের জাল স্বাক্ষর, ছবি ও জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করেন।
কামরুজ্জামান সাচ্চু মহেশপুর পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের কারিগরি বিভাগের সহকারী শিক্ষক ছিলেন।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, সরকারি দলের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তির আত্মীয় হওয়ায় তিনি নিয়মিত স্কুলে না এসে বেতন তুলতেন। অভিযোগ রয়েছে, ১৫ বছরের চাকরিজীবনে কার্যত কোনো ক্লাস না নিয়েই পুরো বেতন ও ভাতা নিয়েছেন তিনি।
২০২৩ সালের ৫ আগস্টের পর তিনি এলাকা ছেড়ে চলে যান এবং ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে ডাকযোগে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে স্বেচ্ছায় চাকরি ছাড়েন। এরপর তিনি ঋণের কোনো কিস্তি পরিশোধ করেননি।
ফলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জামিনদাতাদের, অর্থাৎ শিক্ষক আরিফুল ইসলাম ও শারমিন আক্তারের বেতন বন্ধ করে দিয়েছে। গত দুই মাস ধরে তাঁরা বেতন না পেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন, এমনকি এবারের ঈদের বোনাসও তুলতে পারেননি।
শিক্ষক আরিফুল ইসলাম অভিযোগ করেন, ‘আমি কোনো ঋণপত্রে স্বাক্ষর করিনি। কামরুজ্জামান সাচ্চু আমাদের স্বাক্ষর ও পরিচয়পত্র জাল করে জমা দিয়েছেন।’
একই অভিযোগ করেছেন শিক্ষক শারমিন আক্তার। তারা ব্যাংকে লিখিত অভিযোগ করলেও এখনো কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে জানান।
ব্যাংকের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ তুহিন আলী বলেন, ‘ঋণগ্রহীতা চাকরি ছেড়ে চলে গেছেন, কিন্তু ঋণ পরিশোধ করেননি। নিয়ম অনুযায়ী এখন জামিনদাতাদের কাছ থেকেই টাকা আদায় করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যদি প্রমাণিত হয় যে তারা স্বাক্ষর করেননি, তাহলে তাদের জামিনদাতা হিসেবে বিবেচনা করা হবে না। তবে সেটি যাচাইয়ের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত প্রয়োজন।’
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রঞ্জন কুমার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, বিষয়টির একটা সমাধান হচ্ছে বলে শুনেছেন। তবে বিস্তারিত মন্তব্য করতে রাজি হননি।
অভিযুক্ত কামরুজ্জামান সাচ্চুর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি এলাকা ছাড়া বলে জানা যায়। তার মোবাইল নম্বরও বন্ধ থাকায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।
এখন দুই ‘নির্দোষ’ শিক্ষক বেতন বন্ধ থাকায় পরিবার নিয়ে চরম দুর্ভোগে রয়েছেন। তারা দ্রুত ন্যায়বিচার ও ব্যাংকের স্বচ্ছ তদন্ত দাবি করেছেন।
আপনার মতামত লিখুন :