ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে ৫ আগস্টের বিজয় মিছিলে হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ কর্মী ওয়াজেদ আলী শেখ ও তার পরিবার পেয়েছেন ‘জুলাই যোদ্ধা’র রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও অর্থ সহায়তা। এ নিয়ে এলাকায় তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পাগলা থানার নিগুয়ারী ইউনিয়নের পাতলাশী গ্রামের বাসিন্দা ওয়াজেদ আলী শেখ, তার স্ত্রী মোছা. রুমি ও ছেলে অপূর্ব হিমেল রানা গত ৫ আগস্টের আন্দোলনে আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ার দাবি করে ‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে স্বীকৃতি পান। তারা পেয়েছেন স্বাস্থ্য কার্ড ও আর্থিক সহায়তা হিসেবে এক লাখ টাকা করে ভাতা।
স্থানীয় শতাধিক বাসিন্দা জানান, ওই দিন বিকেল ৪টার দিকে বিজয় মিছিল বিলারঘাট এলাকায় পৌঁছালে ওয়াজেদ আলী ও তার অনুসারীরা মিছিলে সশস্ত্র হামলা চালান। এতে বিএনপি কর্মী হিরন পালোয়ান বল্লমের আঘাতে আহত হন। হামলার জবাবে এলাকাবাসীর গণপিটুনিতে ওয়াজেদ আলী ও তার ছেলে আহত হন এবং পরে তারা শ্রীপুর উপজেলার মাওনা এলাকায় পালিয়ে যান।
হামলার প্রত্যক্ষদর্শী ও আহত বিএনপি কর্মী হিরন পালোয়ান বলেন, ‘ওয়াজেদ আলী আমার ডান হাতে বল্লম দিয়ে আঘাত করে।’
স্থানীয় বিএনপি নেতা ফরিদ খাঁ বলেন, ‘আক্রমণকারীরা এখন ‘জুলাই যোদ্ধা’ হয়ে গেছে! এটা কেমন বিচার?’
৯০ বছর বয়সী প্রত্যক্ষদর্শী খন্দকার সাহাব উদ্দিন বলেন, ‘হামলা করেও তারা যোদ্ধা হয় কীভাবে?’
৭০ বছর বয়সী আক্কাছ খান বলেন, ‘ওদের হাতে অস্ত্র ছিল, তারাই মিছিলে হামলা চালায়।’
প্রতিবাদ ও গণচাপের মুখে কথা বলতে রাজি হননি ওয়াজেদ আলী। পরে বলেন, ‘আমার ভুল হতে পারে, আমি টাকা ফেরত দিতে প্রস্তুত।’ তার স্ত্রী রুমি গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতি টের পেয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জামাল উদ্দিন বলেন, ‘এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তদন্ত কমিটির প্রধান ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আমীর সালমান রনি বলেন, ‘তাদের বিষয়ে তদন্ত চলমান। প্রাথমিকভাবে সন্দেহজনক বিষয় রয়েছে।’