ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে যুবদল নেতা জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে।
সোমবার (২৫ আগস্ট) বিকেলে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উপজেলা জুড়ে সমালোচনা ছড়িয়ে পড়ে। তবে বিষয়টি এখনো মেনে নিতে পারছেন না মারধরের শিকার সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা হাসানুর রহমান। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ভবিষ্যতে আর কারো ক্ষেত্রে এমন ঘটনা না ঘটুক। এ ঘটনায় ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযুক্ত জিয়াউর রহমানকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলা যুবদলের সাবেক সদস্য জিয়াউর রহমান বিকেল ৩টার দিকে তার স্ত্রীর জন্মনিবন্ধনের সংশোধনী করাতে উপজেলা কার্যালয়ে যান। সেখানে গিয়ে তিনি সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা হাসানুর রহমানের কাছে বিষয়টির সমাধান চান। এ সময় হাসানুর রহমান সার্ভার ডাউন বলে জানান। তখন জিয়া তার মোবাইল নম্বর চান। হাসানুর রহমান নম্বর দিতে অস্বীকৃতি জানালে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে জিয়া তাকে গলাধাক্কা ও মারধর করেন। পরে অফিসের লোকজন এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
মারধরের শিকার হাসানুর রহমান বলেন, ‘জিয়াউর রহমান নামে এক যুবদল নেতা তার স্ত্রীর জন্মনিবন্ধনের সংশোধনী করতে আসেন। আমি তাকে সার্ভার ডাউনের কথা জানাই। এরপর তিনি আমার মোবাইল নম্বর চান। আমি কারণ জানতে চাইলে তিনি বাগবিতণ্ডায় জড়ান এবং এক পর্যায়ে আমার গলা ধরে ধাক্কা দেন। পরে অফিসের লোকজন তাকে থামান। বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। পরিচয় দিয়ে কথা বললে হয়তো নাম্বারটি দিয়েই দিতাম। তবে সবাইকে নাম্বার দিলে যত্রতত্র সময়ে ফোন করে বিরক্ত করে। এজন্য দিইনি। কিন্তু এজন্য মারধরের শিকার হব, এটা ভাবিনি।’
অভিযুক্ত যুবদল নেতা জিয়াউর রহমানের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
তবে তার চাচা, পৌর বিএনপির সদস্য সচিব নূরে আলম জিকু বলেন, ‘ফালতু বিষয় নিয়ে আমাকে কল করা আপনার ঠিক হয়নি। ফোন রাখেন। এ কথা বলে তিনি ফোন কেটে দেন।’
সহকারী কমিশনার (ভূমি) সালাউদ্দিন বিশ্বাস বলেন, ‘অফিসে এসে জিয়াউর রহমান দায়িত্বপালনে বাধা দেন এবং সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে গলাধাক্কা দেন। পরে তাকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। মুচলেকা নিয়ে পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘সে কোন দলের রাজনীতি করে তা আমার জানা নেই। তবে আটক হওয়ার পর যুবদলের কয়েকজন নেতাকর্মী তাকে ছাড়াতে আসে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা রহমান বলেন, ‘মারধর নয়, জিয়াউর রহমান অফিসের মধ্যে হাসানুর রহমানকে গালাগালির একপর্যায়ে গলায় ধাক্কা দেন। তখন আমি বাইরে ছিলাম, পরে অফিস থেকে বিষয়টি আমাকে জানানো হয়।’