ঢাকা সোমবার, ০৬ অক্টোবর, ২০২৫

ময়মনসিংহে দ্বিতীয় দিনের মতো জুলাই যোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের আমরণ অনশন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ময়মনসিংহ
প্রকাশিত: অক্টোবর ৬, ২০২৫, ০৯:০২ পিএম
ময়মনসিংহে আমরণ অনশনে জুলাই যোদ্ধা ও শহিদ পরিবারের সদস্যরা।

ময়মনসিংহে দৃশ্যমান ফ্যাসিস্টদের দ্রুত গ্রেপ্তার এবং শহীদ ও আহতদের পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করা পর্যন্ত জুলাই যোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যরা আমরণ অনশনসহ অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। দ্বিতীয় দিনের মতো ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের সামনের চত্বরে এই অনশন চলছে।

রোববার (৫ আগস্ট) দুপুর থেকে শুরু হওয়া আমরণ অনশন আজ সোমবারও চলে। অনুষ্ঠানের আয়োজনে সাঙ্গে ছিল ময়মনসিংহ বিভাগের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও বিপ্লবী জুলাই যোদ্ধা ।

বিপ্লবী জুলাই যোদ্ধার ব্যানারে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শহীদ ও আহত সেলের ময়মনসিংহ বিভাগীয় সমন্বয়ক আল নূর মোহাম্মদ আয়াস আমরণ অনশনের ঘোষণা দিলে তাতে জেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে শহীদ পরিবার ও আহত ব্যক্তিরা অংশ নেন।

শেরপুর, জামালপুর, নেত্রকোনা ও ময়মনসিংহের বিভিন্ন উপজেলার শহীদ পরিবার ও আহতরা অনশনে সংহতি জানাতে আসেন এবং আল নূরের পাশে বসে বিচার দাবিতে শ্লোগান দেন। প্রথম দিনের বৃষ্টি ও রাতভর থেমে থাকার পরও শহীদ পরিবারে গৃহকর্ত্রী সদস্যরাও স্বজন হত্যার বিচারের দাবিতে অংশ নেন।

অনশনকৃতদের মধ্যে ছিলেন শেরপুরের ঝিনাইগাতীর শালচূড়া গ্রামের শহীদ শাহাদাত হোসাইনের স্ত্রী সোনিয়া আক্তার। তিনি জানান, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তিনি ঢাকায় ও শ্বশুরবাড়ি শেরপুর আদালতে পৃথকভাবে দুইটি মামলা করেছেন। তবে স্থানীয় এক বিএনপি নেতা তাকে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছেন। মামলায় একজন আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেপ্তার হলেও শেরপুর আদালত থেকে তিনি জামিনে ছাড়া পেয়েছেন।

আল নূর মোহাম্মদ আয়াস বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানের এক বছর পার হয়ে গেলেও দৃশ্যমান কোনো বিচার দেখতে পাচ্ছি না। বরং প্রশাসনের সহযোগিতায় আওয়ামী লীগের দোসররা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।’

তিনি অভিযোগ করেন, শেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি চন্দন কুমার পাল গ্রেপ্তার হওয়ার ১৮ দিনের মাথায় জামিনে মুক্তি পেয়েছেন এবং শহীদ পরিবারের সদস্যদের হুমকি দিচ্ছেন; তার জামিন গোপনে মোটা অঙ্কের টাকায় হওয়া প্রশাসনের অসহযোগ ছাড়া সম্ভব নয়—এ ধরনের কাজ প্রশাসন ছাড়া সম্ভব নয় বলে দাবি করেন।

অনশনে একাত্মতা প্রকাশ করে অংশ নেওয়া এনসিপি ময়মনসিংহ জেলা কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট এটিএম মাহবুবুল আলম বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পেরিয়ে গেলেও জুলাই যোদ্ধা ও তাদের পরিবারের সদস্যরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এটি রাষ্ট্রের ব্যর্থতার পরিচয়। আমরা চাই, আওয়ামী দোসরদের গ্রেপ্তার এবং জুলাই যোদ্ধা ও তাদের পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হোক।’

অনশনকারীরা আগামী পর্যন্ত তাদের দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছেন।