নরসিংদীর বেলাবো এলাকায় ভূমিকম্পের ঘটনায় ঘরের সানসেট ভেঙে মোঃ ওমর আলী (১০) নামের এক শিশু নিহত হয়েছে। পাশাপাশি ওই শিশুর বাবা উজ্জল মিয়া (৪০) গুরুতর আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ঢামেকে ভর্তি উজ্জল মিয়ার অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকাল ১০টা ৩৯ মিনিটে সারা দেশের মতো নরসিংদীতেও ভূমিকম্প অনুভূত হয়, যাতে মুহূর্তেই ভয় ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
রূপগঞ্জে ভূমিকম্পে দেওয়াল চাপায় এক শিশু নিহত এবং অন্তত পাঁচ জন আহত হয়েছেন। নিহত ফাতেমা ছিলেন গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের ইসলামবাগ ৫ নম্বর ক্যানেল এলাকার আব্দুল হকের কন্যা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সকালে হঠাৎ ভূমিকম্পের সময় সড়কের পাশে থাকা দেওয়াল শিশু ফাতেমা, তার মা কুলসুম বেগম ও প্রতিবেশী জেসমিন বেগমের ওপর ধসে পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই ফাতেমার মৃত্যু হয়। পরে তাদের দেওয়ালের নিচ থেকে উদ্ধার করা হয়। আহত মা ও প্রতিবেশীকে স্থানীয় একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে, নরসিংদীর পলাশে মালিতা গ্রামে কাজম আলী (৭৫) নামে এক বৃদ্ধ মাটির দেওয়াল চাপা পড়ে মারা যান। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে পলাশ থানার ওসি মো: মনির হোসেন।
ভূমিকম্পে জেলাজুড়ে বিভিন্ন ভবনে ফাটল দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন মুদির দোকানসহ বিভিন্ন দোকানপাটে সাজানো মালামাল পড়ে গিয়ে বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এ সময় দৌড়ে বাইরে বের হতে গিয়ে ও মাথায় দোকানের মালামাল পড়ে প্রায় ২০ জন আহত হয়েছে।
এদিকে, ভুমিকম্পে ঘোড়াশাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সাবস্টেশনে আগুন লেগে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পলাশ ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। অপরদিকে ঘোড়াশালসহ পলাশে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। বিকল্প উপায়ে বিদ্যুৎ সঞ্চালন করার চেস্টা করছে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ।
ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল পলাশের ঘোড়াশাল বাজার ঘুরে দেখা যায়, দোকানগুলোতে তাদের সাজানো মালামাল পড়ে গেছে।
মুদি দোকানদার আসলাম মিয়া বলেন, ‘আমার দোকানের কাচের মালামালগুলো ভেঙে গেছে। আমি প্রথমে ভূমিকম্প বুঝতে পারিনি। মনে হয়েছে কেউ হামলা করেছে। পরক্ষণেই বুঝতে পেরেছি, এটি হামলা নয়, ভূমিকম্প। তবে বেশ ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি।’
ঘোড়াশাল ঈদগাহ রোডের মারকাসুল সুন্নাহ তাহফিজুল কুরআন সুন্নাহ মাদ্রাসার পরিচালক মুফতি সালা উদ্দিন আনসারী বলেন, ‘আমাদের ৬ তলা ভবনের ৪-৫ জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে। শিক্ষার্থীরা ভয় পেয়েছে এবং তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।’
এক ভবনের মালিক আমানউল্লাহ বলেন, ‘ভুমিকম্পে আমার ভবনে কয়েক জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে। ভবনের সব দোকানপাট বন্ধ করে দিয়েছে। কেউ ভয়ে দোকান খুলছে না।’
নরসিংদী জেলা আবহাওয়া অধিদপ্তরের ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমাদের এখানে রিখটার স্কেল নাই। তাই আমরা ভুমিকম্পের কম্পন মাপতে পারি না।’



সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন