ঢাকা শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

বেপরোয়া ইজিবাইক-অটোর দৌরাত্ম্য, বাড়ছে মৃত্যুঝুঁকি

পটুয়াখালী প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৫, ২০২৫, ০৬:২০ পিএম
যেখানে খুশি সেখানেই বাঁক নিচ্ছে অটোরিকশার চালকরা। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

পটুয়াখালীর দুমকিতে বেপরোয়া ও নিয়ন্ত্রণহীনভাবে ইজিবাইক, অটোরিকশা ও মাহিন্দ্রার চলাচলের কারণে সড়কে দুর্ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। গত এক মাসে অন্তত ২০টিরও বেশি দুর্ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী যুবায়েরসহ (২২) অর্ধশতাধিক যাত্রী ও পথচারী আহত হয়েছেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, এসব যানবাহনের বেশিরভাগই কাগজপত্রহীন, তা ছাড়া চালকদের নেই প্রয়োজনীয় ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ। ফলে প্রতিদিনই যাতায়াত করতে গিয়ে ঝুঁকির মুখে পড়ছেন সাধারণ মানুষ।

করোনাকালীন সময়ে কাজ হারিয়ে বহু মানুষ গ্রামে ফিরে এসে ইজিবাইক চালনার পেশায় যুক্ত হন। এরপর ২০২৪ সালে সরকার পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন পোশাক কারখানা বন্ধ হয়ে গেলে কর্মহীন হয়ে রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে বিপুলসংখ্যক মানুষের প্রত্যাবর্তনে পরিস্থিতি আরও নাজুক হয়ে ওঠে।

জীবিকা হারানো এসব মানুষ কম পুঁজি ও অভিজ্ঞতা ছাড়াই নতুন যান কিনে রাস্তায় নামছেন। এতে যেমন তাদের কর্মসংস্থানের পথ তৈরি হয়েছে, তেমনি জনসাধারণের নিরাপদ চলাচলও ঝুঁকিতে পড়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা তানভীর আলম বলেন, ‘এদের কারণে রাস্তায় স্বাভাবিক যানবাহন চলাচলই দায় হয়ে পড়েছে। প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও দুর্ঘটনা ঘটছে।’

পথচারীরা জানান, চালকদের অদক্ষতা, অতিরিক্ত গতি ও যাত্রী তোলার প্রতিযোগিতা দুর্ঘটনার প্রধান কারণ। চরগরবদী এলাকার গাজী সম্রাট হোসেন বলেন, ‘রাস্তা দিয়ে হাঁটাও ভয় লাগে এখন।’

রাস্তায় ইচ্ছে-খুশি চলছে ইজিবাইক-অটোগাড়ি। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

শ্রীরামপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘অটোরিকশা বা ইজিবাইক চালনার ক্ষেত্রে চালকদের আমাদের কাছ থেকে লাইসেন্স নেওয়া উচিত। কিন্তু কেউই তা মানছে না। তাই সরকারিভাবে বাধ্যতামূলক লাইসেন্সিং প্রক্রিয়া চালু করা জরুরি।’

কোনো নিবন্ধন, লাইসেন্স কিংবা তদারকির ব্যবস্থা না থাকায় এসব যান নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়েছে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. ফরিদা সুলতানা বলেন, ‘এই সমস্যা এখন সারা দেশেই। ঢাকায়ও এদের দৌরাত্ম্য বাড়ছে। সরেজমিনে পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

যানবাহনের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ, চালকদের বাধ্যতামূলক প্রশিক্ষণ, কাগজপত্র যাচাই ও নিয়মিত অভিযান পরিচালনার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তাদের আশা, দ্রুত উদ্যোগ নেওয়া গেলে দুমকির সড়কে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে এবং দুর্ঘটনার হারও কমে আসবে।