সোমবার, ১১ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


ব্যবসা-বাণিজ্য ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ১০, ২০২৫, ১০:২০ পিএম

ভারতের পোশাক খাতে সংকট, অর্ডার চলে যাচ্ছে বাংলাদেশ-পাকিস্তানে

ব্যবসা-বাণিজ্য ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ১০, ২০২৫, ১০:২০ পিএম

ছবি - সংগৃহীত

ছবি - সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে ভারতে তৈরি পোশাকের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রভাব কড়া আঘাত হেনেছে ভারতের পোশাক রপ্তানি খাতে। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্কের কারণে বিশ্ববাজারের বহু ব্র্যান্ড ভারতে অর্ডার দিতে সংকোচ করছে অথবা তাদের অর্ডার বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়ার মতো শুল্ক কম থাকা দেশে সরিয়ে নিচ্ছে।

তামিলনাড়ুর তিরুপ্পুর, যাকে ভারতের নিটওয়্যার রাজধানী বলা হয়, সেখানকার কারখানাগুলো ইতোমধ্যে মার্কিন বাজার থেকে অর্ডার কমে যাওয়ার প্রভাব অনুভব করছে। একাধিক রপ্তানিকারক জানান, ক্রেতারা নতুন অর্ডার স্থগিত রেখেছেন বা অন্য দেশে সরিয়ে নিচ্ছেন। এক রপ্তানিকারক বলেন, তার প্রতিষ্ঠান থেকে নিয়মিত মার্কিন চালান ইতোমধ্যে পাকিস্তানে চলে গেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের এই শুল্ক কাঠামোয় ভারতে তৈরি পোশাকের ওপর শুধু প্রধান শুল্কই নয়, অতিরিক্ত জরিমানা শুল্কও আরোপিত হয়েছে, যা কিছু ক্ষেত্রে ৬৪ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছেছে। এই কারণে ভারতের তৈরি পোশাকের দাম অন্যান্য প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় প্রায় ৩৫ শতাংশ বেশি। ফলে বাজারে প্রতিযোগিতায় ভারত পিছিয়ে পড়েছে।

তামিলনাড়ুর তিরুপ্পুর, কোয়েম্বাটুর ও কারু এলাকার প্রায় সাড়ে বারো লাখ শ্রমিকের জীবন-জীবিকা ঝুঁকির মুখে। এই এলাকা থেকে বছরে প্রায় ৪৫ হাজার কোটি টাকার পোশাক রপ্তানি হয়, যার ৩০ শতাংশ মার্কিন বাজারে যায়। 

তিরুপ্পুর এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কে এম সুব্রাহ্মনিয়ান জানান, ‘আমাদের লাভ মাত্র ৫ থেকে ৭ শতাংশ, এই শুল্কের বোঝা আমরা বহন করতে পারব না। ক্রেতারা শুল্কের অংশ ভাগাভাগি করতে বলছে, যা বাস্তবসম্মত নয়।’

বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই শুল্কের কারণে তুলা ও নিটওয়্যার পোশাক খাতের মার্কিন অর্ডার ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ কমে যেতে পারে। পাশাপাশি হোম টেক্সটাইল শিল্পেও ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। কোয়েম্বাটুর ও কারুর কারখানাগুলোতে বিদেশি ক্রেতাদের অর্ডার স্থগিত বা বিলম্বিত হচ্ছে।

সাউদার্ন ইন্ডিয়া মিলস অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব কে সেলভারাজু বলেন, ‘শুধুমাত্র শুল্ক বৃদ্ধি নয়, বরং ইতোমধ্যে দুর্বল হয়ে যাওয়া বাণিজ্য পরিবেশকে আরও ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।’ তিনি ভারতের তুলার ওপর ১১ শতাংশ আমদানি শুল্ক এবং জিএসটি সংক্রান্ত জটিলতাও উল্লেখ করেছেন, যা রপ্তানির খরচ বাড়াচ্ছে এবং প্রতিযোগিতায় ভারতীয় কোম্পানিগুলোকে পিছিয়ে ফেলছে।

বাংলাদেশ বর্তমানে ৩৫ থেকে ৩৬ শতাংশ শুল্ক বহাল রেখেছে, পাকিস্তান ১৯ শতাংশে নেমেছে, ভিয়েতনাম ২০-২১ শতাংশ এবং কম্বোডিয়া ১৯ শতাংশে নামিয়েছে। এই পার্থক্যের কারণে মার্কিন বাজারে ভারতীয় পণ্যের দাম বাড়ার ফলে ক্রেতারা সহজলভ্য বিকল্প খুঁজে নিচ্ছে।

সুব্রাহ্মনিয়ান আরও বলেন, ‘আমাদের মুনাফা স্বল্প, মার্কিন শুল্ক এতটাই বেশি যে ক্রেতারা রাতারাতি সস্তা বিকল্প খুঁজে নিচ্ছে। আমাদের অনেক অর্ডার হাতছাড়া হয়ে গেছে।’ 

তিনি ভারত সরকারকে কাঁচামালের ওপর শুল্ক ৫ শতাংশের নিচে নামানোর আহ্বান জানিয়েছেন, অন্যথায় দীর্ঘমেয়াদে ভারতের পোশাক রপ্তানি বড় সংকটের মুখোমুখি হবে।

তামিলনাড়ুর পোশাক শিল্পে এই সংকট একদিকে কর্মসংস্থানের বড় ধাক্কা হয়ে দাঁড়াতে পারে, অন্যদিকে ভারতের বিশ্ববাজারে অবস্থান দুর্বল করবে। রাজনৈতিক ও নীতি-সংক্রান্ত বাধা কাটিয়ে উঠতে না পারলে ভারতের তৈরি পোশাকের ওপর মার্কিন বাজারের চাহিদা কমে আসবে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সূত্র: দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!