ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে উল্টোদিক থেকে আসা মোটরসাইকেলের সাথে জাহাঙ্গীনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীদের বহনকারী বাসের সংঘর্ষে এক মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যূ হয়েছে।
শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) রাত পৌনে ১০ টায় সাভারের এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এসময় গুরুতর আহত আরোহীকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে হাসপাতালের নিউরো আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১১:৫২ মিনিটে তিনি মারা যান।
নিহত মোটরসাইকেল আরোহীর নাম সোহরাব হোসেন (৪৪)। পিতার নাম আব্দুল লতিফ৷ তিনি ধামরাইয়ের গাংগুটিয়া এলাকার বাসিন্দা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের বহনকারী ডাবল ডেকার বাসটি সাভারের থানা স্ট্যান্ড এলাকায় রাস্তার মাঝের একমুখী লেন দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে ফিরছিলো। মোটরসাইকেল আরোহী ব্যক্তি ট্রাফিক আইন অমান্য করে উল্টোদিক থেকে তীব্র বেগে আসছিলো৷ এক পর্যায়ে মুখোমুখী হয়ে গেলে বাস ড্রাইভার ব্রেক করার চেষ্টা করেন। তবে একমুখী লেনে গতি বেশি থাকায় বাসটি থামানো সম্ভব হয়নি৷ মুখোমুখি সংঘর্ষের পর মোটরসাইকেলটি আরোহীসহ বাসের নিচে চলে যায়। বাস থামিয়ে শিক্ষার্থীরা রক্তাক্ত অবস্থায় সোহরাবকে উদ্ধার করেন।
বাসে থাকা ৫০ ব্যাচের শিক্ষার্থী খায়ের মাহমুদ জানান, `আমি ও হৃদয়(৫০ ব্যাচ) বাসের দোতলায় একেবারে সামনের সিটে বসছিলাম। সর্বশেষ তার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আমরা ৪৮ ব্যাচের ইমরান ভাইসহ তিনজন সেখানে ছিলাম। এই দুর্ঘটনায় আমাদের ড্রাইভারের কোনোরকম দোষ ছিল না। ডাক্তর সার্ভিসিং করার জন্য যখন ওনার প্যান্ট কাটছিল তখন ওনার পকেটে অনেকগুলো ঘুমের ওষুধ পাওয়া যায় যেটা দেখে ডাক্তার নিজেই অবাক হইছেন। তারপরও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন। এই দুর্ঘটনায় ড্রাইভার এদের উপর দোষ না দেই।`
বাসের চালক মোঃ আবু হানিফ বলেন, `বাইকটা রাস্তার রং সাইডে ছিল। হঠাৎ করে আমার বাসের সামনে উল্টে যায়। আমি হার্ড ব্রেক দিয়েছি; কিন্তু কিছু করার ছিলো না। বাস যাতে রাস্তার ডিভাইডারে গিয়ে যাতে বাড়ি না খায় সেজন্য সাবধানে স্টিয়ারিং করেছি। আরেকটু হইলে বাসের ছাত্ররাও মারাত্মক কোন দূর্ঘটনায় পড়তো।`
হাইওয়ে থানার ওসি সওগাতুল আলম রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, জাবির ডাবল ডেকার বাসের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে আহত ব্যাক্তি সোহরাব হোসেন এনাম মেডিকেল কলেজের নিউরো আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১১:৫২ মিনিটে মারা গেছেন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক একেএম রশিদুল আলম রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, `অনেক প্রত্যক্ষদর্শীর ভাষ্যমতে, মোটরসাইকেলটি রাস্তার ভুল পাশ দিয়ে যাচ্ছিল। এ ধরনের দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি অত্যন্ত দুঃখজনক। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই ঘটনায় গভীরভাবে মর্মাহত এবং দুঃখিত। আমরা ভিকটিমের পরিবারের কাছে পৌঁছাব এবং এই কঠিন সময়ে তাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমাদের সর্বাত্মক সহায়তা প্রদান করব।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন