শনিবার, ০৮ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


মিনহাজুর রহমান নয়ন

প্রকাশিত: নভেম্বর ৮, ২০২৫, ০১:০০ এএম

মাতামুহুরির তীরে সবুজ স্বর্গ

মিনহাজুর রহমান নয়ন

প্রকাশিত: নভেম্বর ৮, ২০২৫, ০১:০০ এএম

মাতামুহুরির তীরে সবুজ স্বর্গ

বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তে বান্দরবানের লামা উপজেলায় লুকিয়ে আছে এক স্বপ্নময় উপত্যকা সুখিয়া ভ্যালি। পাহাড়, নদী আর নৈঃশব্দে মোড়া এই জায়গাটি এখন প্রকৃতিপ্রেমীদের কাছে এক নতুন নাম। চারদিকে উঁচু-নিচু সবুজ পাহাড়, মাঝখান দিয়ে বয়ে চলেছে মাতামুহুরি নদী। সকালে সূর্যের আলো যখন পাহাড়ে পড়ে, তখন যেন চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে সোনালি ঝিলিক।

পাহাড়ের চূড়ায় একটি ছোট ওয়াচটাওয়ার রয়েছে, সেখান থেকে দেখা যায় পুরো ভ্যালির অপরূপ দৃশ্য নদীর বাঁক, পাহাড়ের রূপ আর দূরের কুয়াশা মেশানো গ্রাম মনে হবে যেন ছবির মতো কোনো একটা গ্রামে প্রবেশ করলাম। এ ছাড়াও দেখার মতো আছে সাদা পাহাড়, মিনঝিরি পাড়া কিংবা স্থানীয়দের পাহাড়ি বসতি।

আপনাকে এনিমেটেড মুভির মতো গল্পে প্রবেশ করবেন। পাহাড়ি ট্রেইলে হাঁটতে হাঁটতে প্রকৃতির গন্ধ পাওয়া যায়, আর রাতে চাইলে স্থানীয় ঝুমঘরে থেকে উপভোগ করা যায় চাঁদের আলোতে পাহাড়ি রাত। খুব বেশি জনপ্রিয় না হাওয়ায় জনসমগম কম। যারা নিরিবিলি ঘুরতে পছন্দ করেন তারা একটু সুখ নিতে ঢু মেরে আসতে পারেন সুখিয়া ভ্যালি থেকে।

পাহাড়ি ট্রেইলে হাঁটা

সুখিয়া ভ্যালির চারপাশে আছে আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথ। সেই ট্রেইলে হাঁটতে হাঁটতে শোনা যায় ঝিরিঝিরি বাতাসের সুর, আর দূরের ঝরনার শাঁ-শাঁ কলতান। পথের দুধারে সবুজে মোড়া বন,  মাঝে মাঝে পাহাড়ি ফুলের গন্ধে মন ভরে যায়। প্রতিটি বাঁকে যেন অপেক্ষা করে নতুন এক দৃশ্য, নতুন এক প্রশান্তি।

ওয়াচটাওয়ারের দৃশ্য

ভ্যালির অন্যতম আকর্ষণ একটি ছোট ওয়াচটাওয়ার। সেখানে উঠে তাকালেই চোখজুড়ে দেখা যায় দূরে মাতামুহুরি নদীর আঁকাবাঁকা ধারা, পাহাড়ের কুয়াশায় ঢাকা চূড়া, আর গ্রাম-জীবনের নিরব ছন্দ। সকালের রোদ বা বিকেলের শেষ আলো যে সময়ই উঠুন, দৃশ্যটা যেন শিল্পীর হাতে আঁকা ছবির মতো সুন্দর।

নদীতে নৌভ্রমণ

মাতামুহুরি নদীর জল স্বচ্ছ ও শান্ত। এখানে নৌকা ভাড়া করে ঘুরে দেখা যায় আশপাশের পাহাড়ি অঞ্চলÑ সাদা পাহাড়, মিনঝিরিপাড়া বা ছোট ছোট টিলা গ্রামগুলো। নদীর বুকে ভেসে চলার সময় দুপাড়ের পাহাড় যেন হাত বাড়িয়ে আপনাকে ছুঁতে চায়। সূর্যাস্তের সময় এই নদীতে ভ্রমণ করলে মনে হবে, প্রকৃতি নিজেই এক কবিতা।

ক্যাম্পিং ও ঝুমঘরে থাকা

রাতের সুখিয়া ভ্যালি অন্য এক জগৎ। আকাশজোড়া তারা, ঝিঁঝি পোকার ডাক, আর পাহাড়ের নীরবতা, সব মিলিয়ে এক অপার্থিব পরিবেশ। সাহসী ভ্রমণপ্রেমীরা চাইলে নদীপাড়ে ক্যাম্পিং করতে পারেন অথবা স্থানীয় ঝুমঘরে থাকতে পারেন।

ভ্রমণের উপযুক্ত সময় নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি এই সময় পাহাড়ের রং সবচেয়ে উজ্জ্বল থাকে এবং আবহাওয়া পরিষ্কার। তবে পাহাড়ি রাস্তায় চলাচলে সতর্ক থাকা জরুরি।

কীভাবে যাবেন

ঢাকা থেকে প্রথমে বাসে চকরিয়া, তারপর লামা হয়ে সিএনজি বা জিপে সুখিয়া ভ্যালিতে যাওয়া যায়। চট্টগ্রাম থেকেও একই রুটে সহজে পৌঁছানো সম্ভব। তবে জায়গাটি এখনো বাণিজ্যিক হয়নি, তাই থাকার ব্যবস্থা সীমিত কয়েকটি স্থানীয় কটেজ বা ঘরেই থাকা যায়। যারা শহরের কোলাহল থেকে পালিয়ে একটুখানি শান্তি, প্রকৃতি আর নির্জনতা খুঁজছেন, তাদের জন্য সুখিয়া ভ্যালি হতে পারে এক অনন্য ঠিকানা বাংলাদেশের হৃদয়ে এক টুকরো সবুজ স্বপ্ন।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!