রাজপথ না ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ সিদ্ধান্তে অনড় থাকবেন তারা।
বুধবার (১৪ মে) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে সড়কে অবস্থান নেওয়ার ঘোষণা দেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
এ সময় তারা বলেন, ‘শিক্ষক-ছাত্রদের ওপর যেসব পুলিশ হামলা করেছে, তাদের বিচার করতে হবে।’
এর আগে বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে ‘লংমার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি নিয়ে যাত্রা শুরু করেন জবি শিক্ষার্থীরা।
দুপুর ১টার দিকে মৎস্য ভবন পেরিয়ে কাকরাইল মসজিদের কাছাকাছি পৌঁছালে মিছিলটি পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। এ সময় পুলিশ শিক্ষার্থীদের ওপর টিয়ারগ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকসহ অন্তত ৫০ জন আহত হন। তাদের মধ্যে ১০ জনকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশের বাধার মুখে বিকেল ৩টার পর কাকরাইল মসজিদ মোড়ে এসে উপস্থিত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিমসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক। এ সময় শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।
এ ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা যমুনা অভিমুখে কাকরাইল মসজিদের সামনের সড়কে বসে পড়েন। তারা সেখানে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদী স্লোগান দিতে থাকেন। দুপুর আড়াইটার পর বৃষ্টি শুরু হলে আন্দোলনকারীরা বৃষ্টি উপেক্ষা করে স্লোগান দিতে থাকেন।
শিক্ষক সমিতির সেক্রেটারি আহত ড. মো. রইছ উদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার বিচার ও দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা কাকরাইলে অবস্থান করব।
পুলিশি হামলার বিষয়ে জবি প্রক্টর অধ্যাপক ড. তাজাম্মুল হক বলেন, পুলিশ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। সহকারী প্রক্টরের ওপর আঘাত করেছে। শিক্ষার্থীদের ন্যায্য আন্দোলনে পুলিশ অমানবিক আচরণ করেছে। এর বিচার না হওয়া পর্যন্ত কেউ রাস্তা ছেড়ে যাবেন না।
এদিকে এই আন্দোলনে ২০ জন পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন রমনা জোনের ডিসি মাসুদুল আলম। তিনি বলেন, যমুনার সামনে যাওয়া বা সেখানে অবস্থান-সমাবেশ করার কোনো সুযোগ নেই।
জবির আন্দোলনকারীদের তিন দফা দাবি
১. আবাসনব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন বৃত্তি ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে কার্যকর করতে হবে।
২. জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাটছাঁট না করেই অনুমোদন করতে হবে।
৩. জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন করতে হবে।