সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করেই আবারও মাঠে নেমেছেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা। বেতন-গ্রেড ও পদোন্নতি সংক্রান্ত দাবিতে দীর্ঘ অপেক্ষার পর কোনো অগ্রগতি না দেখে তারা নতুন করে তালাবদ্ধ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।
মন্ত্রণালয়ের কর্মবিরতি প্রত্যাহারের নির্দেশনার মধ্যেই সংগঠনগুলোর এই পদক্ষেপ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। পাশাপাশি বিভিন্ন জেলার শিক্ষক নেতাদের শোকজ নোটিশকে ‘উদ্বেগজনক’ উল্লেখ করে এর প্রত্যাহারও দাবি করেছেন তারা।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) এক যৌথ বিজ্ঞপ্তিতে প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ এবং বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদ এই তথ্য জানায়।
এতে বলা হয়, অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে (১০ নভেম্বর ২০২৫) দেওয়া প্রতিশ্রুতির ২২ দিন পার হলেও তাদের তিন দফা দাবির কোনো দৃশ্যমান বাস্তবায়ন হয়নি। এই প্রেক্ষাপটে তারা বুধবার থেকে দেশজুড়ে সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ বা তালাবদ্ধ কর্মসূচি চালানোর ঘোষণা দেন।
ভার্চুয়াল মিটিংয়ে শিক্ষক সংগঠনগুলোর নেতারা জানান, ২০২৩ ও ২০২৫ ব্যাচের সহকারী শিক্ষকদের উদ্দেশে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারদের পাঠানো শোকজ নোটিশ তাদের মধ্যে চরম উদ্বেগ ও ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। সংগঠনগুলো দাবি জানায়, এসব শোকজ নোটিশ অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।
শিক্ষক সংগঠনগুলোর তিন দফা দাবি
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ ও ঐক্য পরিষদ তাদের তিন দফা মূল দাবি পুনর্ব্যক্ত করেছে—
- সহকারী শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের প্রক্রিয়ায় আপাতত ১১তম গ্রেডের প্রজ্ঞাপন জারি (অর্থ মন্ত্রণালয়ের ঘোষণার আলোকে)।
- ১০ ও ১৬ বছর চাকরি পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড পাওয়ার জটিলতা দূর করা।
- সহকারী শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি নিশ্চিত করা।
নেতারা বলেন, এ দাবিগুলো শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা। কিন্তু বাস্তবায়নে বিলম্ব হওয়ায় শিক্ষকদের মধ্যে তীব্র হতাশা তৈরি হয়েছে।
মন্ত্রণালয় কর্মবিরতি ও পরীক্ষা বর্জনের মতো কর্মসূচি অবিলম্বে বন্ধের নির্দেশ দিলেও শিক্ষক সংগঠনগুলো তাদের অবস্থান থেকে সরে আসার কোনো লক্ষণ দেখাচ্ছে না।
শিক্ষাব্যবস্থা যাতে বিঘ্নিত না হয় সে বিষয়ে সরকার সতর্কবার্তা দিলেও শিক্ষকরা বলছেন, দাবি পূরণের সুস্পষ্ট অগ্রগতি না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।



সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন