সারা দেশে ধীরে ধীরে নামতে শুরু করেছে তাপমাত্রা। দিনের তুলনায় রাতে শীত অনুভূত হচ্ছে আরও বেশি। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, শীতের এই ধারা আপাতত থামছে না—আগামী এক সপ্তাহ ধরে আরও তাপমাত্রা কমতে পারে, ফলে শীতের প্রভাব বাড়বে দেশের বহু অঞ্চলে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. তরিফুল নেওয়াজ কবির কালের কণ্ঠকে জানান, দেশের নানা এলাকায় রাতে তাপমাত্রা কমে যাওয়ার পাশাপাশি নদী-নদীর অববাহিকায় কুয়াশা পড়তে শুরু করেছে, যা শীতের আগমনী বার্তা দিচ্ছে।
তিনি জানান, সামনে এক সপ্তাহ তাপমাত্রা কমার প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে, বিশেষ করে উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে শীত আরও জোরালোভাবে অনুভূত হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগামী শুক্রবার বা শনিবারের মধ্যে দেশের কোনো কোনো এলাকায় তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার নিচে নেমে যেতে পারে, যা মৌসুমের প্রথম উল্লেখযোগ্য শৈত্যপ্রবাহের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
কোন তাপমাত্রায় কী ধরনের শৈত্যপ্রবাহ?
আবহাওয়া অধিদপ্তরের মানদণ্ড অনুযায়ী—
- ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি → মৃদু শৈত্যপ্রবাহ
- ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি → মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ
- ৪ থেকে ৬ ডিগ্রি → তীব্র শৈত্যপ্রবাহ
- ৪ ডিগ্রির নিচে → অতি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ
চলমান তাপমাত্রা কমার প্রবণতা দেখে আবহাওয়াবিদদের ধারণা, ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই উত্তরাঞ্চলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ দেখা দিতে পারে।
আগামী কয়েক দিনের পূর্বাভাস
আবহাওয়ার সংক্ষিপ্ত পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামীকাল বৃহস্পতিবার সারা দেশে অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশ থাকতে পারে, তবে আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকবে।
দিন ও রাতের তাপমাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তন নাও হতে পারে, তবে রাতের দিকে বাতাস ঠান্ডা লাগবে বেশি। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কিছু এলাকায় ভোরের দিকে হালকা কুয়াশা দেখা যেতে পারে।
আবহাওয়া অফিসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বুধবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল দিনাজপুরে ১১.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা এই মৌসুমে এখন পর্যন্ত অন্যতম কম তাপমাত্রা।
অন্যদিকে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে কক্সবাজারের টেকনাফে ৩১.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
রাজধানী ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৭.৭ ডিগ্রি, আর সর্বনিম্ন ১৭.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস—দিনের বেলায় তুলনামূলক উষ্ণ থাকলেও সকালে শীত অনুভূত হচ্ছে বেশি।
শীত বাড়ার প্রভাব
আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডিসেম্বরের শুরুতেই তাপমাত্রা কমার এই প্রবণতা জানাচ্ছে আসন্ন শীত এবার দীর্ঘ ও তুলনামূলক কঠোর হতে পারে। কৃষি, পরিবহন, নৌচলাচল এবং দৈনন্দিন জীবনে এর প্রভাব আরও বাড়বে। কুয়াশা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে রাস্তাঘাটে দৃশ্যমানতা কমে যাওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে।
সব মিলিয়ে, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শীতের উপস্থিতি এখন স্পষ্ট হয়ে উঠছে, আর সামনে কয়েক দিন এ শীত আরও জোরদার হতে পারে বলেই জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।




সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন