বৃহস্পতিবার, ১৫ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


নোবিপ্রবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: মে ১৪, ২০২৫, ১১:৫০ পিএম

ছাত্রলীগের ‘প্রশংসাকারী’ অধ্যাপক নোবিপ্রবির একাডেমিক কাউন্সিলে

নোবিপ্রবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: মে ১৪, ২০২৫, ১১:৫০ পিএম

ছাত্রলীগের ‘প্রশংসাকারী’ অধ্যাপক নোবিপ্রবির একাডেমিক কাউন্সিলে

অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইউসুফ মিয়া। ছবি-সংগৃহীত

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) অ্যাপ্লাইড কেমিস্ট্রি অ্যান্ড কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের (গ্রেড-১) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইউসুফ মিয়াকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

তবে তার বিরুদ্ধে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সমর্থক, বিতর্কিত মদদদাতা ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের রাজনৈতিক প্রোপাগান্ডার প্রকাশ্য প্রশংসাকারী বলে অভিযোগ রয়েছে।

এসব অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও অধ্যাপককে এমন গুরুত্বপূর্ণ একাডেমিক কাঠামোর অংশ হিসেবে মনোনয়ন দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে নোবিপ্রবি পরিবার।

সম্প্রতি নোবিপ্রবি ছাত্রলীগের সেক্রেটারি জাহিদ হাসান শুভ তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি ভিডিও ব্লগ প্রকাশ করেন। ‘বিশ্ব মোড়লদের কথায় যুদ্ধের প্রক্সি দেশ হতে চলেছে বাংলাদেশ’ শিরোনামের ওই ভিডিওতে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ‘আমেরিকান ডিপ স্টেটের পুতুল’ আখ্যা দিয়ে তাকে ঘিরে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তোলা হয়।

ভিডিওতে দাবি করা হয়, শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে ইউনূসকে বসিয়ে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব নিলামে তোলা হয়েছে। দেশটি পরাশক্তিগুলোর প্রক্সি যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হতে চলেছে।

ভিডিওটির বক্তব্য রাজনৈতিকভাবে উসকানিমূলক, মিথ্যাচারপূর্ণ এবং সুস্পষ্ট অপপ্রচারের শামিল হলেও অধ্যাপক ড. ইউসুফ মিয়া ওই ভিডিওর নিচে মন্তব্য করে বলেন, ‘এত সুন্দর করে অল্পে বোঝালে জাহিদ। অভাগা বাঙালিদের বুঝ দাও, হে দয়াময় প্রভু।’

এ মন্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর শিক্ষকসমাজ ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।

অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, একজন দায়িত্বশীল অধ্যাপক কীভাবে এমন একটি ভিডিওতে প্রকাশ্যে প্রশংসা করেন, যেখানে রাজনৈতিক বিদ্বেষ, আন্তর্জাতিক অপপ্রচার ও দেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে ভয়াবহ মিথ্যাচার করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘একজন শিক্ষক যখন নিষিদ্ধ রাজনৈতিক সংগঠনের উসকানিমূলক কন্টেন্টকে সমর্থন করেন, তখন তার অবস্থান প্রশ্নবিদ্ধ হয়। এটি শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক পরিবেশ নয়, বরং পুরো শিক্ষাব্যবস্থার বিশ্বাসযোগ্যতার জন্যই হুমকি।’

অধ্যাপক ইউসুফ মিয়া অতীতেও আওয়ামী তথ্যপ্রযুক্তি লীগের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন এবং ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বিভিন্ন কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতে নিয়মিত অংশগ্রহণ করতেন।

এমনকি সোশ্যাল মিডিয়াতেও তিনি আওয়ামী লীগের পক্ষে সরাসরি অবস্থান নিয়ে মন্তব্য করে আসছেন বলে জানা গেছে।

এমন প্রেক্ষাপটে তার মতো একজন রাজনৈতিকভাবে জড়িত ও বিতর্কিত ব্যক্তিকে একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য করা কতটা যৌক্তিক—তা নিয়ে ব্যাপক প্রশ্ন উঠেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ তামজিদ হোসেইন চৌধুরী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী উপাচার্য ৭ জন জ্যেষ্ঠ অধ্যাপককে একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে মনোনীত করতে পারেন। সেই অনুযায়ী অধ্যাপক ইউসুফ মিয়াকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।’

তবে নোবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, ‘জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে তাকে মনোনীত করা হয়েছে। তবে পরবর্তী সময়ে তার বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ পাওয়া গেছে, যেগুলো ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটিতে জমা পড়েছে। যদি অভিযোগগুলো সত্য প্রমাণিত হয়, তাহলে তাকে একাডেমিক কাউন্সিল থেকে বাদ দেওয়া হবে।’

এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে প্রশ্ন- মনোনয়নের আগে এসব যাচাই-বাছাই হলো না কেন?

বিশ্ববিদ্যালয়েরে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, একজন শিক্ষক যখন একটি নিষিদ্ধ সংগঠনের নেতা কর্তৃক প্রকাশিত উসকানিমূলক ভিডিওতে উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন এবং সরাসরি রাজনৈতিক প্রোপাগাণ্ডায় অংশ নেন, তখন তার প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এমন অন্ধ আস্থা সবাইকে হতাশ করে।

শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, ‘ফ্যাসিস্টদের সহযোগী এবং রাষ্ট্রবিরোধী বক্তব্যকে যারা উৎসাহ দেয়, তাদের হাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা তুলে দেওয়া শুধু দায়িত্বহীনতা নয়, গণবিরোধী অবস্থানও।’

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!