ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন, ২০২৫

ছাত্রদলের প্রস্তাবনাগুলোকেই প্রাধান্য দিয়েছে ঢাবি প্রশাসন: ফরহাদ

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ১৮, ২০২৫, ১১:০৫ পিএম
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সভাপতি এসএম ফরহাদ। ছবি- সংগৃহীত

ডাকসু গঠনতন্ত্র সংস্কারে ছাত্রদলের প্রস্তাবনাগুলোকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি এস এম ফরহাদ।

বুধবার (১৮ জুন) রাত ৯টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে এসব কথা জানান তিনি।

পোস্টে ফরহাদ লেখেন, ‘শিক্ষার্থীদের বহুদিনের দাবি ছিল সময়ের প্রয়োজন অনুসারে নারী ও সমতা বিষয়ক সম্পাদক এবং ধর্ম ও সম্প্রীতি বিষয়ক সম্পাদক পদ অন্তর্ভুক্ত করা। ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে আমরা এ ধরনের যৌক্তিক প্রস্তাব উত্থাপন করলেও প্রশাসন গুরুত্ব দেয়নি। অথচ ছাত্রদলের প্রস্তাব অনুযায়ী একাধিক নতুন সম্পাদকীয় পদ সৃষ্টি করা হয়েছে।’

তিনি আরও লেখেন, ডাকসুর কার্যক্রম নিয়মিত করতে সংসদের মেয়াদ শেষে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নতুন নির্বাচন আয়োজনের জন্য একটি সুস্পষ্ট নীতিমালা প্রস্তাব করেছিল শিবির, যা অত্যন্ত জরুরি ছিল। কিন্তু প্রশাসন তা বিবেচনায় নেয়নি।’

শিবিরের এই নেতা বলেন, পাঠাগার, পাঠকক্ষ ও কমনরুম বিষয়ক সম্পাদক এবং ক্যাফেটেরিয়া ও ক্যান্টিন বিষয়ক সম্পাদক এই দুটি পদ পৃথকভাবে সৃষ্টির প্রয়োজন ছিল। কারণ, শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য,সুবিধা, খাবারের পুষ্টিমান নিশ্চিতকরণ এবং গবেষণাবান্ধব পরিবেশ তৈরির বিষয়গুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এবারও এই দুই গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র একই সম্পাদকের আওতায় রাখা হয়েছে।

ফরহাদ লিখেছেন, ‘শিক্ষার্থীরা চাইছে ছাত্ররাজনীতিতে গুণগত সংস্কার। সে লক্ষ্যে ডাকসু নির্বাচনে সর্বোচ্চ বয়সসীমা নির্ধারণ একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হতে পারত। এতে বছরের পর বছর ইচ্ছাকৃতভাবে পড়াশোনা পিছিয়ে রাখা এবং অনাকাঙ্ক্ষিত নেতার উদ্ভব ঠেকানো যেত।’

তিনি বলেন, ‘প্রশাসন নির্দিষ্ট একটি ছাত্রসংগঠনকে সুবিধা দিতে গিয়ে বয়সসীমার বিধিনিষেধও বাতিল করেছে। এর ফলে শিক্ষার মূল স্রোত থেকে বিচ্ছিন্ন নেতাদের দৌরাত্ম্য এবং অনাকাঙ্ক্ষিত রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়বে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।’

এছাড়া, নির্বাচন কমিশন গঠনেও পক্ষপাতের অভিযোগ তুলেছেন ফরহাদ। তাঁর ভাষায়, ‘নির্বাচন কমিশনে নির্দিষ্ট একটি শিক্ষক সংগঠনের সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের আধিক্য দেখা যাচ্ছে, যা সাধারণ শিক্ষার্থীদের উদ্বিগ্ন করছে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘কমিশন গঠনের ঘোষণা হলেও দীর্ঘদিনেও কোনো রোডম্যাপ বা দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই, যা অত্যন্ত হতাশাজনক।’

পোস্টের শেষ অংশে ফরহাদ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় যখন দীর্ঘ অচলায়তন ভাঙার উদ্যোগ নিয়েছে, তখন আমরা আশাবাদী প্রয়োজনীয় সংস্কার নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমেও সম্ভব হবে। তবে প্রশাসনের পক্ষপাতমূলক আচরণ একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে নতুন করে শঙ্কার জন্ম দিচ্ছে। এ অবস্থায় প্রশাসন আদৌ নিরপেক্ষ আছে কি না সে প্রশ্ন শিক্ষার্থীদের মধ্যে জোরালোভাবে উঠছে।’