গাজীপুরে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে হত্যা এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি সাংবাদিক সমিতি (ডিআইইউসাস)। এতে সাগর-রুনির মতো দীর্ঘসূত্রতায় যেন না পড়ে তুহিন হত্যার বিচার বলে আহ্বান জানান বক্তারা।
বুধবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে ডিআইইউসাসের আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়টির মূল ফটকের সামনে এই মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন: ডিআইইউসাসের সভাপতি ও এশিয়ান টেলিভিশনের প্রতিনিধি কালাম মুহাম্মদ, সহসভাপতি ও দৈনিক বাংলাদেশের খবরের প্রতিনিধি তানজিল কাজী, সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক খোলা কাগজ/সময়ের কণ্ঠস্বরের প্রতিনিধি মো. রাকিবুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক ও দৈনিক আমার সংবাদের প্রতিনিধি বায়েজিদ হুসাইন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের প্রতিনিধি নুর ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ ও দৈনিক প্রতিদিনের কাগজের প্রতিনিধি মো. আল শাহারিয়া সুইট, কার্যনির্বাহী সদস্য ও সময় জার্নালের প্রতিনিধি আবুল খায়েরসহ আরও অনেকে।
ডিআইইউসাসের সভাপতি কালাম মুহাম্মদ বলেন, ‘আমাদের দেশে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা আজ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। গাজীপুরে তুহিনকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলার কারণে হত্যা করা হয়েছে। এটি রাষ্ট্রের ব্যর্থতা। প্রশাসন সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছে না। অপরাধীরা গ্রেপ্তারের পর আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে, যা প্রশাসনের অক্ষমতার পরিচয়।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দেখেছি, সাংবাদিক সাগর-রুনি হত্যার প্রতিবেদন ১০০ বারেরও বেশি পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে, অথচ এখনও বিচার হয়নি। এদিকে গাজীপুরে তুহিন হত্যা মামলায় ইতিমধ্যেই ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে শাস্তির আওতায় আনতে হবে, যাতে এটি সাগর-রুনি হত্যার মতো দীর্ঘসূত্রতায় না পড়ে।’
সাধারণ সম্পাদক মো. রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে, আজকে সাংবাদিকদের রাজপথে দাঁড়াতে হচ্ছে তাদের নিরাপত্তা নিয়ে। সাংবাদিকদের বলা হয় সমাজের দর্পণ। অথচ আপনারা দেখেছেন, সাগর-রুনি হত্যা এবং সাংবাদিক তুহিনসহ অন্যান্য সাংবাদিকরা এখন পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে মামলা, হামলা ও হত্যার শিকার হচ্ছে। আমরা এখন পর্যন্ত কোনো দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা দেখিনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘সাংবাদিকরা যখন সত্য ঘটনা তুলে ধরবে, তখনই তাদেরকে পেটানো হবে। তাহলে কীভাবে একটি পরিবার থেকে সাংবাদিক তৈরি হবে? আবার সাংবাদিকদের জন্য কোনো সুরক্ষা আইন নেই। এই মানববন্ধন থেকে সাংবাদিকদের সুরক্ষা আইন প্রণয়ন এবং সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জোর আহ্বান জানাচ্ছি।’
কোষাধ্যক্ষ আল শাহারিয়া সুইট বলেন, ‘ঘটনার সময় তুহিন ভাই পেশাগত দায়িত্ব পালন করছিলেন। দুর্বৃত্তরা তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে। জননিরাপত্তার স্বার্থে অপরাধীদের শাস্তি দ্রুত নিশ্চিত করতে হবে।’
গত ৭ আগস্ট রাতে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় দুর্বৃত্তদের হামলায় নিহত হন দৈনিক প্রতিদিনের কাগজের স্টাফ রিপোর্টার আসাদুজ্জামান তুহিন।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন