রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২৫, ১১:০৩ পিএম

জাকসুতেও শিবিরের জয়জয়কার, ছাত্রদলের ভরাডুবি

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২৫, ১১:০৩ পিএম

ছবি- রূপালী বাংলাদেশ গ্রাফিক্স

ছবি- রূপালী বাংলাদেশ গ্রাফিক্স

ভোট গ্রহণের দুদিন পর ঘোষণা করা হয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের ফলাফল। শুরুতে হল সংসদের এবং পরে কেন্দ্রীয় সংসদের ফল ঘোষণা করা হয়। তবে ডাকসুর মতো জাকসু নির্বাচনেও জয়জয়কার অবস্থা ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল সমন্বিত শিক্ষার্থী জোটের। আর ভরাডুবি হয়েছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের।

শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেল সোয়া পাঁচটার পর জাকসুর চূড়ান্ত ফল ঘোষণা শুরু করেন নির্বাচন কমিশন। ফল ঘোষণা অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন নির্বাচন কমিশনের সদস্য সচিব ও প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম। একে একে ২১টি হল সংসদের ফল ঘোষণা করেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তারা।

জাকসু্র সম্পাদকীয় ১৯ পদের মধ্যে ১৫টিতেই জয় পেয়েছেন প্যানেলটির প্রার্থীরা। কার্যকরী সদস্যের ৬ পদের ৫টিতেই জয় পেয়েছে শিবির প্যানেল। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্যানেল থেকে সহ-সভাপতি (ভিপি) পদ এবং দুটি করে পদে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস) সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন।

এদিকে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্যানেলের ভিপি প্রার্থী শেখ সাদী হাসান পেয়েছেন ৬৪৮ ভোট, যিনি সম্মিলিতভাবে চতুর্থ স্থান লাভ করেছেন। এই প্যানেলের জিএস প্রার্থী তানজিলা হোসাইন বৈশাখী পেয়েছেন ৯৪১ ভোট, যিনি সম্মিলিতভাবে তৃতীয় স্থান লাভ করেছেন।

সম্পাদকীয় ১৫ পদের শিবির প্যানেল থেকে জয়ী হয়েছেন যারা-

সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ইংরেজি বিভাগের (৪৮তম ব্যাচ) মাস্টার্স শিক্ষার্থী মাজহারুল ইসলাম, সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের (৪৯ ব্যাচ) মাস্টার্স শিক্ষার্থী ফেরদৌস আল হাসান এবং এজিএস (ছাত্রী) পদে দর্শন বিভাগের (৪৮ ব্যাচ) মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আয়েশা সিদ্দিকা মেঘলা মনোনীত হয়েছেন। 

অন্য পদগুলোর মধ্যে শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক পদে ফার্মেসি বিভাগের আবু উবায়দা উসামা, পরিবেশ ও প্রকৃতি সংরক্ষণ সম্পাদক পদে গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী সাফায়েত মীর, সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে ইংরেজি বিভাগের জাহিদুল ইসলাম বাপ্পি, সহ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক হিসেবে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের রায়হান উদ্দিন, নাট্য সম্পাদক হিসেবে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের রুহুল ইসলাম, সহ-ক্রীড়া (ছাত্র) পদে মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের মাহাদী হাসান, সহ-ক্রীড়া (ছাত্রী) পদে গণিত বিভাগের ফারহানা আক্তার লুবনা।

আইটি ও গ্রন্থাগার পদে ফার্মেসি বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের রাশেদুল ইমন লিখন, সহ-সমাজসেবা ও মানবসেবা উন্নয়ন পদে মাইক্রোবায়োলজি (ছাত্র) তৌহিদ ইসলাম, সহ-সমাজসেবা ও মানবসেবা উন্নয়ন (ছাত্রী) পদে ফার্মেসি বিভাগের নিগার সুলতানা, স্বাস্থ্য ও খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ক সম্পাদক পদে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের হুসনী মোবারক, পরিবহন ও যোগাযোগ সম্পাদক পদে পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের তানভীর রহমান মনোনীত হয়েছেন।

এছাড়াও কার্যকরী সদস্য পদে রয়েছেন- ফাবলিহা জাহান, নাবিলা বিনতে হারুন, নুসরাত জাহান, হাফেজ তরিকুল ইসলাম ও আবু তালহা।

যে পদগুলোতে অন্যরা জিতেছেন-

ভিপি পদে স্বতন্ত্র প্যানেলের আব্দুর রশিদ জিতু, সাংস্কৃতিক সম্পাদক শেখ জিসান আহমেদ (স্বতন্ত্র), ক্রীড়া সম্পাদক মাহমুদুল হাসান কিরণ (স্বতন্ত্র), সমাজসেবা ও মানবসেবা উন্নয়ন সম্পাদক আহসান লাবিব (বাগছাস), কার্যকরী সদস্য পদে মোহাম্মদ আলী চিশতী (বাগছাস)।

দীর্ঘ তিন দশক পর অনুষ্ঠিত জাকসু নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শুরুর পর কারচুপির অভিযোগ তুলে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলসহ পাঁচটি প্যানেল নির্বাচন বর্জন করে। বর্জনকারীদের মধ্যে ছিল প্রগতিশীল শিক্ষার্থীদের ‘সম্প্রীতির ঐক্য’, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ও ছাত্র ফ্রন্টের ‘সংশপ্তক পর্ষদ’, এবং স্বতন্ত্রদের ‘অঙ্গীকার পরিষদ’। দীর্ঘ ৪৮ ঘণ্টা অপেক্ষার পর ফলাফল ঘোষণা করা হয়। যদিও কিছু অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগ ওঠে, তবু অনেকে মনে করছেন নির্বাচন মোটামুটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন হয়েছে।

জাকসু নির্বাচনে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে ইসলামী ছাত্রশিবির। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের পর এবার জাকসুতেও সংগঠনটির জয়জয়কার দেখা গেল। দীর্ঘদিন যেখানে ছাত্রশিবির কার্যত ‘অলিখিত নিষিদ্ধ’ ছিল, সেখানে তাদের এই ফলাফলকে যুগান্তকারী অর্জন হিসেবে দেখেছেন বিশ্লেষকেরা। তারা মনে করছেন, দীর্ঘ পরিকল্পনা, শক্তিশালী নেটওয়ার্ক, আবাসিক ও অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ, ছাত্রী সংগঠনের সক্রিয় ভূমিকা এবং ঐক্যবদ্ধ রাজনীতিই শিবিরকে এই অভাবনীয় সাফল্য এনে দিয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও জাবির সাবেক শিক্ষার্থী এস এম তৌফিকুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগের পতনের পর আন্ডারগ্রাউন্ড থেকে প্রকাশ্যে আসা, লিবারেল অ্যাপ্রোচ গ্রহণ, ব্যক্তিগত ইমেজ ও সংকটকালে পাশে থাকার কৌশলই শিবিরকে জয়ী করেছে। অন্যদিকে, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সাফিউল হাসান চিশতীর মতে, জাবিতে শিবির সবসময়ই ছিল; শুধু আড়ালে রাজনীতি করেছে। আশপাশের গ্রামে তাদের শক্ত ঘাঁটি রয়েছে, যা পতনের পর আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে।

Link copied!