সোমবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: আগস্ট ২৫, ২০২৫, ০৮:০৯ পিএম

বৃত্তের কোণ ৩৬০ ডিগ্রি কেন

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: আগস্ট ২৫, ২০২৫, ০৮:০৯ পিএম

বৃত্ত। ছবি- সংগৃহীত

বৃত্ত। ছবি- সংগৃহীত

আমরা সবাই জানি, একটি বৃত্তের কোণের পরিমাণ ৩৬০ ডিগ্রি। কিন্তু প্রশ্ন জাগে, কেন ৩৬০? ১০০ বা ৫০০ ডিগ্রি না হয়ে এই নির্দিষ্ট সংখ্যাটিই কেন বেছে নেওয়া হলো? এর পেছনে রয়েছে ইতিহাস, গণিত এবং ব্যবহারিক নানা যুক্তি, যদিও এর কোনো চূড়ান্ত বা একক ব্যাখ্যা নেই। তবে কয়েকটি প্রচলিত হাইপোথিসিস বিষয়টিকে বুঝতে সাহায্য করে।

প্রাচীন ব্যাবিলনীয়রা ব্যবহার করত ৬০ ভিত্তিক সংখ্যা পদ্ধতি। আমাদের বর্তমান দশমিক পদ্ধতির মতো নয়, তারা ৬০ সংখ্যাটিকে ভিত্তি হিসেবে নিত। এই পদ্ধতির ওপর ভিত্তি করেই আজকের ঘণ্টা, মিনিট এবং কোণের একক নির্ধারণ করা হয়েছে। ৬০ একটি উচ্চতর যৌগিক সংখ্যা, অর্থাৎ একে ১ থেকে শুরু করে অনেকগুলো সংখ্যায় ভাগ করা যায়। যেমন ৬০–কে ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ১০, ১২, ১৫, ২০, ৩০ দিয়ে ভাগ করা যায়, ফলে গণনায় এটি ছিল অত্যন্ত সুবিধাজনক।

৩৬০ সংখ্যাটিকেও একই কারণে বেছে নেওয়া হয়। এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যৌগিক সংখ্যা- যাকে ২৪টি পূর্ণসংখ্যা দিয়ে ভাগ করা যায়। এর ফলে বৃত্তকে বিভিন্ন সংখ্যক সমান ভাগে ভাগ করা খুব সহজ হয়ে পড়ে। যেমন, ৬ ভাগে ভাগ করলে ৬০ ডিগ্রি, ৮ ভাগে করলে ৪৫ ডিগ্রি, ৪ ভাগে করলে ৯০ ডিগ্রি- সবই সহজে পূর্ণ সংখ্যায় আসে। এমনকি ১২, ১৫ বা ২০ ভাগেও সমানভাবে ভাগ করা যায়। প্রাচীন কালে ভগ্নাংশ নিয়ে কাজ করা কঠিন ছিল, তাই পূর্ণ সংখ্যা নির্ভর মাপগুলো ছিল ব্যবহারিকভাবে উপযোগী।

একটি ঐতিহাসিক ব্যাখ্যায় বলা হয়, সূর্য এক বছরে আকাশে ঘুরে আগের অবস্থানে ফিরতে সময় নেয় প্রায় ৩৬৫ দিন। কিন্তু প্রাচীন জ্যোতির্বিদদের ধারণা ছিল এটি ৩৬০ দিন। তারা সূর্যের প্রতিদিনের গতি পর্যবেক্ষণ করে ধরে নেন যে সূর্য প্রতিদিন এক ডিগ্রি করে সরছে, ফলে বৃত্তে ৩৬০টি সমান ভাগ হওয়া উচিত। এ থেকেই বৃত্তের মোট কোণ ৩৬০ ডিগ্রি ধরা হয়।

আরেকটি ব্যাখ্যা হলো জ্যামিতিক। যদি বৃত্তের ব্যাসার্ধের সমান বাহু দিয়ে সমবাহু ত্রিভুজ আঁকা হয়, তাহলে ছয়টি সমবাহু ত্রিভুজ মিলে একটি ষড়ভুজ গঠন করে এবং কেন্দ্রে ৬০ × ৬ = ৩৬০ ডিগ্রি কোণ উৎপন্ন হয়। প্রাচীন ফলকেও এমন চিত্র পাওয়া গেছে, যা এই ধারণাকে সমর্থন করে।

আরও একটি মজার বিষয় হলো হাতের আঙুল দিয়ে গণনা পদ্ধতি- প্রতিটি আঙুলে তিনটি করে গিঁট ধরে ডান হাতে ১২ পর্যন্ত গোনা হতো এবং বাম হাতে পাঁচবার গুনলে হতো ৬০ পর্যন্ত। এভাবেই ৬০ এবং ৩৬০ সংখ্যার গুরুত্ব বেড়েছে।

গ্রিক গণিতবিদ টলেমিও ৩৬০ ডিগ্রি কোণের ব্যবহার জনপ্রিয় করে তোলেন। আজকের দিনে যদিও বিজ্ঞান ও প্রকৌশলে রেডিয়ান বা গ্রেডও ব্যবহৃত হয়, তবু ৩৬০ ডিগ্রি এককটি সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয়। এর পেছনে মূল কারণ হলো- এর সহজ বিভাজনযোগ্যতা এবং প্রাচীন ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট। এই সংখ্যা শুধু গণিতে নয়, বরং জ্যোতির্বিদ্যা, স্থাপত্যবিদ্যা, নৌবিজ্ঞান- সব ক্ষেত্রেই সহজবোধ্য এবং কার্যকর।

Link copied!