বৃহস্পতিবার, ০১ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বিনোদন প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২২, ২০২৪, ১২:২৬ এএম

ঢাকা মাতালেন রাহাত ফতেহ আলী খান

মঞ্চ থেকে হাসিনার ফাঁসি দাবি তুললেন জুলাইয়ে আহতরা

বিনোদন প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২২, ২০২৪, ১২:২৬ এএম

মঞ্চ থেকে হাসিনার ফাঁসি দাবি তুললেন জুলাইয়ে আহতরা

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

সুফি সংগীতে ফাতেহ আলী খান পরিবার গত কয়েক দশক যাবত গোটা উপমহাদেশের সুরপিয়াসিদের হৃদয় নিয়ন্ত্রণ করছেন নিজেদের সুরের লহমায়। আর সেই পরিবারের সদস্য রাহাত ফাতেহ আলী খান এদেশে আসবেন আর গাইবেন সেটা অবশ্যই বাংলাদেশি সংগীত সমঝদারদের জন্য নিঃসন্দেহে আরাধ্য। সুর যখন হৃদয় ছুঁয়ে যায়, ধ্যানমগ্ন করে, হৃদয়ের গহীনে ভালোবাসার অনুরণন তৈরি করে তখন সেই সুরের কারিগর অগণিত ভক্ত ও শ্রোতাদের কাছে আরাধ্যের বিষয়ই হয়ে থাকে। লাল সবুজের ভূখন্ডের সুজলা সুফলা বাংলাদেশেও পূর্ব পুরুষদের ধারাবাহিকতায় নিজেকে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন রাহাত ফতেহ আলী খান।

এদেশীয় শ্রোতাদের বুকের জমিনে নিজের মজবুত ভিত্তি তৈরি করে এদেশীয় শ্রোতাদের হৃদয়পটকে রীতিমতো শাসন ও নিয়ন্ত্রণ করছেন রাহাত ফাতেহ আলী খান। আর সে কারণে গত কয়েকদিন যাবত এদেশের সুরের কাঙ্গালরা রাহাত ফাতেহ আলী খান জ্বরে ভুগছিলেন। আর শনিবার (২১ ডিসেম্বর) রাতে রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামে সুরের সমুদ্রে স্নাত হয়ে সেই জ্বর নেমে গেলো। উপমহাদেশের সংগীত কিংবদন্তি সুফি গানের দিকপাল নুসরাত ফাতেহ আলী খানের ভাতিজা রাহাত ফাতেহ আলী খানের সুরের মূর্চ্ছনায় নিজেদের বিলিয়ে একাকার করে দিয়ে সংগীত ও শিল্পীর প্রতি ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটালেন বাংলাদেশের সুরের তৃষ্ণার্তরা। প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে  রাহাত ফতেহ আলী খান এলেন, গাইলেন, সুরের বৃষ্টিতে অগণিত শ্রোতাদের ভিজিয়ে দর্শক শ্রোতাদের মানসপটে তাল, লয় ও মেলোডির ঢেউ তুলে দিয়ে পৌষের কনকনে শীতের রাতকেও উষ্ণতার চাদরে ঢেকে দিলেন। 
জুলাই অভ্যুত্থানে এক সাগর রক্তের বিনিময়ে পাওয়া নতুন বাংলাদেশের জন্য এক সমুদ্র সুরের ঢেউ তুলে দিয়ে ফের নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করলেন রাহাত ফাতেহ আলী খান।

ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতন ঘটাতে গিয়ে জুলাই অভ্যুত্থানে শহিদদের স্মরণে গঠিত জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের তহবিল গঠনে ‍‍`ইকোস অব রেভল্যুশন‍‍` শিরোনামের এই কনসার্টের আয়োজন করে স্পিরিটস অব জুলাই প্ল্যাটফর্ম।

গান দিয়েই সুরের ঝাঁপি খোলেন সুরের যাদুকর রাহাত ফাতেহ আলী খান। এরপর পর্যায়ক্রমে পরিবেশন করেন ভক্ত ও শ্রোতাদের মুখে মুখে ফেরা নিজের জনপ্রিয় সব গান। আর জনপ্রিয় সেসব গানের মধ্যে ‍‍`মেরে রিশকে কামার, আফরি, ওরে পিয়ারে, তুম জো আয়ে, দিল লাগি, আস পাস খুদা, তেরে মাস্ত মাস্ত দোনে, সানু ইক পাল চ্যায় না, দিল দিয়া গাল্লাসহ নিজের সব জনপ্রিয় গানের সুষমায় ধ্রুপদী করে তোলেন পৌষের রাতকে।

যাদুকরি কণ্ঠের অনন্য গায়কীতে কানায় কানায় পরিপূর্ণ রাতের আর্মি স্টেডিয়ামে মায়ার জাল ছড়িয়ে দেন ২০০৩ সালে ‍‍`পাপ‍‍` সিনেমার ‍‍`মন কি লাগান‍‍` গানের  মাধ্যমে বলিউডে প্লেব্যাকে নিজের অভিষেক ঘটানো এই গানওয়ালা। দর্শক শ্রোতাদের ‍‍`ওয়ান মোর ওয়ান মোর‍‍` ধ্বনিতে গানের আবেদন আর অনুরোধে কণ্ঠ থেকে সুর ছড়াতে কার্পণ্য করেননি পাকিস্তানের পাঞ্জাবে জন্ম নেওয়া এই সুফি শিল্পী। কাওয়ালি ও বলিউড সিনেমার গানের সংমিশ্রণে ভিন্ন এক আবহ তৈরি করেন শীতের আর্মি স্টেডিয়ামে। শিল্পী যেমন হৃদয় উজাড় করে কণ্ঠ থেকে সুরের সুধা ছড়িয়েছেন ঠিক তেমনই দর্শক শ্রোতারাও মুহুর্মুহু করতালিতে স্টেডিয়াম প্রকম্পিত করে শিল্পীকে অভিনন্দনে সিক্ত করেছেন।

২০১৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথম নন-ফিল্ম মিউজিক ভিডিও ‍‍`ব্যাক টু লাভ‍‍` অ্যালবামের ‍‍`জরুরি থা‍‍` গানটি এক বিলিয়ন ভিউ অতিক্রম করার পর শিল্পীকে দশ বছর আগে অনন্য উচ্চতায় উন্নীত করার পর এক দশকেও সেই গানটির আবেদন একটুও কমেনি। জরুরি থা গানটির প্রথম লাইন শেষ হওয়ার আগেই এদেশীয় ভক্তদের উল্লাস আর উচ্ছ্বাসের বাঁধভাঙ্গা জোয়ারে নাচের উন্মাদনায় আবৃত হয়ে পড়ে গোটা আর্মি স্টেডিয়াম।

নন্দিত রাহাত ফাতেহ আলী খানের আগে সিলসিলা ব্যান্ডের কাওয়ালি দিয়ে শুরু হয় কনসার্ট। তারপর একে একে গান পরিবেশন করেন র‍্যাপার হান্নান, র‍্যাপার সেজান, আফটারম্যাথ, চিরকুট, আর্টসেল ইত্যাদি ব্যান্ড দল।

এর আগে সংক্ষিপ্ত আলোচনায় বক্তৃতা করেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম, জুলাই অভ্যুত্থানে হাত হারানো গাজী আতিক, শহীদ মীর মুগ্ধের ভাই মীর স্নিগ্ধ ও শহীদ আহনাফ ফাইয়াজের মা
এ সময় সারজিস আলম বলেন, খুনি হাসিনার  গুলিতে আমাদের ভাইয়েরা নিজেদের বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে নতুন স্বাধীনতা এনে দিয়ে আমাদেরকে ফ্যাসিবাদের কবল থেকে রক্ষা করেছেন। যার কারণে তাদের কাছে আমাদের অনেক ঋন।

মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসার লক্ষ্যেই এই ফাউন্ডেশন। এই ফাউন্ডেশন কখনো নগদ টাকা গ্রহণ করে না। বিকাশ, রকেট, নগদ ও ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ফাউন্ডেশনের তহবিল গঠন করা হয়ে থাকে। আমরা গণ অভ্যুত্থানকে যেভাবে সফল করেছি সংস্কার প্রক্রিয়াকেও সেভাবে সফল করব।

হাত হারানো গাজী আতিকুল ইসলাম বলেন,  লুটপাট গুম, হত্যা, চাঁদাবাজি কি করেননি  ফ্যাসিস্ট খুনি হাসিনা। ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য স্বৈরাচার হাসিনা সবকিছু করেছেন।  পীলখানায় আমাদের ৫৭ জন গণহত্যা, শাপলা চত্বরে হাজার হাজার আলেমদেরকে হত্যা করে শেখ হাসিনা গোটা দেশে ফ্যাসিবাদী শাসন কায়েম করেছেন। যেকোনো মূল্যে এদেশে খুনি হাসিনার বিচার করা হবে।

খোকন চন্দ্র বর্মন বলেন, আরেক দেশে বসে থেকে খুনি হাসিনা দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে মানুষ হত্যার বিচার করতে হবে।

শহীদ আহনাফ ফাইয়াজের মা বর্তমান সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়ে বলেন, আমাদের আশেপাশে স্বৈরাচারের যেসব দোসররা ঘুরে বেড়াচ্ছে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে। খুনি হাসিনাকে ফাঁসি না দিলে আমার আহনাফ ফাইয়াজের মত কোনো শহিদের আত্মা শান্তি পাবে না। আমরা খুনি হাসিনার ফাঁসি চাই। 
আবু সাঈদ, মুগ্ধ শেষ হয়নি যুদ্ধ ও ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই খুনি হাসিনার ফাঁসি চাই এমন স্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে উঠে গোটা আর্মি স্টেডিয়াম।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!