সোশ্যাল মিডিয়ায় হঠাৎ করে নিয়মিত মাথার উপর লাল দাগ দেয়া ছবি দেখছেন? কেউ লিখছেন, ‘একই সঙ্গে চার জন!’ আবার কারও বিড়ালের মাথার ওপরও লাল দাগ! ভাবছেন কী এই ছবিগুলোর পেছনের রহস্য? এই ভাইরাল ট্রেন্ডের নাম ‘এস-লাইন’।
একে অপরের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়েছেন, এমন মানুষদের বোঝাতেই এই আজব মিমের উদ্ভব। নেটদুনিয়ায় ঝড় তোলা এই মিমগুলির সূত্রপাত হয়েছে এক কোরিয়ান ধারাবাহিক থেকে, নামটাও একই- ‘এস লাইন’।

কোরিয়ার প্ল্যাটফর্ম ‘ওয়্যাভ’-এ গত ১১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া এই থ্রিলার সিরিজে অভিনয় করছেন লি সু হিয়ক, যিনি গোয়েন্দা জি উক চরিত্রে।
গল্পটা এক রহস্যময় ক্ষমতাসম্পন্ন তরুণী হিউন ইওপকে ঘিরে, যার চোখে দেখা যায় একেকজনের মাথার উপর দিয়ে চলে যাওয়া লাল রেখা- যারা একে অপরের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়েছে।
শুধু তিনিই নন, এক পর্যায়ে এক জোড়া বিশেষ চশমা দিয়ে আরও কয়েকজন সেই লাইন দেখতে শুরু করে- আর তখনই কাহিনি ঘুরে যায় ভয়ঙ্কর মোড়। সমাজে শুরু হয় বিশৃঙ্খলা। শিক্ষক, ছাত্র, পুলিশ- কেউই এই অদ্ভুত সত্য থেকে বাইরে নয়।

সিরিজের এক দৃশ্যে গোয়েন্দা জি উকের মাথার ওপর অসংখ্য লাল রেখা দেখে দর্শকরা তুলনা করছেন ‘ময়ূর’ এর সঙ্গে। কেউ কেউ মন্তব্য করেন, ‘এই লোক একা একাই নাকি পুরো নাটক শেষ করে ফেলেছে!’
আর এতেই শুরু হয় মিম উৎসব। কেউ নিজের প্রাক্তনের সঙ্গে ছবি পোস্ট করছেন মাথার ওপর লাল দাগ এঁকে, কেউ নিজের পোষা কুকুর কিংবা বেড়ালের।
এমনকি এক পশুচিকিৎসক ছবিতে কয়েকটি বিড়ালের মাথায় লাইন এঁকে মজা করে লেখেন- ‘তুই তো এখন কাস্ট্রেটেড, মিঞাও!’
এই ‘এস লাইন’ মূলত জনপ্রিয় ওয়েবটুন নির্মাতা কোমাবি’র লেখা ‘ডেথ ট্রিলজি’র তৃতীয় কিস্তি। তার আগের দুটি কাজ ছিল ‘আ কিলার প্যারাডক্স’ ও ‘আনরিজলভড’।

তবে এই ধারাবাহিকটি একেবারে আলাদা ধাঁচের- যেখানে লজ্জা, সম্পর্ক, আকাঙ্ক্ষা ও গোপনীয়তার লাইন ঘোলাটে হয়ে যায়।
পরিচালক আন জু ইয়ং জানান, ‘এই গল্পের মূল বার্তাই হলো- যখন ব্যক্তিগত সীমানা লঙ্ঘন হয়, তখন সমাজ কীভাবে ধসে পড়ে।’
এই সিরিজ এখন দেখা যাচ্ছে কেবল ‘ওয়্যাভ’ নামের কোরিয়ান স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মে। এতে নেই কোনো ফ্রি ট্রায়াল। অর্থাৎ দেখতে হলে সাবস্ক্রিপশন নিয়েই নামতে হবে লাল লাইনের এই জালে।
সব মিলিয়ে নেটদুনিয়ায় এখন একটাই প্রশ্ন- ‘তোমার মাথার ওপর কয়টা লাইন?’
আপনার মতামত লিখুন :