কেটে গেছে ঠিক এক বছর। আজও সংগীতপ্রেমীরা বিশ্বাস করতে পারেন না, শাফিন আহমেদ আর নেই। দেশের ব্যান্ডসংগীতের অন্যতম পথিকৃৎ জনপ্রিয় রকব্যান্ড ‘মাইলস’-এর প্রধান কণ্ঠশিল্পী ও বেজিস্ট শাফিন আহমেদের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। গত বছর এই দিনেই পতন হয় বাংলা রকের এই উজ্জ্বল নক্ষত্রের।
এ উপলক্ষে কোনো বড় আয়োজন নয়, ঘরোয়া পরিসরেই শিল্পীকে স্মরণ করছে পরিবার। মিলাদ ও দোয়ার মধ্য দিয়ে পালন করা হচ্ছে দিনটি। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যায় বনানী কবরস্থানে তার কবর জিয়ারত করবেন পরিবারের সদস্যরা।
 
বড় ছেলে আজরাফ আহমেদ অজি একটি গণমাধ্যমকে জানান, ‘বাবার মৃত্যুবার্ষিকীর সব আয়োজন নিজেদের মধ্যে করছি। সন্ধ্যায় মিলাদ ও কবর জিয়ারতে যাব। সবসময় তো তাকে মিস করি, তবে আজ যেন সারা দিন ধরে বাবার স্মৃতিগুলো আরও বেশি করে মনে পড়ছে।’
বাংলা ব্যান্ডসংগীতে শাফিন আহমেদের নাম উচ্চারণ করলেই ভেসে আসে মাইলসের জনপ্রিয় সব গান, ‘ফিরিয়ে দাও’, ‘অচেনা জীবন’, ‘শেষ সীমানা’, ‘পিয়াসী মন’, ‘পাহাড়ী মেয়ে’, ‘গুঞ্জন শুনি’ বা ‘চাঁদ তারা সূর্য’র মতো বহু চিরকালীন হিট।
 
শুধু কণ্ঠ নয়, গীতিকার, সুরকার ও বেজ গিটারিস্ট হিসেবেও অবদান রেখে গেছেন তিনি। প্রায় চার দশকের বেশি সময় ধরে দেশের সংগীতাঙ্গন যার তালে বেজে উঠেছে, সেই মানুষটিকে আজ তার পরিবার, সহকর্মী আর অগণিত ভক্ত ভালোবাসা আর শ্রদ্ধায় স্মরণ করছে।
গত বছর জুলাই মাসে যুক্তরাষ্ট্রে কনসার্ট করতে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন শাফিন আহমেদ। ২০ জুলাই ভার্জিনিয়ায় একটি শো করার কথা থাকলেও তার আগেই ভর্তি হন স্থানীয় হাসপাতালে।
লাইফ সাপোর্টে নেওয়ার চার দিন পর ২৪ জুলাই মারা যান তিনি। ২৯ জুলাই দেশে ফেরেন কফিনবন্দি হয়ে, ৩০ জুলাই বনানী কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়।
একটি ব্যস্ত আন্দোলনমুখর সময়ে শাফিন শেষবার ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন, নিজে অসুস্থ অবস্থায় থেকেও সন্তানকে বলেছিলেন, ‘নিজের যত্ন নিও।’ এরপর ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ছেলের সঙ্গে তার আর কথা হয়নি—একটি ব্যথাতুর স্মৃতি হয়ে রয়ে গেছে পরিবারের কাছে।
 
১৯৭৯ সালে বড় ভাই হামিন আহমেদকে সঙ্গে নিয়ে ‘মাইলস’ ব্যান্ড গঠন করেন শাফিন আহমেদ। প্রথমদিকে পাঁচতারা হোটেলগুলোর লাইভ মিউজিকে ইংরেজি গান গাইলেও ৯০-এর দশকে ‘প্রতিশ্রুতি’ অ্যালবামের মাধ্যমে বাংলা গানে নিজেদের শক্ত অবস্থান গড়ে তোলে মাইলস।
একাধিকবার ব্যান্ড ছাড়লেও আবার ফিরেছিলেন ভালোবাসার টানে। শেষবার ২০২১ সালে ‘ভয়েস অব মাইলস’ নামে নিজস্ব ব্যান্ড গড়ে সংগীতচর্চা চালিয়ে যান তিনি।
 
আজ এই দিনে সংগীতের আঙিনায় তার অবদান যেমন শ্রদ্ধায় স্মরণ করছে সবাই, তেমনি পরিবার তাকে স্মরণ করছে প্রিয়জন হারানোর শূন্যতা নিয়ে। সময় চলে যায়, কিন্তু কিংবদন্তির রেখে যাওয়া গান, সুর আর স্মৃতি চিরকাল জাগরুক হয়ে থাকে হৃদয়ের একান্ত কোণে।

 
                             
                                    


 সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন 
                                     
                                     
                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                             
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
       -20251025002118.webp) 
        
        
        
        
        
        
        
       
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন