এফডিসিতে আর হচ্ছে না ঈদের কোরবানি - এক সময় যা ছিল চলচ্চিত্রের অসচ্ছল শিল্পীদের জন্য একটুকরো স্বস্তি, তা আজ নিঃশব্দ।
যে ঐতিহ্য গড়ে তুলেছিলেন চিত্রনায়িকা পরীমনি, তা এবার ঈদুল আজহায় পুরোপুরি অনুপস্থিত। পরীমনির সেই আত্মিক উদ্যোগের দিনগুলোকে যেন হঠাৎ করে স্মৃতিতে নিয়ে আসে ফাঁকা এফডিসি প্রাঙ্গণ।
২০১৬ সাল থেকে পরীমনি নিজের অর্থে টানা পাঁচ বছর এফডিসিতে কোরবানি দিয়েছিলেন। গরু কেনা থেকে মাংস বিতরণ - সব কিছুই করতেন নিজ হাতে, চলচ্চিত্রের নিম্ন আয়ের মানুষদের পাশে দাঁড়াতে।
২০২১ সাল পর্যন্ত ছিল সেই ধারাবাহিকতা, কিন্তু সেবারই এফডিসি কর্তৃপক্ষ নিষেধাজ্ঞা জারি করে - অভ্যন্তরে কোরবানি দেওয়া যাবে না।
বাধ্য হয়ে পরীমনি সেবার রাস্তায় ৬টি গরু কোরবানি দেন, মাংস বিলিয়ে দেন সিনেকর্মীদের মাঝে। তারপর থেকেই থমকে যায় পুরো প্রথাটি।
এবার ঈদের চিত্র আরও নিরব। সরেজমিনে দেখা গেছে, নেই কোনো প্রস্তুতি, নেই কোনো গরু, নেই সেই আগের দিনের হাঁকডাক। নিরাপত্তাকর্মীরাও জানালেন - এবার কেউ কোনো উদ্যোগ নেননি।
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জয় চৌধুরী এক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমাদের কোনো শিল্পীর পক্ষ থেকে এবার এফডিসিতে কোরবানির দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়নি। ডিপজল ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ হচ্ছে না, আর সভাপতি মিশা ভাই দেশের বাইরে। ফলে কোনোভাবেই আমরা শিল্পীদের জন্য কিছু করতে পারিনি এবার।’
অর্থনৈতিক দুরবস্থা, কাজ না থাকা আর ঈদের ব্যয় - সবকিছু মিলিয়ে অসচ্ছল শিল্পী ও কলাকুশলীদের মধ্যে হতাশা চরমে।
কোরবানির মাংস শুধু খাবার নয়, ছিল সহানুভূতির প্রতীক। সেটাই যখন হারিয়ে যায়, তখন যেন তারা একা হয়ে পড়েন, বঞ্চিত হন ঈদের আনন্দ থেকেও।
এই নিস্তব্ধতা যেন মনে করিয়ে দিচ্ছে, শিল্পীদের পাশে দাঁড়াতে ব্যক্তিগত আগ্রহ আর মানবিক মনোভাব কতটা জরুরি।
যেই ঐতিহ্য একসময় একতার প্রতীক ছিল, সেটি আবার কবে ফিরবে, কেউ জানে না। শুধু একটাই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে এফডিসির বাতাসে - ‘পরীমনি কোথায়?’