ঢাকা শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৫

এক যুগে ৫০ নাটক নির্মাণ করলেন নাজনীন হাসান খান

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১১, ২০২৫, ০৫:২৪ পিএম
নাজনীন হাসান খান। ছবি- সংগৃহীত

বাংলাদেশের টেলিভিশন নাট্যাঙ্গনের অন্যতম পরিচালক ও প্রযোজক নাজনীন হাসান খান তার এক যুগের ক্যারিয়ারে এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছেছেন।  দীর্ঘ প্রায় এক যুগের এই পথচলায় তিনি দর্শকদের উপহার দিয়েছেন অসংখ্য জনপ্রিয় নাটক ও টেলিফিল্ম।

সম্প্রতি তিনি ৫০টি নাটক নির্মাণের অনন্য মাইলফলক স্পর্শ করেছেন, যা একজন নারী নির্মাতা হিসেবে তার একাগ্রতা ও নিষ্ঠার পরিচয় বহন করে। জীবনঘনিষ্ঠ গল্প ও স্বতন্ত্র নির্মাণশৈলীর জন্য পরিচিত এই নারী নির্মাতা সম্প্রতি একাধিক সম্মানজনক পুরস্কারে ভূষিত হওয়ার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিচারক হিসেবেও গুরুদায়িত্ব পালন করছেন।

নাজনীন হাসান খান মূলত পারিবারিক ও সামাজিক গল্পের ওপর ভিত্তি করে নাটক নির্মাণে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। তার নাটকগুলোতে সমাজের মধ্যবিত্ত শ্রেণির হাসি-কান্না, পারিবারিক সম্পর্ক এবং দৈনন্দিন জীবনের গল্পগুলো খুব সহজভাবে ফুটে ওঠে। তিনি নিছক বিনোদনের জন্য নাটক বানান না; বরং গল্পের মাধ্যমে সমাজের কাছে ইতিবাচক বার্তা পৌঁছে দেওয়া তার লক্ষ্য।

নাজনীন হাসান খান বেশ কিছু ভিন্নধর্মী কাজ দর্শকদের উপহার দিয়েছেন, যা তার বৈচিত্র্যময় চিন্তাভাবনার প্রকাশ করে। তার নির্দেশিত বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য ধারাবাহিক নাটক হলো, ‘ভেজাল কাদের’ ও ‘গণক’ ইত্যাদি।

একক নাটক ও টেলিফিল্মের মধ্যে রয়েছে: ‘মায়ের ইচ্ছা’, ‘দারোগা বউ জামাই আসামি’, ‘বিশিষ্ট চিন্তাবিদ’, ‘নীল শুভ্র’, ‘আধুনিক চোর’, ‘সর্বপ্যাথি ডাক্তার’, ‘লাভ বার্ড’, ‘জামাই আবদার’, ‘সম্পত্তি ভাগ’, ‘পাওয়ার’, ‘হ্যালোসিনেশন’, ‘টনিক ম্যান’, ‘ভুঁড়ির অহংকার’, ‘জামাই বাড়িতে ঈদ’, ‘আধুনিক চোর’, ‘জামাই দাওয়াত’ ‘দুই বউয়ের জ্বালা’, ‘আলো আঁধারে’, ‘কিস্তি নিলে জামিন নাই’, ‘মাথা গরম পরিবার’, ‘জামাই আবদার’, ‘পিরিতের প্রপেসর’, ‘মিস্টার পারফিউম’, ‘দজ্জাল বউ’, ‘নেপালে হানিমুন’, ‘প্রেমলীলা’, ‘নিয়তি’ ইত্যাদি। 

দীর্ঘ কর্মজীবনের স্বীকৃতি হিসেবে নাজনীন হাসান খান দেশি-বিদেশি বিভিন্ন পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বাবিসাস অ্যাওয়ার্ড, ট্র্যাব অ্যাওয়ার্ড, শেরে বাংলা গোল্ডেন অ্যাওয়ার্ড, বায়োস্কোপ স্টার অ্যাওয়ার্ড, এজেএফবি স্টার অ্যাওয়ার্ড।

বিচারক হিসেবেও তার উপস্থিতি ব্যাপক। মিস্টার অ্যান্ড মিস গ্ল্যামার লুকস, বাভাসি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব-এর প্রধান বিচারকসহ আরও অনেক প্রোগ্রামের বিচারক হিসেবে তিনি দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন।

নাজনীন হাসান খান কেবল একজন পরিচালক ও প্রযোজকই নন, তিনি একজন গল্পকথক। তার কাজগুলো সমাজের দর্পণ হিসেবে কাজ করে। ৫০টি নাটক নির্মাণের এই যাত্রায় তিনি প্রমাণ করেছেন যে, সুশৃঙ্খল পরিচালনা এবং দর্শকদের রুচি বোঝা গেলে দীর্ঘমেয়াদে সফল হওয়া সম্ভব।

তার কাজগুলো বাংলা নাটকের ভান্ডারকে সমৃদ্ধ করছে এবং দর্শকদের সুস্থ বিনোদনের খোরাক যোগাচ্ছে। ক্ষমতার অপব্যবহার থেকে শুরু করে পারিবারিক মূল্যবোধ—সবই তার ক্যামেরায় উঠে আসে নিপুণভাবে। একজন নারী নির্মাতা হিসেবে তার এই অগ্রযাত্রা এবং সাফল্য আগামী দিনের নির্মাতাদের জন্য একটি বড় অনুপ্রেরণা।