সম্প্রতি পাকিস্তানি অভিনেত্রী হুমায়রা আসগরের মৃত্যুর ঘটনায় সৃষ্টি হয়েছে চাঞ্চল্য। করাচির বাসা থেকে তার গলিত মরদেহ উদ্ধারের পর ছড়িয়ে পড়ে নানা গুজব। গত ৮ জুলাই করাচির একটি অ্যাপার্টমেন্ট থেকে উদ্ধার হয় হুমায়রার মরদেহ। তদন্তে নেতৃত্ব দেওয়া দক্ষিণাঞ্চলের ডিআইজি সৈয়দ আসাদ রাজার ভাষ্য অনুযায়ী, বাসার দরজা ভিতর থেকে ডাবল লক ছিল, ভেতরেই পাওয়া গেছে সব চাবি, কোথাও জোরপূর্বক ঢোকার চিহ্ন নেই, শরীরে আঘাতের চিহ্নও মেলেনি।
যদিও হুমায়রার পিতা ড. আসগর দাবি করেন হুমায়রার এই মৃত্যু মোটেই স্বাভাবিক নয়। গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘হুমায়রার এই অবস্থা যে করেছে, তার আল্লাহর ভয় নেই।’ পাশাপাশি তিনি সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবি জানান।
তবে ময়নাতদন্তে দেখা যায়, শরীরে কোনো আঘাত, কাটাছেঁড়া বা বিষক্রিয়ার দাগ নেই। তবে মরদেহের অবস্থা এতটাই খারাপ ছিল যে, মৃত্যুর নির্দিষ্ট কারণ এখনও জানা যায়নি। বিষয়টি নিশ্চিত হতে আরও ফরেনসিক ও টক্সিকোলজি পরীক্ষার অপেক্ষায় আছেন তদন্তকারীরা।
তদন্তে পাওয়া গেছে, ২০২৪ সালের ৭ অক্টোবর ছিল হুমায়রার শেষ ফোন ব্যবহারের দিন। সেদিন বিকেল ৫টা নাগাদ ১৪ জনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি। তারপর আর কোনো ডিজিটাল অ্যাক্টিভিটি বা বাসা থেকে বের হওয়ার ইঙ্গিত মেলেনি।
পুলিশের ধারণা, ওই দিনই তিনি মারা যান, সম্ভবত বাসার কাজ করার সময়। হঠাৎ শুরু হওয়া কোনো শারীরিক সমস্যাকেই তার মৃত্যুর কারণ হিসেবে দেখছে পুলিশ।
এছাড়া প্রতিবেশীরা জা্নান, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর থেকেই তারা বাসা থেকে অদ্ভুত গন্ধ পাচ্ছিলেন। তবে হুমায়রার অনিয়মিত উপস্থিতি এবং ভবনে সিসিটিভি না থাকায় বিষয়টি গুরুত্ব পায়নি। বাড়িওয়ালাও আগে থেকেই উচ্ছেদের নোটিশ দিয়েছিলেন, কিন্তু তিনি তার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করেননি।
১১ জুলাই লাহোরে পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে চুপিসারে হুমায়রার দাফন সম্পন্ন হয়। থিয়েটার ও সামাজিক সচেতনতামূলক অভিনয়ের জন্য এক সময় আলোচিত এই অভিনেত্রী মৃত্যুর পরেও রেখে গেলেন অনন্ত প্রশ্ন—একজন পরিচিত শিল্পী কীভাবে এতটা নীরবে অজানায় হারিয়ে যেতে পারে?
আপনার মতামত লিখুন :