জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাৎ বার্ষিকীতে সংগীতশিল্পী আসিফ আকবর নিজের ফেসবুক পোস্টে একদিকে শহীদ রাষ্ট্রপতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়েছেন, সঙ্গে তুলে ধরেছেন বর্তমান বিএনপি নিয়ে নিজের মনের হতাশা, সংশয় এবং কিছু আশার কথা। তার ভাষায়, ‘যে বিএনপিকে ভালোবাসি সেই বিএনপি খুঁজে পাচ্ছিনা।’
আসিফ লেখেন, ‘স্বাধীনতার ঘোষক, মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেয়া জেড ফোর্স অধিনায়ক, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সাহেবের শাহাদাৎ বার্ষিকী ৩০শে মে। শহীদ জিয়া প্রকৃত অর্থে গত ৫৪ বছরে বাংলাদেশের একমাত্র স্টেটসম্যান।’
তিনি মনে করেন, স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ের রাজনৈতিক ও সামরিক চ্যালেঞ্জে জিয়াউর রহমানই জাতিকে পথ দেখিয়েছিলেন। মাত্র সাড়ে তিন বছরের শাসনামলেই তিনি বাংলাদেশকে ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ থেকে বের করে কৃষি, শিল্প ও মানবসম্পদে স্বনির্ভরতার পথে এগিয়ে নিয়ে যান।
আসিফ আকবর জিয়াউর রহমানের বহুদলীয় গণতন্ত্র এবং বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের ধারণাকে আধুনিক বাংলাদেশের ভিত্তি বলে আখ্যা দেন। তার মতে, ‘জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে তিনি ছিলেন এক অজেয় ধুমকেতু।’
এই অবস্থান থেকেই বিএনপির উত্থান হয়েছিল সাধারণ মানুষের ‘আশা আকাঙ্ক্ষার মূর্ত প্রতীক’ হিসেবে। তবে এখানেই থেমে থাকেননি এই শিল্পী।
অতীতের গৌরবময় দলটির বর্তমান রূপ নিয়ে তার হতাশাও প্রকাশ পায় পোস্টে। তিনি লেখেন, ‘দুঃখজনক হলেও সত্যি যে বিএনপি’কে ভালোবাসি, সেই বিএনপি খুঁজে পাচ্ছিনা।
তিনি আরও লেখেন, ‘অত্যাচারের খড়্গে ছিল জিয়া পরিবার, সুফল ভোগ করেছে জাতীয়তাবাদের লেবাসধারী কিছু নেতা, অত্যাচারীর এজেন্টরা।’
তার অভিযোগ, সারাদেশে গুম, খুন, মামলা, হামলা, জেল-জুলুমে নির্যাতিত লক্ষ লক্ষ তৃণমূল কর্মীই আজ দলে ‘অপাঙ্কতেয়।’
আসিফ আকবর তার শৈশব থেকেই শহীদ জিয়ার অনুরাগী এবং বিএনপির ‘একনিষ্ঠ সমর্থক’ বলে উল্লেখ করেছেন।
কিন্তু আজ তিনি খুঁজে ফিরছেন সেই পুরনো বিএনপিকে, যে বিএনপি ছিল ‘নারী, যুবক, শিশু, ক্রীড়া এবং শিল্পীবান্ধব’। তার ভাষায়, ‘শহীদ জিয়ার সেই বিএনপি ফেরত চাই।’
পোস্টের শেষে জাতীয় সংকটময় মুহূর্তে আলোর আশা ব্যক্ত করে আসিফ লেখেন, ‘মাহেন্দ্রক্ষণ সমাগত, প্রতিফলন দেখতে চাই শহীদ জিয়ার উচ্চারিত সেই মহান বাণীর- ব্যাক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড়…’
শেষে তিনি শ্রদ্ধা জানিয়ে লিখেছেন, ‘শহীদ জিয়া অমর হউন, বাংলাদেশ জিন্দাবাদ। ভালোবাসা অবিরাম…’
সর্বোপরি আসিফ আকবরের লেখায় যেমন আছে প্রিয় দলের জন্য মন খারাপের সুর তেমনিই আবার সম্ভাবনা ও আশাবাদের ভাষা।